পবিত্র রমজান মাসে ইফতারিসহ নিত্যপণ্যের মান যাচাইয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। প্রথম রোজা থেকেই ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে অভিযান পরিচালিত হবে। এই অভিযানে ইফতারি পণ্যের পাশাপাশি শিশুখাদ্য, ফলমূল ও কসমেটিকস অর্থাৎ প্রসাধন পণ্যেরও মান পরীক্ষা করে দেখবে বিএসটিআই।
গতকাল বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌসসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রমজান উপলক্ষে আরো এক মাস আগে থেকেই বিএসটিআইয়ের সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে এবং এর আওতায় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল প্রতিরোধ এবং পণ্যের ওজন ও পরিমাপে কারচুপি রোধে চলমান মোবাইল কোর্ট ও সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রমে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রমজানে ঢাকা মহানগরীতে বিএসটিআইয়ের নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী বিশেষত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও এপিবিএনের সহায়তায় বন্ধের দিনসহ প্রতিদিন তিনটি করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
এ ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথা র্যাব এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
সারা দেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিএসটিআইয়ের সব বিভাগীয়, জেলা ও আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে প্রতিদিন একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি দেশব্যাপী বিএসটিআইয়ের সার্ভেইল্যান্স টিমের অভিযান ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে। রমজান মাসে জনগণ যাতে মানসম্মত পণ্য নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় ও সংগ্রহ করতে পারে, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। রোজার মাসে আকস্মিকভাবে পরিচালিত অভিযানগুলোতে বিশেষ করে রোজাদার সচরাচর যেসব খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করেন ফুট ড্রিংকস, ফুট সিরাপ, মুড়ি, খেজুর, সফট ড্রিংকস পাউডার, কার্বোনেটেড বেভারেজ, ভোজ্য তেল, সরিষার তেল, ঘি, পাস্তুরিত দুধ, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, লাচ্ছা সেমাই, পানি, ইফতার সামগ্রীর বহুল ব্যবহৃত পণ্যেও বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। বিএসটিআইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা যেমন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এসব অভিযানে অংশ নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে ৪৭১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে, যার মধ্যে মামলা করা হয় ৪২৮টি, জরিমানা করা হয় দুই কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কারাদণ্ড দেওয়া হয় তিনজনকে, কারখানা সিলগালা করা হয় ২৩টি। এ ছাড়া ওজনে কারচুপির কারণে ৩৮২টি কোর্ট পরিচালনা করে ৬১৫টি মামলা করা হয়। যেখানে জরিমানা করা হয় দুই কোটি ৩৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
এর মধ্যে ৩৯২টি পেট্রল পাম্পের ইউনিট সিলগালা করা হয়।