দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নেমেছে। হোটেল-মোটেলগুলোতেও ঠাঁই মিলছে না। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং রবিবার মহান শহিদ দিবস নিয়ে টানা তিন দিনের ছুটির সুযোগে কয়েক লাখ পর্যটক কক্সবাজার সৈকতে এসে ভিড় জমিয়েছেন। দীর্ঘকালীন সময় ধরে কভিড-১৯ এর কারণে ঘরবন্দি মানুষ করোনা ভীতি কাটিয়ে শীত মৌসুমের শেষ দিকে টানা ছুটি পেয়ে ভিড় জমিয়েছে সৈকতে।
করোনা সংক্রমণ হ্রাস এবং টিকায় ভীতি কমেছে মানুষের
কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল, ঠাঁই মিলছে না হোটেলে!
তোফায়েল আহমদ, কক্সবাজার

এদিকে পর্যটক সমাগমের কারণে শহরসহ সৈকতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক সাকের আহমদ জানান- ‘ট্যুরিস্ট পুলিশের ৮০ জন সদস্য শুক্রবার সকাল থেকে সৈকতে ডিউটি করছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক জানান, সৈকতে তিল ধারণের জায়গাও নেই। এত বিপুলসংখ্যক ভ্রমণকারী গত পাঁচ বছরের সময়েও এক সঙ্গে ভিড় জমাননি।
তবে তিনি মৌসুমগত কারণে পর্যটকদের তেমন দুর্ভোগে পড়তে হবে না জানালেও বাস্তবে দেখা গেছে, অনেক ভ্রমণকারী রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন রাত কাটানোর একটি কক্ষের জন্য। সাগর পাড়ের হোটেল-মোটেলে সিট না পেয়ে শহরের ঘিঞ্জি এলাকার নিম্নমানের আবাসিক হোটেলের রুম পর্যন্ত বাড়তি ভাড়ায় পর্যটকরা ভাড়া নিয়ে রাত পোহাতে আশ্রয় নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালের কোনো একটি বিশেষ দিনেও এরকম কয়েক লাখ লোক সমবেত হয়েছিলেন কক্সবাজারে। এবারও অনুরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যেসব ভ্রমণকারী আগে ভাগেই হোটেলের রুম বুকিং করে এসেছেন তারা কোনো রকমে ভালো রয়েছেন। কিন্তু যারা আগাম রুম ভাড়া নিয়ে আসেননি তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। শহরের হোটেল-মোটেল ও কটেজ জোনে কোনো রুম খালি নেই। এমনকি হোটেলের পরিত্যক্ত রুম পর্যন্ত ভাড়া হয়ে গেছে।
কটেজ জোনের নকশিকাঁথা নামের একটি কটেজের রিসিপশন রুম পর্যন্ত ভাড়া হয়ে গেছে। সেখানে পাতানো হয়েছে গণবিছানা। একটি রুমে ১৫ জন রাত কাটাতে ভাড়া নিয়েছেন ৯ হাজার টাকায়। অনুরূপ ওই এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসার দোকানগুলোতে চৌকি বসিয়েও ভাড়া দেওয়া হয়েছে। লাইট হাউজ, সৈকত আবাসিক এলাকা ও কলাতলিসহ আশেপাশের এলাকার বাসা বাড়ির কক্ষও ভাড়া দেওয়া হয়েছে। অনেকেই থাকার জায়গা না পেয়ে রাস্তায় নতুবা গাড়িতে রাত কাটানোরও পরিকল্পনা করছেন।
তবে ভাগ্য ভালো বর্তমানের মৌসুমটি এমন যে, অতি শীত যেমনি নেই তেমনি গরমও নেই। অনেকেই দুই দিন থাকার পরিকল্পনা করে এসেও রাতেই কক্সবাজারের সাগর পর্যটন ছেড়ে নিজ বাড়ি ছুটছেন নতুবা যাচ্ছেন বান্দরবানের পাহাড়ি পর্যটন এলাকা উপভোগ করার জন্য। তবে শনিবার নতুন করে আরো পর্যটকের ভিড় হবে সৈকতে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই গাড়িতে গাড়িতে পর্যটকের দল কক্সবাজারে আসতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছেড়ে আসা কয়েক শ নৈশকোচ শুক্রবার সকালে এসে পৌঁছে কক্সবাজারে। এ কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অসহনীয় জ্যাম লেগে যায়। এক সঙ্গে প্রচুরসংখ্যক যানবাহন আসায় কক্সবাজার শহরের কয়েক কিলোমিটার দূরে থামিয়েই যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হচ্ছে। এতে করে পর্যটকদের দুর্ভোগেরও শেষ নেই।
শুক্রবার সকাল থেকে দলে দলে পর্যটকরা নামেন কক্সবাজার সৈকতের বালিয়াড়িতে। দুপুর হতে না হতেই সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট থেকে কলাতলি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এলাকা ভরে যায় মানুষে মানুষে। এ ছাড়াও হিমছড়ি, ইনানী পাথুরে সৈকত থেকে শফির বিল, পাটুয়ারটেক, মনখালী এবং টেকনাফ সৈকত পর্যন্ত প্রচুর সংখ্যক ভ্রমণকারির মিলন মেলায় পরিণত হয়।
ফরিদপুরের শামশুল হক দম্পতি জীবনের প্রথম বার এসেছেন কক্সবাজারে। তিনি জানান- ‘এই প্রথমবার এসে কক্সবাজারকে দেখলাম। এক সঙ্গে এত বিপুলসংখ্যক মানুষ আর দেখিনি। সৈকতে এত বেশি মানুষ দেখে মনে হচ্ছে এটা ঢেউয়ের সমুদ্র নয় যেন মানুষের সমুদ্র।’
নারায়ণগঞ্জের রিজভী আহমদ ন্যান্সী বলেন-‘ এতদিন করোনার কারণে ঘরে বন্দি জীবন কাটিয়েছি। সাগর পাড়ে এসে মনে হচ্ছে, এখন আমরা মুক্ত পাখির মতো উড়ছি আর ঘুরছি।’
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে কোনো শিক্ষা ট্যুরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ভিড় হয়নি। কক্সবাজারে আসেনি এবার কোনো কর্পোরেট পিকনিক দল। দেশে করোনার সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় মানুষের মধ্যে করোনা ভীতি কেটেছে। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন আসার পর সাহস বেড়েছে করোনা ভীতিতে কাতর লোকজনের মধ্যে। এসব কারণে মৌসুমের শেষ দিকের তিন দিনের ছুটিতে এভাবে লোকজন বেড়াতে ছুটে চলা।
কক্সবাজারে এত বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসে ভিড় জমিয়েছেন যে, ছোট্ট শহরটির সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও কটেজে তিল ধারণেরও জায়গা নেই। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে কক্সবাজারে। কক্সবাজারে আসা-যাওয়ার যানবাহন ও বিমানেও গত সপ্তাহ থেকে শুরু করে আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো টিকেটই মিলছে না।
এদিকে কক্সবাজার সৈকত ছেড়ে ভ্রমণকারীরা পর্যটক জাহাজে চড়ে ছুটছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনস। কক্সবাজার থেকে একটি এবং টেকনাফ থেকে আরো ৭টি পর্যটক জাহাজসহ সবগুলো জাহাজ ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং স্পিড বোটে করে এক দিনে কমপক্ষে ১০ হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে গেছেন।
এছাড়াও কক্সবাজারের ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মহেশখালী, সোনাদিয়া, মাতারবাড়ি ও কুতুবদিয়াসহ আরো অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও ভিড় করছেন পর্যটকরা।

ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে খুলনার প্রকৌশলীর ৫ বছরের কারাদণ্ড
খুলনা অফিস

খুলনায় ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপ সহকারী প্রকৌশলী এস এম হাবিবুল্লাহকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। হাবিবুল্লাহ উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেব কর্মরত ছিলেন। একই সঙ্গে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) খুলনার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মজিবর রহমান জানান, ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল ঠিকাদারের নিকট থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের সময় দুদকের অভিযানে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার হন এসএম হাবিবুল্লাহ। এ ঘটনায় দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক আবুল হাসেম বাদী হয়ে কয়রা থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তিনি আরো জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক এসএম শামীম ইকবাল ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট এসএম হাবিবুল্লাহকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত দুটি ধারায় ৫ বছরের তাকে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদানের আদেশ দেন।

পাকুন্দিয়ায় রাতের আঁধারে ঘর তুলে জমি দখলের অভিযোগ
পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় রাতের আঁধারে ঘর তুলে জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাদেক হোসেন খোকন ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। সোমবার (২৩ মার্চ) রাতে উপজেলার চরকাওনা মুনিয়ারিকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের কাছে এক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মো. জুয়েল রানা নামের এক ব্যক্তি।
জুয়েল রানা বলেন, ‘১৯৬৬ সালে আমার দাদা হাসমত উল্লাহ পাশের বাড়ির মৃত আব্দুল মান্নান ও আব্দুল জব্বারের কাছ থেকে সাফ কাওলা দলিল মূল্যে ৮ শতাংশ জমি কেনেন।
তিনি আরো বলেন, ‘তারা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন। তাদের হুমকি-ধমকির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযুক্ত সাদেক হোসেন খোকন রাতে ঘর তোলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের জায়গাতেই আমরা ঘর তুলেছি। তাদের জায়গায় কোনোরকম হস্তক্ষেপ করেনি আমরা।
পাকুন্দিয়া থানার ওসি শাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘরের আড়ায় ঝুলছিল প্রতিবন্ধী যুবকের নিথর দেহ
দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে সুমন মিয়া (১৮) নামে এক তরুণের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাতে উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত সুমন ওই গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুমন মিয়া মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলেন।
দুর্গাপুর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

নওগাঁয় উপজেলা আ. লীগের সভাপতি বুলু গ্রেপ্তার
অনলাইন ডেস্ক

নওগাঁর বদলগাছী আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু খালেদ বুলুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে উপজেলার ভান্ডারপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর উপজেলার গোবরচাঁপা হাট এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরের দিন বেলাল হোসেন শৌখিন নামে বিএনপির এক নেতা বাদী হয়ে থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন। মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৪০ নেতাকর্মীসহ আরো অজ্ঞাত ৮০-১০০ জনকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় বুলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তার আবু খালেদ বুলু বিস্ফোরক মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন। সোমবার রাতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’