<p>শীতের আগমনী বার্তায় এরই মাঝে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছ তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন গাছীরা। গাছ তোলা মানে গাছের মাথার একপাশে ধারালো দা দিয়ে ছুলে রস আহরণের প্রস্তুতি করা। এই কাজের জন্য গাছীরা কোমরে মোটা দড়ি ও ঠোঙ্গা বেঁধে খেজুর গাছে উঠে কাজ করছেন।</p> <p>খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের এই প্রস্তুতি শেষ হলেই মাটির তৈরি ছোট ঠিলায় (ভাড়) রস ঝোলানো হবে। এরপর শীতের সকালের মিষ্টি বাতাসে ভেসে আসবে নোলিন গুড় ও পাটালীর মনোমুগ্ধকর সুগন্ধ।</p> <p>গত রবিবার সকালে বলুহর রামচন্দ্রপুর গ্রামের এক গাছী নূর ইসলাম জানান, কৃষিকাজের পাশাপাশি শীতের মৌসুমে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় ও পাটালী তৈরি করেন তিনি। এতে বাড়তি কিছু অর্থ উপার্জন হয়। </p> <p>তিনি বলেন, শীত যত বেশি পড়বে, রস তত বেশি মিষ্টি হবে। এক একটি গাছে প্রায় এক ভাড় রস পাওয়া যায়। আমার নিজের ৫০টি খেজুর গাছ রয়েছে। পালা করে এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি।</p> <p>খেজুর রস থেকে তৈরি হয় পিঠা, পায়েসসহ নানা সুস্বাদু খাবার। এমনকি শহরের অনেক মানুষ গ্রামে আসেন শীতের সকালের খেজুর রস বা নোলিন পাটালীর স্বাদ নিতে। শীতের শুরুতে নোলিন গুড়ের সুগন্ধে পুরো গ্রাম মেতে ওঠে।</p> <p>কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান বলেন, ঝিনাইদহ জেলার খেজুরের গুড় দেশের মধ্যে সেরা মানের। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কোটচাঁদপুর উপজেলায় খেজুরের গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৭১ মেট্রিক টন ধরা হয়েছে এবং রসের পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ২৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫০ লিটার। ভবিষ্যতে রাস্তার ধারে খেজুর গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে চাষীদের জমির আইলে খেজুর গাছ লাগাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।</p> <p>এ অঞ্চলে খেজুর রস ও গুড়ের জন্য শীতকালে শহরের মানুষের আনাগোনা যেমন বাড়ে, তেমনই গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চার করে এই খেজুরের রস আহরণ প্রক্রিয়া।</p>