<p>টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি এখন বিএনপির দখলে রয়েছে। কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে, এবং ভেতরে দলীয় নেতাদের ছবি, ব্যানার ও ফেস্টুন ঝোলানো হয়েছে। বর্তমানে এই কার্যালয় থেকেই বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।</p> <p>গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতারা কার্যালয়টি দখল করেন বলে জানা গেছে। এটি মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুরে অবস্থিত।</p> <p>বিদ্যালয় ও স্থানীয় মনিটরিং বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুর মৌজার ৯০৭ খতিয়ানের ২৪৩৩ নম্বর দাগে ৭০ শতাংশ জমিতে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিদ্যালয়ের জমিতে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন, যা পরবর্তীতে গোড়াই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে পরিচিতি পায়।</p> <p>বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিদ্যালয়ের জমি দখলের বিষয়টি নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও, ওই সময় জমি দখলমুক্ত করা হয়নি। তখন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। কয়েক বছর ধরে এই টিনশেড ঘরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল।</p> <p>২০২১ সালে মির্জাপুর আসনের এমপি একাব্বর হোসেনের মৃত্যুর পর খান আহমেদ শুভ এমপি নির্বাচিত হন এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী মীর আসিফ অনিকের মাধ্যমে কার্যালয়টির ব্যবস্থাপনায় রংপুর ও গাইবান্ধার নেতাকর্মীদের জড়িত করা হয়। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা নিয়ে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। অবশেষে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতারা কার্যালয়টি দখল করে নেন।</p> <p>উপজেলা ওলামা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক লাভলু শিকদার জানান, বিদ্যালয়ের জমিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয় তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে তা বিএনপির দখলে। </p> <p>গোড়াই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নূর মোহাম্মদ জানিয়েছেন, জমিটির মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য কাগজপত্র যাচাই চলছে। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বর্তমানে দলের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন এবং অনেকেই আত্মগোপনে আছেন।</p> <p>বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ে যোগদানের পর জমির কোনো কাগজপত্র তিনি পাননি। তবে মনিটরিং বোর্ডে জমির পরিমাণ ৭০ শতাংশ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।</p> <p>মির্জাপুর উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, তিনি সম্প্রতি এই পদে যোগদান করেছেন এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।</p>