মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ঈদের আগের রাতে বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধুর নেতৃত্বে স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মধুবাহিনীর হামলায় প্রায় ৪০-৫০ জনের মতো আহত হয়েছে। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ বিএনপি নেতা মধু ও তার ১৪ সহযোগীকে আটক করে।
সোমবার (৩১ মার্চ) রাতে শ্রীমঙ্গল শহরের গদারবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় মধুর লোকজন ২০-২৫টি টমটম ভাঙচুর করেছে বলে জানা যায়।
জানা যায়, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র মহসীন মিয়া মধু মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। ন্যাশনাল টি কম্পানির পরিচালক পদেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, শ্রীমঙ্গল শহরের গদার বাজার এলাকায় মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক মেয়র মহসিন মধু গাড়ি নিয়ে তার পরিচালিত বিনালাভের বাজারে যান।
এ সময় পার্কিং নিয়ে টমটম স্ট্যান্ডের চালকদের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে পার্শ্ববর্তী পশ্চিমভাড়াউড়া গ্রামের মেম্বার আনারের সঙ্গেও তর্কাতর্কি হয় বিএনপি নেতা মধুর।
এর জের ধরে মধুর লোকজন এসে গদারবাজার এলাকার আশপাশ ও সোনামিয়া রোড থেকে আলাবক্স জামে মসজিদ পর্যন্ত ব্লক করে টমটম ড্রাইভারদের মারধর ও ভাঙচুর চালায়। এতে ২০-২৫টির মতো টমটম ভাঙচুর হয়।
পরে পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামের টমটম চালকরা গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মধুর লোকজনকে ধাওয়া করে। দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে ভোররাত পর্যন্ত।
এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও ৫৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরে সেনাবাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় শহরে দোকানপাটে আটকে পড়া সাধারণ মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি দোকান ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
যৌথ বাহিনীর নেতৃত্বে রাতেই বিএনপি নেতা মধুর বাসা থেকে অস্ত্রসহ ১৪ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের তালিকায় তার ভাই, ছেলে, ভাতিজা আছেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, মহসিন মিয়া মধু সুকৌশলে বিনালাভের বাজার নাম দিয়ে শহরের সবজির বাজার, গদারবাজারে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া সারা শহর জুড়ে তার লোকজন পেশিশক্তি দিয়ে দখল ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। বেশির ভাগ জায়গা তার দখলে নেন।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধুসহ ১৪ জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।