সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফা হার, ২০২৫ সালে কোন স্কিমে কত পাবেন?

ইউএনবি
ইউএনবি
শেয়ার
সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফা হার, ২০২৫ সালে কোন স্কিমে কত পাবেন?
ফাইল ছবি

২০২৫ সালে নতুনভাবে নির্ধারিত হলো সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার। এত েদিন জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে মেয়াদান্তে সর্বনিম্ন ১১.০৪ থেকে সর্বোচ্চ ১১.৭৬ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যেত। নতুন নিয়মে মুনাফা ১২ শতাংশের অধিক রাখা হয়েছে, যেখানে সর্বনিম্ন হার ১২.২৫ আর সর্বোচ্চ ১২.৫৫। জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে কার্যকর সব সঞ্চয়পত্রে পাওয়া যাবে এই বাড়তি মুনাফা।

সঞ্চয়পত্রের স্কিমগুলোতে নতুন মুনাফার হার

জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের মুনাফা প্রদানের জন্য দুটি ভিন্ন বিনিয়োগ পরিসীমা ঠিক করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরিসীমা-১ : অনূর্ধ্ব সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগ পরিসীমা-২ : সাড়ে ৭ লাখ টাকার অধিক।

প্রথমটিতে প্রদেয় মুনাফা অপেক্ষা দ্বিতীয় ক্যাটাগরির মুনাফার শতাংশ কম হবে। তবে এই শতাংশ আগের তুলনায় বেশি।

শুধু তা-ই নয়, মেয়াদের প্রথম বছর থেকে মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত প্রতি বছরের ধার্যকৃত মুনাফার শতাংশগুলোও আগের থেকে বেশি। এই হার ৫ ও ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের গড় সুদের হার অনুসারে প্রতি ৬ মাস অন্তর পুনর্নির্ধারিত হবে।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র

এই স্কিমে সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই নগদায়নের ক্ষেত্রে বছরান্তে মুনাফা শুরু হবে ১০.২৩ শতাংশ থেকে। ২য় বছরে ১০.৭৫, ৩য় বছরে ১১.৩১, এবং ৪র্থ বছরে ১১.৯১ শতাংশ।

৫ বছর মেয়াদপূর্তির পর মুনাফা দাড়াবে ১২.৫৫ শতাংশ, যা এখন থেকে প্রযোজ্য রিটার্নগুলোর মধ্যে সর্বাধিক।

সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগে ১ম বছরে মুনাফা থাকছে ১০.১১। এটি বছরান্তের হিসেবে নতুন ব্যবস্থার সবচেয়ে কম পরিমাণ রিটার্ন। উপরন্তু, ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৫ শতাংশ। ৫ বছর শেষে মেয়াদ উত্তীর্ণকালে এই শতাংশটি পৌঁছবে ১২.৩৭-এ।

পরিবার সঞ্চয়পত্র

সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তিতে পাবেন সাড়ে ১২ শতাংশ। মেয়াদ উত্তীর্ণের আগেই স্কিম নগদায়ন করলে বছর শেষে রিটার্ন শুরু ১০.২০ শতাংশ থেকে। ২য় বছরে নগদায়নের ক্ষেত্রে লাভের হার দেওয়া হবে ১০.৭২, ৩য় বছরে ১১.২৮ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৮৭ শতাংশ।

বিনিয়োগ সাড়ে ৭ লাখ টাকার অধিক হলে ১ম বছরের মুনাফা ১০.১১ শতাংশ, যা ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে হবে ১১.৭৫ শতাংশ। সর্বপরি, ৫ বছর কিস্তি পূরণ করলে লাভের হার ১২.৩৭ শতাংশ। 

বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র

সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তিতে লাভের পরিমাণ ১২.৪০ শতাংশ। মেয়াদ পূর্ণ না করলে ১ম বছরে ১০.১৩, ২য় বছরে ১০.৬৪, ৩য় বছরে ১১.১৯ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৮ শতাংশ।

যারা সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তাদের ১ম বছরে নগদায়নে মুনাফা পড়বে ১০.১১ শতাংশ। ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৫ শতাংশ। ৫ বছরের আগে স্কিম না ভাঙলে লাভের হার দাড়াবে ১২.৩৭ শতাংশে।

৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র

এই সঞ্চয় স্কিমে যারা সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করবেন, তাদের মেয়াদ শেষে রিটার্ন আসবে ১২.৩০ শতাংশ। অন্যথায় মেয়াদ পূর্ণ করা না হলে ৩ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্রে ১ম বছরে মুনাফা পাওয়া যাবে ১১.০৪ এবং ২য় বছরে ১১.৬৫ শতাংশ।

অপরদিকে, সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের পর ১ম বছরের পরেই বিনিয়োগ করা টাকা তোলার ক্ষেত্রে মুনাফা মিলবে ১১ শতাংশ। ২য় বছরে পাওয়া যাবে ১১.৬১ আর মেয়াদপূর্তি করতে পারলে লাভের অংশ হবে ১২.২৫ শতাংশ।

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-মেয়াদি হিসাব

উপরোক্ত প্রধান চার স্কিমের বাইরে ডাকঘর সঞ্চয় হিসাবে উভয় বিনিয়োগ ক্যাটাগরি থেকে প্রাপ্ত রিটার্নের হার হবে ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের অনুরূপ।

সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফার হার কাদের জন্য প্রযোজ্য

যেহেতু সব ধরনের সঞ্চয়পত্রেই উল্লেখযোগ্য হারে মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই সকল শ্রেণির গ্রাহকরাই এর আওতাভূক্ত। সুতরাং জানুয়ারি ২০২৫ থেকে যারা সঞ্চয়পত্র কিনবে তারা নতুন এই বর্ধিত মুনাফার সুবিধা পাবেন।   

পরিশিষ্ট

২০২৫-এ নতুন নিয়মে প্রণীত সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের প্রতিটি ক্যাটাগরিতে পরিবর্তন এসেছে। সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে কমপক্ষে ১২.৩০ শতাংশ মুনাফা রয়েছে ৩ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র দুটোতে। সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে সর্বোচ্চ ১২.৫৫ শতাংশ হারে রিটার্নের সুযোগ থাকছে পেনশনার ব্যবস্থায়। সাড়ে ৭ লক্ষের অধিক টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ বছর মেয়াদি সবগুলো স্কিমেই সর্বাধিক রিটার্ন ১২.৩৭ শতাংশ। আর ৩ বছর মেয়াদি ব্যবস্থাগুলোতে থাকছে ১২.২৫ শতাংশ, যা এই পরিবর্তিত সঞ্চয় প্রক্রিয়ার সর্বনিম্ন মাত্রার মুনাফা।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভারত থেকে এলো সাড়ে ৯ হাজার টন চাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভারত থেকে এলো সাড়ে ৯ হাজার টন চাল

আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় ভারত থেকে সাড়ে ৯ হাজার টন সিদ্ধ চালবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে জানানো হয়, উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় ভারত থেকে ৯টি প্যাকেজে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৯৭ হাজার ২৬৯  টন চাল ইতোমধ্যে দেশে পৌঁছেছে।

জাহাজে রাখা চালের নমুনা পরীক্ষা শেষ হয়েছে এবং চাল খালাসের কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।  

মন্তব্য
ভিসা বন্ধ

ভারতমুখো কেনাকাটা ব্যাহত, স্থানীয় বাজারে নতুন গতি

    ডলারের চাহিদা কমে খোলাবাজারে মন্দা
মো. জয়নাল আবেদীন
মো. জয়নাল আবেদীন
শেয়ার
ভারতমুখো কেনাকাটা ব্যাহত, স্থানীয় বাজারে নতুন গতি
সংগৃহীত ছবি

প্রতিবছর ঈদ, বিয়ে ও অন্যান্য উৎসব উপলক্ষে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে কেনাকাটা করতে যেতেন। ভারতের বড় শপিং মল এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের প্রতি তাঁদের ব্যাপক আকর্ষণ ছিল। ডলারের খোলাবাজারেও ঈদের আগমনী বার্তা টের পাওয়া যেত। তবে এবার চিত্র বদলেছে।

ভিসা জটিলতার কারণে ভারতমুখো কেনাকাটা ব্যাহত হওয়ায় স্থানীয় বাজারে নতুন গতি এসেছে।

কাঙ্ক্ষিত সাড়া নেই বাংলাদেশের ডলারের খোলাবাজারেও। হজকেন্দ্রিক কিছু লেনদেন হলেও তা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম। এখন দেশের ব্যাংকগুলোতে ১২২ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে ডলার।

খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংক রেটের পার্থক্য দুই থেকে আড়াই টাকা। কারণ খোলাবাজারে ১২৪ থেকে ১২৪.৫০ টাকার মধ্যেই লেনদেন হচ্ছে প্রতি ডলার।

তথ্য বলছে, গত বছরের মার্চে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলারের নির্ধারিত দাম ছিল ১১০ টাকা। কিন্তু নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছিল না।

আমদানি বিল পরিশোধের জন্য নির্ধারিত দামের বাইরে প্রতি ডলারে আরো ১৩ টাকা পর্যন্ত পে অর্ডারের মাধ্যমে দিতে হয়েছে। এতে প্রতি ডলার ১২৩ টাকায় বিক্রি হতো। খোলাবাজারে ডলারের উত্তাপ ছিল আরো বেশি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছর কয়েকটি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে জরিমানাও করা হয়। তবে ২০২৫ সালের ঈদে সেই চিত্র একেবারেই ভিন্ন।

মানি চেঞ্জারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এম এস জামান বলেন, অন্যান্য ঈদের মতো এবার সাড়া নেই। আগে ঈদের সময় অনেকে খোলাবাজার থেকে ডলার কিনত। কিন্তু এখন ঈদকেন্দ্রিক তেমন কোনো চাপ নেই। এখন খোলাবাজারে ১২৪ থেকে ১২৪.৫০ টাকার মধ্যেই ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। অনেক দিন থেকে এই দামেই স্থিতিশীল আছে ডলারের বাজার। ব্যাংকের সঙ্গে খোলাবাজারে এখন খুব বেশি পার্থক্য নেই বলেও জানিয়েছেন এই ডলার ব্যবসায়ী।

গ্লোবাল ইকোনমিস্ট ফোরাম নামের একটি সংগঠনের মতে, প্রতিবছর রমজান মাসে কমপক্ষে দেড় লাখ বাংলাদেশি কেনাকাটার উদ্দেশ্যে ভারত যেতেন। এই একটি ঈদকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০ কোটি ডলার আয় করত ভারত। ফলে এই সময়ে খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে যেত। বর্তমানে সীমান্ত উত্তেজনা, রাজনৈতিক বিভাজন ও ভিসা জটিলতার কারণে ভারতে যেতে পারছেন না বাংলাদেশিরা।

শুধু ডলারের খোলাবাজারে নয়, ভারতের নিষেধাজ্ঞায় ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনেও প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে ভারতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে যে নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা ডিসেম্বরেও অব্যাহত ছিল। ভারতে ২৩ মাসের মধ্যে গত ডিসেম্বরেই বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন ছিল সবচেয়ে কম। দেশের বাইরে গত জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হতো ভারতেই।

নিম্নমুখী এই প্রবণতার ফলে দেশের বাইরে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচের তালিকায় ভারত নেমে গেছে চতুর্থ স্থানে। আগের মাসের মতো প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ড। তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে সিঙ্গাপুর। দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনের তথ্য ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করে রবিবার, যেখানে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য আছে।

হালনাগাদ তথ্য বলছে, ডিসেম্বরে দেশের বাইরে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন হয় ৪৯১ কোটি টাকা, যা আগের মাস নভেম্বরে ছিল ৪৩১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে ১৩.৯২ শতাংশ।

ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয় ৭৪ কোটি টাকা, যা নভেম্বরে ছিল ৬৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ডে ডিসেম্বরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয় থাইল্যান্ডে, ৬৪ কোটি টাকা, নভেম্বরে যা ছিল ৪৬ কোটি টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিঙ্গাপুরে লেনদেন হয় ৪১ কোটি টাকা, যা নভেম্বরে ছিল ৩৮ কোটি টাকা। চতুর্থ অবস্থানে আছে ভারত, যেখানে ডিসেম্বরে লেনদেন হয় ৪০ কোটি টাকা, আর নভেম্বরে হয় ৪৭ কোটি টাকা।

গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করে। ফলে ভারতে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যায়, যার প্রভাব ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনেও পড়ে। গত জুলাইয়ে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে ভারতে লেনদেন হয় ৭৩ কোটি টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৯২ কোটি টাকা।

মন্তব্য

ঈদের আগে শেষ ব্যাংকিং লেনদেন আজ, যেসব এলাকায় থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদের আগে শেষ ব্যাংকিং লেনদেন আজ, যেসব এলাকায় থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা
সংগৃহীত ছবি

আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে শেষ ব্যাংকিং লেনদেন আজ। আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সাপ্তাহিক, ঈদের ও বিশেষ ব্যবস্থার ছুটি। তবে এর মধ্যে আগামী শুক্র ও শনিবার বিশেষ ব্যবস্থায় গার্মেন্ট এলাকাগুলোয় সীমিত সময়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় ব্যাংকগুলোর কিছু শাখা খোলা থাকবে। এছাড়াও ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথ, অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিকভাবে খোলা থাকবে।

ঈদের আগে আজ শেষ ব্যাংকিং লেনদেন হওয়ায় ব্যাংকগুলোয় বেশ ভিড় থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। আজ ব্যাংকগুলোয় নগদ টাকার বেশি চাহিদা থাকবে। তাই ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের নগদ টাকার চাহিদা মেটাতে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রেখেছে।

এদিকে ঈদের আগে ২৮ মার্চ শুক্রবার ও ২৯ মার্চ শনিবার বিশেষ ব্যবস্থায় কিছু এলাকায় ব্যাংকের শাখা সীমিত সময়ের জন্য খোলা থাকবে।

এর মধ্যে শুক্রবার লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। শনিবার লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। 

এ দুইদিন ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। এছাড়া শনিবার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী শাখাগুলোও বিশেষ ব্যবস্থায় আগের নিয়মে খোলা থাকবে।

 

এ সময়ে শুধু টাকা তোলা, স্থানান্তর, চেক নগদায়ন করা যাবে। রপ্তানিকারকরা তাদের রপ্তানি বিল ভাঙিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারবেন। ঋণবিষয়ক কোনো কাজ করা যাবে না।
আগামী শনিবারের পর ৬ এপ্রিল রোববার ব্যাংক খুলবে। তখন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেন চলবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

২৪ দিনেই প্রবাসী আয়ে ভাঙল মাসের রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২৪ দিনেই প্রবাসী আয়ে ভাঙল মাসের রেকর্ড
সংগৃহীত ছবি

সাত দিন বাকি থাকতেই একক মাসের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের আগের রেকর্ড অতিক্রম করেছে মার্চ মাস। চলতি মাসের ২৪ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা ২৭৫ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। এর আগে, এক মাসে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলারের রেকর্ড ছিল গত ডিসেম্বরে। 

রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে রিজার্ভ আবারও ২০ বিলিয়ন বা ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

অন্যদিকে ডলারের দর এখন ১২২ টাকায় স্থিতিশীল হয়ে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত ২৪ মার্চ পর্যন্ত দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। বাকি সাত দিন সমপরিমাণ এলেও চলতি মাসে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসবে। ফলে মাসের হিসাবে অনেক বড় ব্যবধানের রেকর্ড হতে যাচ্ছে।

গত বছর মার্চের ২৪ দিনে এসেছিল ১৫৫ কোটি ডলার। আর পুরো মাসে এসেছিল ২০০ কোটি ডলারের কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, অর্থ পাচার প্রতিরোধে বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আবার ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়ে প্রণোদনাসহ এখন যে পরিমাণ টাকা পাওয়া যাচ্ছে, তা খোলাবাজারের চেয়েও বেশি।

সাধারণভাবে হুন্ডি চাহিদা কমলে এমন হয়। অন্যদিকে রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। ফলে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। রিজার্ভও স্থিতিশীল হয়ে এসেছে।

এদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ১২৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬৬২ কোটি ডলার। এ পর্যন্ত রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪৬১ কোটি ডলার, যা ২৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে রেমিট্যান্স বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই ছাড়া সব মাসেই বেড়েছে। এর আগে,  করোনাভাইরাসের প্রভাবের কারণে সারাবিশ্বে লকডাউনের মধ্যে একবার এভাবে রেমিট্যান্স বেড়েছিল। ওই সময় হুন্ডি ছিল না বললেই চলে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছিল ৩৬ শতাংশের বেশি।

গতকাল মঙ্গলবার দিন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলারে। এর আগে, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় বাবদ ১৭৫ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে গত ৯ মার্চ ১৯ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে নামে।

পরিশোধের আগে রিজার্ভ উঠেছিল ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে। সরকার পতনের আগে প্রতি মাসে গড়ে ৯০০ মিলিয়ন রিজার্ভ কমছিল। ২০২২ সালের আগস্টে রিজার্ভ উঠেছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারে। গত জুলাই শেষে তা কমে ২০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারে নামে। এর বড় কারণ ছিল, আমদানি দায় পরিশোধের জন্য রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ডলার বিক্রি করছে না। বরং আগের ৩৩০ কোটি ডলার বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।

বেসরকারি একটি ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অর্থ পাচার প্রতিরোধে বর্তমান সরকার বেশ সক্রিয়। পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ১১টি যৌথ বিশেষ টিম কাজ করছে। শেখ হাসিনা পরিবার এবং ১০টি ব্যবসায়ী গ্রুপের অর্থ পাচার, অনিয়ম ও  জালিয়াতির তথ্য উদ্ঘাটনে এসব টিম বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। 

রেমিট্যান্স চাঙ্গা হওয়ার পেছনে এসব উদ্যোগের ভূমিকা রয়েছে। 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ