<p style="text-align:justify">দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ৮১ বছর পর তাদের দেহাবশেষ নেওয়া হচ্ছে জাপানে।</p> <p style="text-align:justify">দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৮ জন সৈনিককে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে সমাহিত করা হয়েছিল। এদের মধ্যে ১৯৬২ সালে একজন সৈনিকের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গিয়েছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">এবার জাপানের পক্ষ থেকে সাত সদস্যদের একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ওই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। বিশেষজ্ঞ দলটির সাতজনের মধ্যে ছয়জন জাপানের ও একজন যুক্তরাষ্ট্রের। তাদেরকে সহায়তা করছে বাংলাদেশ সরকার।</p> <p style="text-align:justify">রবিবার (১৭ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, সমাধিস্থলের মাটি খুঁড়তেই মিলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত জাপানি সৈনিকদের মাথার খুলিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড়। সেগুলো যত্নসহকারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন এই যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। যেখানে দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম চলছে, সেখানে দর্শনার্থীসহ সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। জাপানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ কাজে সহায়তা করছেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ গবেষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক।<br />  <br /> কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশনের পক্ষে সেখানে দায়িত্ব পালন করা কান্ট্রি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আবদুর রহিম সবুজ জানান, গত বুধবার সকাল থেকে জাপানের প্রতিনিধি দল কার্যক্রম শুরু করে। ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে থাকা বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন সৈনিকের মধ্যে জাপানের রয়েছেন ২৪ জন। জাপান ২৪ জন সৈনিকের দেহাবশেষই সরিয়ে নেবে। আগামী ২৪ নভেম্বরের মধ্যে এই কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">প্রসঙ্গত, কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্টিতে ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৮ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। এখন সেখানে থাকা ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন যোদ্ধার মধ্যে ইসলাম ধর্মের ১৭২ জন, বৌদ্ধ ধর্মের ২৪ জন, হিন্দু ধর্মের ২ জন এবং বাকিরা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৫৭ জন, কানাডার ১২ জন, অষ্ট্রেলিয়ার ১২ জন, নিউজিল্যান্ডের ৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকার একজন, অবিভক্ত ভারতের ১৭১ জন, রোডেশিয়ার ৩ জন, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬ জন, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬ জন, বার্মার (মিয়ানমার) একজন, বেলজিয়ামের একজন, জাপানের ২৪ জন এবং পোল্যান্ডের একজনের সমাধি রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">প্রতি বছরের নভেম্বর মাসে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনারসহ তাদের প্রতিনিধিরা এই সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহতদের স্মরণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ নভেম্বর ১৩ দেশের কূটনীতিকরা সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।</p>