ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ডের (সিবিআইসি) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এরপর থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের প্রভাব কেমন হতে পারে তা নিয়ে চলছে আলোচনা। তবে, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত যে আদেশ জারি করেছে তার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরে বড় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
আরো পড়ুন
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাংলাদেশের রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়বে না : ভারত
এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের সিদ্ধান্তটা বেশ অপ্রত্যাশিতই বলা চলে। তবে আমরা এই সুবিধাটা খুব যে বেশি ব্যবহার করতাম, তা না। ফলে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধের ফলে আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না।’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে কিছু পণ্য রপ্তানি করতো বাংলাদেশ।
সম্প্রতি বাংলাবান্ধা দিয়ে নেপালে প্রায় তিন হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এর বাইরে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে ইউরোপ-আমেরিকায় তৈরি পোশাকের পাঠানো হতো।
তিনি আরো বলেন, ‘গার্মেন্টসের রপ্তানিকারকরা অনেক সময় দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্রেতা দেশগুলোর কাছে পণ্য পাঠানোর জন্য ভারতীয় বিমানবন্দর ব্যবহার করতেন। এখন তারা সেটা পারবেন না।
ফলে বাংলাদেশ থেকেই পণ্য পাঠাতে হবে।’
এদিকে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাতের একজন রপ্তানিকারক জানিয়েছেন, ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে গার্মেন্টস পণ্যের ‘সামান্য কিছু অংশ’ পশ্চিমা দেশগুলোতে যায়। ফলে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের কারণে খাতটিতে সেভাবে প্রভাব পড়বে না।
ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ঠিক কী পরিমাণ পণ্য অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়, সেটার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য ব্যবসায়ীরা জানাতে পারেননি।
তবে, ভারত সরকারের ২০২৩ সালের এক হিসাব থেকে জানা যাচ্ছে, ওই বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লি বিমানবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক ও অন্যান্য পণ্য মিলিয়ে মাত্র পাঁচ হাজার কিলোগ্রামের মতো বাংলাদেশি পণ্য অন্য দেশে রপ্তানি হয়েছিল।