কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের উরদিঘী দাখিল মাদরাসার জমি দখল করে দোকানপাট তুলে ভোগদখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে। দখলবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা, মরিচখালি বণিক ও ভিট মালিক সমিতির সভাপতি এবং মাদরাসার সাবেক সভাপতি মো. সাইদুর রহমান। এর পেছনে তার স্বজনরাও রয়েছে, যারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তারা মাদরাসার সামনে অন্তত ১০টি দোকান নির্মাণ করেছেন।
জানা যায়, এসব দোকান কেউ ভাড়া দিয়েছেন। কেউ আবার বিক্রিও করে দিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে তারা অপকর্মটি করে এলেও কেউ বাধা দেয়নি। সম্প্রতি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
১৯৭৯ সালে নির্মিত মাদরাসাটিতে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মাদরাসার সামনের ফটকটি বাদ দিয়ে দুইপাশে সারিসারি দোকান। এসব দোকানে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন সাইদুর রহমানের লোকজন। তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি দোকানটি কিনে নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, এসব দোকানপাটের কারণে মাদরাসাটি আড়ালে পড়ে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলে চেনা যায় না। অন্তত কোটি টাকার জমি বেদখল করা হয়েছে এখানে।
মাদ্রাসার তত্ত্ববধায়ক মো. মাহতাব উদ্দিন জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। আগে থেকেই মাদরাসার জায়গায় দোকানগুলো ছিল।
তবে এসব থেকে মাদরাসাকে কোনো টাকাপয়সা দেওয়া হয় না। আমি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। এ সময় তিনি জানান, এগুলো ছাড়াও মাদরাসার ৮৮ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে জমিদাতারা। যা নিয়ে মাদরাসার সঙ্গে জমিদাতাদের মামলা চলছে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জাপা নেতা ও মরিচখালী বাজার কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, আমরা মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেছি। মাদরাসার সামনে দোকানগুলো বহু বছর ধরেই আছে। অনেকে আবার কারো কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে দোকান দিয়েছে। কেউ আবার দলিলপত্র ছাড়া দোকান কিনেও নিয়েছেন। তবে এখন যেহেতু বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে আমি এটি নিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ সত্য হলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।