চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া এলাকায় ১ বছর বয়সী শিশু রাব্বী অপহরণের ঘটনায় অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় শিশু রাব্বীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম। গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. দুলাল মিয়া ও মোরশেদ মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা আক্তার নামে এক মহিলা ৫ বছর বয়সী কন্যা ও ১ বছর ৩ মাস বয়সী শিশুপুত্র রাব্বীকে নিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে আসলে দুলালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে ফাতেমা আক্তার দুলাল মিয়াকে নেত্রকোনা ট্রেনের সময় জিজ্ঞাসা করলে দুলাল মিয়া তাকে ওইদিন নেত্রকোনাগামী কোনো ট্রেন নাই বলে জানান।
তখন ফাতেমা আক্তার দুলাল মিয়াকে চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী এলাকায় তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু দুলাল মিয়া বাড়িতে না পৌঁছে দিয়ে কৌশলে বাকলিয়া থানার বাসুর কলোনিতে নিয়ে যায়।
সেখানে একটি রুম ভাড়া করে অবস্থান করে। পরর্বতীতে ১৯ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা আক্তার বাথরুমে গেলে এই সুযোগে দুলাল মিয়া ফাতেমা আক্তারের ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় ফাতেমার স্বামী দুলালকে আসামি করে বাকলিয়া থানায় মামলা করেন।
তিনি আরো বলেন, মামলা দায়েরের পর র্যাব আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার কিশোরগঞ্জের সদর থানায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মো. দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর দুলাল জানান, ব্রাহ্মবাড়ীয়া জেলায় তাদের পরিচিত এক প্রবাসী দম্পতির কাছে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে অপহৃত শিশুটিকে বিক্রয় করে দিয়েছে। দুলালের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সরাইল এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটিকে কিনে নেওয়া অপর আসামি মোরশেদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে জানা গেছে, মো. দুলাল মিয়া আড়াই বছর বয়সী শিশু সারা মনিকে অপহরণের মামলায় অভিযুক্ত এক নম্বর আসামি।
এই মামলায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে মো. দুলাল মিয়ার স্ত্রী রুনা বেগম বর্তমানে কিশোরগঞ্জ ভৈরব থানার মামলায় কারাগারে রয়েছে। আসামি দুলাল মিয়ার মোবাইলে বাচ্চা বিক্রি সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কথোপকথনের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, আসামি এবং তার পরিবার এক ভয়ংকর সক্রিয় অপহরণ চক্রের সদস্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের দ্রুত ধরার বিষয়ে র্যাব সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, আসামি মোরশেদ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, সে প্রবাসে ১৭ বছর ছিল। তিনি ৫টি কন্যা সন্তানের জনক। মূলত, পুত্র সন্তানের আকাঙ্ক্ষা সে এই অপহরণ চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে প্ররোচনা দিয়ে শিশু বাচ্চাটিকে তার কাছে নিয়ে যায়।