<p style="text-align:justify">সর্বজনীন পেনশন তহবিলের টাকা কোথায় বিনিয়োগ করা হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা কেটেছে। পেনশন স্কিম চালুর প্রায় ১১ মাস পর রবিবার সর্বজনীন পেনশন স্কিমের তহবিল বিধিমালা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। </p> <p style="text-align:justify">এই তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে বন্ড, বিল, বিএসইসি নিয়ন্ত্রিত মিউচুয়াল ফান্ড ও সরকারি অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পসহ সাত খাতে। পেনশন তহবিলে জমা হওয়া অর্থ কোনোভাবেই ব্যক্তি মালিকানাধীন কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিদেশে বিনিয়োগ করা যাবে না। কোনো একক খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ তহবিলের মোট অর্থের ২৫ শতাংশের বেশি হবে না।</p> <p style="text-align:justify">বিধিমালায় বলা হয়, পেনশনের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে সরকারি ট্রেজারি বন্ড, বিল, সুকুক, শেয়ারবাজারের মিউচুয়াল ফান্ড, ডাবল র‌্যাংকিংয়ে থাকা বাণিজ্যিক ব্যাংকে স্থায়ী আমানত, এ ক্যাটাগরির বন্ড এবং সরকারের অবকাঠামো খাতসহ ছয়টি খাতে। এই তহবিল ব্যবস্থাপনায় থাকবে আট সদস্যের কমিটি।</p> <p style="text-align:justify">সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ সুকুকসহ অন্যান্য সরকারি সিকিউরিটি; বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক অনুমোদিত বা নিয়ন্ত্রিত মিউচুয়াল ফান্ড; বিএসইসির অনুমোদিত ও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির বন্ড; সরকার বা সরকারি কোনো সংস্থা দ্বারা অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য গৃহীত বাস্তবায়নাধীন বা বাস্তবায়িত কোনো প্রকল্প বা প্রকল্পের সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ এবং কোনো তফসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা যাবে।</p> <p style="text-align:justify">তফসিলি ব্যাংকের বিষয়ে বিধিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অনুমোদিত রেটিং সংস্থা বা স্বীকৃত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক দীর্ঘ মেয়াদে অন্যূন ‘এএ’ এবং স্বল্প মেয়াদে অন্যূন ‘এসটি-১’ বা সমমান রেটিংসম্পন্ন কোনো তফসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত রাখা যাবে। তবে কোনো তফসিলি ব্যাংককে একাধিক রেটিং সংস্থা কর্তৃক ভিন্ন ভিন্ন রেটিং দেওয়া হলে সে ক্ষেত্রে নিম্নতম রেটিংকে প্রকৃত রেটিং হিসেবে গণ্য করতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">বিধিমালায় বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন তহবিলের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি নামে আট সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হবে। দেশের আর্থিক বাজার, পুঁজিবাজারসহ বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট অন্য ক্ষেত্রগুলো পর্যালোচনাপূর্বক কম ঝুঁকিপূর্ণ ও বেশি লাভজনক পোর্টফোলিও বা খাতে বিনিয়োগের জন্য কমিটি সুপারিশ করবে।</p> <p style="text-align:justify">যথাসম্ভব পরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিত করে বিনিয়োগের খাতগুলো নিরূপণ করতে হবে এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমিটি সর্বোচ্চ ডিউ ডিলিজেন্স প্রয়োগ করে সুপারিশ করবে। তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশগুলো পর্যালোচনাপূর্বক ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’ তহবিলের অর্থ বিনিয়োগসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এই কমিটির বৈঠকে প্রয়োজনীয় যে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো যাবে। কমিটির সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।</p> <p style="text-align:justify">এ ছাড়া সর্বজনীন পেনশন তহবিলের ব্যবসা উন্নয়ন ও তহবিলের অনুকূলে সম্পদ আহরণ, বিনিয়োগযোগ্য অর্থের পরিমাণ নিরূপণ ও তহবিলের পুঞ্জীভূত অর্থের হিসাব পর্যালোচনাপূর্বক কমিটি পেনশন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেবে।</p> <p style="text-align:justify">বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি যেকোনো ব্যক্তিকে কমিটির সভায় আমন্ত্রণ জানাতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, আমন্ত্রিত ব্যক্তি সভায় নিজস্ব বক্তব্য দিতে পারবেন, কিন্তু তাঁর ভোট দেওয়ার কোনো ক্ষমতা থাকবে না।</p> <p style="text-align:justify">বৃদ্ধকালীন জীবন-জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু করতে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩’ প্রণয়ন করেছে সরকার। আইনের আওতায় ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং ওই বছরই ১৭ আগস্ট থেকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়। </p> <p style="text-align:justify">শুরুতেই সর্বজনীন পেনশনের চারটি স্কিম (প্রগতি, সমতা, প্রবাস ও সুরক্ষা) চালু করা হয়। গত ১ জুলাই থেকে ‘প্রত্যয়’ নামে আরো একটি স্কিম চালু করা হয়েছে। স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে চলতি বছরের ১ জুলাই বা তৎপরবর্তী সময়ে যোগদানকারী সব কর্মচারী বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যয় স্কিমের আওতাভুক্ত হবেন।<br />  <br />  </p>