<p>‘আমরা সব সময় বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। বসুন্ধরা হচ্ছে আমাদের অভিভাবক। অভিভাবকের সঙ্গে তো রাগ করা চলে না। অভিভাবক আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে, এখন সব ঠিক হয়ে যাবে।’</p> <p>কথাগুলো বলছিলেন বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের মোবাইল ব্যবসায়ী শামীম মোল্লা। বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ইনচার্জের পদত্যাগের দাবিতে দোকান মালিক, ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার বিকেলে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এসব কথা বলেন।</p> <p>শামীম মোল্লা আরো বলেন, ‘আজকের (গতকাল) এমন বৈঠকের পর আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) সব দোকানদার ও কর্মচারীকে দোকান খুলে স্বাভাবিক সময়ের মতো ব্যবসা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে বসুন্ধরার প্রতি আমাদের যে আবেদন ছিল, সেটি পূরণ হয়েছে। একজন ইনচার্জ মার্কেট ঢেলে সাজাবেন বলে সব এলোমেলো করে ফেলেছিলেন। দাবিদাওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলতে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের ডেকেছেন।</p> <p>আমরা তাঁর সঙ্গে বসেছি। আমাদের আরো কিছু দাবি ছিল। এর মধ্যে অন্যতমটি মেনে নেওয়া হয়েছে। নতুন ইনচার্জ দ্রুত বাকি সমস্যার সমাধান করবেন বলে আমরা আশাবাদী। আমরা ব্যবসা করতে এসেছি, ব্যবসা করতে চাই। এ ছাড়া আর কিছু না।’</p> <p>আরেক মোবাইল ব্যবসায়ী মো. আসলাম বলেন, ‘আমরা একজন লোকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। তিনি হচ্ছেন বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ম্যানেজমেন্টের ইনচার্জ। উনার আচরণে সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছিল। বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের অনেক সময় দিয়েছেন এবং সুন্দরভাবে কথাগুলো শুনেছেন। আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। তিনি ইনচার্জকে সরিয়েছেন। নতুন একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের আর কোনো অসন্তুষ্টি নেই। বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের মতো একটি মার্কেটে আমরা ব্যবসা করতে পেরে নিজেদের সম্মানিত মনে করি।’</p> <p>বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী ওয়াহিদ মুরাদ বলেন, ‘আমাদের প্রধান সমস্যার সমাধান হয়েছে। আমরা সব ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীকে আগামীকাল (আজ) থেকে যথাসময়ে দোকান খোলার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদের সম্মানিত যেসব ক্রেতা গত দুই দিন কষ্ট পেয়েছেন, তাঁদের আবার মার্কেটে আসার জন্য অনুরোধ করছি। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেব অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের সময় দিয়েছেন, এ জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’</p> <p>মোবাইল ব্যবসায়ী শাহাদাৎ হোসাইন বলেন, ‘বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে শুরু থেকে ব্যবসা করছি। মালিক-কর্মচারী সবাই মিলে একজন ব্যক্তির অপসারণের জন্য আন্দোলন করেছি তাঁর নানা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে। আমরা বসুন্ধরা সিটির বিপক্ষে নই, বসুন্ধরার পক্ষে ছিলাম, আছি। বিসিডিএলের নতুন ডিএমডি ক্যাপ্টেন শেখ এহসান রেজার (অব.) সঙ্গে আমাদের মিটিং হয়েছে। তিনি আমাদের সব দাবি শুনে যৌক্তিক দাবি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আন্দোলনের কারণে ব্যবসায়ীদের ও ক্রেতাদের ক্ষতি হয়েছে। এটা কখনোই আমাদের কাম্য নয়। এটা পূরণ করার চেষ্টা করব। নতুন ইনচার্জকে আমরা সব ধরনের সহায়তা করব, যাতে বাংলাদেশের স্বনামধন্য বসুন্ধরা মার্কেটের সুনাম অক্ষুণ্ন থাকে। আমরা আশা করি, বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময়ের মতো আমাদের পাশে থাকবে।’</p> <p>বৈঠকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে ঢাকা শহরের নানা স্থানে দাবিদাওয়াসংক্রান্ত সভা, সমাবেশ ও জমায়েত হচ্ছে, যার কারণে ঢাকার মতো একটি জনবহুল শহরে তৈরি হচ্ছে স্থবিরতা, বিঘ্নিত হচ্ছে জরুরি যান চলাচল, বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি। বসুন্ধরা সিটির দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদের দাবিদাওয়াসংক্রান্ত ব্যাপারটিও নানা জনদুর্ভোগ তৈরি করেছে, যা আমাকে ব্যথিত করেছে।’</p> <p>আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি দ্রুত সমাধানের সব পদক্ষেপ নিয়েছি, যার মাধ্যমে সব ভুল-বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। আমি আশাবাদী, জনস্বার্থে এবং মানুষের ভোগান্তি দূর করতে সবাই উদ্যোগী হবে এবং অতি দ্রুত মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। মনে রাখতে হবে, বর্তমানে দেশ সংস্কারের কাজ চলছে। আসুন, সবাই শান্ত হই, এগিয়ে যাই সমৃদ্ধ, সুশৃঙ্খল, বৈষম্যহীন কাঙ্ক্ষিত এক বাংলাদেশের পথে। সংলাপেই হোক সমঝোতা, শান্তি ফিরুক সবার জীবনে।’</p> <p>বৈঠকে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন আবু সাঈদ পিয়াস, আলাউদ্দিন, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. আবু সায়েম, দাউদ ইব্রাহিম শাহাদাৎ, আদিব আহম্মেদ ও রবিউল হোসাইন মিন্টু।</p>