<p>ইতোমধ্যে অনেক বিদ্যালয় ও কলেজে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশ ছাড়াও ভালো ফলাফল না করা সন্তানদের কড়া শাসন থেকে বিরত থাকতে একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার। </p> <p>এ উপজেলায় প্রাথমিক, কিন্ডারগার্টেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক (কলেজ) পর্যায়ের ২৭৯ প্রতিষ্ঠানের ৭৪ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন ইউএনও। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে এই চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে।</p> <p>চিঠিতে ইউএনও সারমিনা সাত্তার লিখেছেন, ‘সুপ্রিয় অভিভাবক, আসসালামুর আলাইকুম। ‘ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আপনার সন্তানের বার্ষিক পরীক্ষা। সব বাবা-মায়েরই স্বপ্ন থাকে সন্তান খুব ভালো রেজাল্ট করবে। ক্লাসের টপার হবে। আপনার সন্তান যদি পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর পায় তবে সেটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আনন্দের। কিন্তু যদি না পায় তাহলে অনুরোধ থাকবে, তাদের ওপর নিজের বিশ্বাসটুকু হারাবেন না। সন্তানকে আশ্বস্ত করুন। তার নিজের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার ওপর তাকে আস্থা রাখতে বলুন। সে চাইলেই সামনে আরো ভালো করতে পারবে এতটুক আত্মবিশ্বাস তাকে দিন। তাকে বুঝিয়ে বলুন, পরীক্ষার নম্বর নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছুই নেই। এটি কেবল একটি ক্লাশ পরীক্ষা। জীবনের আরো বহু পথ পাড়ি দিয়ে আরো বহু পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। ক্লাসের এই পরীক্ষাগুলো দিয়ে তাকে ধাপে ধাপে প্রস্তুত করা হচ্ছে কেবলই। কেবলই পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর দিয়ে সন্তানকে বিচার করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার সন্তান নিঃসন্দেহে বহু সুপ্ত প্রতিভার অধিকারী। তার সুপ্ত প্রতিভার বিকাশগুলো প্রকাশের সুযোগ করে দিন। একদিন তার প্রতিভা দিয়েই সে বিশ্বজোড়া খেলোয়াড় হবে অথবা কিংবদন্তী শিল্পী অথবা স্বনামধন্য কোনোও উদ্যোক্তা। পুরো বিশ্ব জয় করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আপনার সামনেই সে বলবে, আমি পেরেছি। তোমাদের সন্তান পেরেছে। সে পর্যন্ত তার হাত ধরে তাকে সুন্দর আগামীর পথে আপনিই এগিয়ে চলুন।’</p> <p>ঈশ্বরগঞ্জ সদরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী শৈলী কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক অলক ঘোষ ছোটন বলেন, ‘আমি প্রায় ৮০০ চিঠি পেয়েছি। দু-এক দিনের মধ্যেই চিঠি শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। আমি চিঠি পড়ে জানতে পেরেছি, এটা খুবই বাস্তবমুখি। এ ধরনের চিঠিতে অভিভাবক মহল কিছুটা হলেও সন্তানদের প্রতি সচেতন হবেন।’</p> <p>খোলা চিঠির বিষয়ে ইউএনও আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অনেক অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে অনেক বিষয় নিয়ে অবগত হয়েছি। সেই থেকেই এই খোলা চিঠি লিখেছি। চিঠিটা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে পৌঁছে দেওয়া শুরু করেছি। আমার এ উদ্যোগ থেকে একজন অভিভাবকও যদি অনুপ্রাণিত হন তবেই এর সফলতা হবে।’</p>