চাঁদপুরে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের পৃথক অভিযানে চার মেট্রিক টন জাটকা জব্দ করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে জাটকাভর্তি একটি পিকআপও জব্দ করা হয়েছে। সোমবার ভোরে চাঁদপুর সদরের বহরিয়া ও জেলা শহরে এসব ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে আটক করা হয়।
এদিকে, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানেও নদীতে বন্ধ হচ্ছে না জাটকা নিধন।
এই নিয়ে সচেতন মহলে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নৌ পুলিশ, চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান জানান, মেঘনাপাড়ের বহরিয়া এলাকায় বিপুল পরিমাণ জাটকা মজুত করা হয়েছে। গোপনে এমন সংবাদের ভিত্তিতে পাশের হরিণাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় ১৫টি ড্রামভর্তি জাটকা জব্দ করা হয়।
তবে এই ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।
পুলিশ সুপার আরো জানান, জব্দ করা প্রা তিন মেট্রিক টন জাটকা সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক ও মৎস্যবিভাগের অনুমতি নিয়ে দুস্থ অসহায় মানুষ ও বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
এদিকে, নৌ পুলিশের আরেক অভিযানে আলুরবাজার ফাঁড়ির সদস্যরা মেঘনা নদীতে জাটকা শিকারের সময় চার জেলেকে আটক করে। অন্যদিকে, চাঁদপুরে কোস্টগার্ডের চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লে. মো. আসাদুজ্জামান জানান, পিকআপভর্তি একটি জাটকার চালান শহরের প্রবেশ করেছে।
গোপনে এমন সংবাদ পাওয়ার পর তল্লাশি চৌকি বসিয়ে সন্দেহজনক নেই পিকআপ আটক করা হয়। এ সময় তা থেকে এক মেট্রিক টন জাটকা এবং এর সঙ্গে জড়িত ৬ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, এই নিয়ে চাঁদপুরে গত ১৫ দিনে ছয় মেট্রিক টন জাটকা, ৩২ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল এবং ৩০টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করা হয়। এসব ঘটনায় জড়িত থাকায় ৮৫ জনকে আটক করে নিয়মিত মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নদীতে সব ধরনের কঠোরতার মাঝেও কেনো জাটকার নিধন হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে চিহ্নিত এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরো তৎপরতা বাড়ানো হবে।
একই সঙ্গে জেলার নদীপাড়ের জেলেদের নিয়ে জাটকা সংরক্ষণে সচেতনতামূলক সমাবেশ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার হাইমরচরের নীলকমল, গাজীপুর ও হাইমচর ইউনিয়ন, চাঁদপুর সদরের হানারচর, লক্ষ্মীপুর, ইব্রাহিমপুর, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের মেঘনা ও পদ্মা নদীতে এবং মতলব উত্তরের বেশ কিছু এলাকায় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একশ্রেণির জেলে নির্বিচারে জাটকানিধন করছে। এসব কাজে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ এমন অনৈতিক কাজে সহযোগিতা দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
প্রসংগত, জাটকা সংরক্ষণ মৌসুম শুরু হওয়ায় মার্চ-এপ্রিল এই দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা, মেঘনাসহ দেশের ছয়টি অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই সময় সংশ্লিষ্ট এলাকায় জাটকা বহন, বিক্রয় এবং মজুতও নিষিদ্ধ রয়েছে।