দীর্ঘ ১৭ বছর পর আওয়ামী লীগের দুর্গখ্যাত গোপালগঞ্জে উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। আগামীকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দলটির কেন্দ্র ঘোষিত এই কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে দলটি। সমাবেশ সফল করতে ইতিমধ্যে শেষ করা হয়েছে সব প্রস্তুতি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ও নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
১৭ বছর পর সোমবার গোপালগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

সমাবেশ ঘিরে সব নেতাকর্মীর মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। জেলার বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য তোরণ। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সড়কের দুই পাশ। সমাবেশ সফল ও রেকর্ডসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন দফায় দফায় প্রস্তুতিসভা, প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছেন।
সর্বশেষ ২০০৪ সালে ফরিদপুর অঞ্চলের বিএনপির ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন করেছিলেন তারেক রহমান। এরপর গোপালগঞ্জে আর কোনো জনসভা বা সমাবেশ করেনি বিএনপি। ওয়ান-ইলেভেন-পরবর্তী ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদে বিএনপিকে প্রকাশ্যে কোনো মিছিল-মিটিং করতে দেখা যায়নি। ঘরোয়া আলোচনার মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ ছিল তাদের কর্মসূচি।
এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন ও প্রধান বক্তা হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহআইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) খন্দকার মাশুকুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। জনসভায় সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান বলেন, গোপালগঞ্জ শহরের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০০৪ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সর্বশেষ ফরিদপুর বিভাগীয় ইউনিয়নসভা করেছিলেন। যা জনসভায় পরিবর্তন হয়েছিল। দীর্ঘ সময় নেতাকর্মীরা ৩০-৪০ হাজার লোক সমাগমের টার্গেট নিয়ে জেলার সর্বত্র তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ৩১ দফা বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্তা বাড়াতে উৎসবের আমেজে নবীন-প্রবীণ সবাই কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, গত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের গোপালগঞ্জে স্বাধীনভাবে একটি কর্মসূচিও পালন করতে দেয়নি। বিগত সময় জাতীয়তাবাদী ধারার সমর্থকরা ভয়ে আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি বা কোনো কর্মসূচি করতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর এখন আর কোনো ভয় নাই। যেহেতু এখন একটি মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এটি একটি জাতীয় রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ। সমাবেশ সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।
সম্পর্কিত খবর

সংঘর্ষে নিহত, শাহজাদপুরে বিএনপির ২ নেতার পদ স্থগিত
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নের বড়ধুনাইল গ্রামে সরকারি খাস জমি দখল ও দফা দফায় সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের এক ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির দুই নেতার পদ স্থগিত ও যুবদল এবং ছাত্রদলের দুই নেতার পদ স্থগিতের জন্য জেলা যুবদল ও ছাত্রদলকে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়াও ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পদ স্থগিত হওয়া নেতারা হলেন- রুপবাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হালিম সেখ।
অভিযুক্ত যুবদল ও ছাত্রদল নেতারা হলেন- রুপবাটি ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সেখ ও একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি ইনজাজাম সেখ।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ সুইটকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক নওশাদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহজাদপুর উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নে প্রতি বছর সরকারি জমি দখল নিয়ে মারামারি হয়ে থাকে। এবারও সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
বড়ধুনাইল গ্রামে ১৫০ বিঘা সরকারি খাসজমি দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র জাফর গ্রুপ ও রাজ্জাক গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার ও রবিবার দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে রাজ্জাক গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষ জাফর গ্রুপের লোকজনের অন্তত ১০টি বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ছাত্রদল নেতা জাকির খাঁনের কারামুক্তিতে হাজারো মানুষের ঢল
অনলাইন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খাঁন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তার নেতাকর্মী ও অনুসারীরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাকে বরণ করে নিয়েছেন। রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টায় জাকির খাঁন কারাগার থেকে মুক্ত হলে তার আত্মীয়-স্বজন ও হাজার হাজার নেতাকর্মীরা জেল গেট থেকে ফুল ও মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন।
তার কারামুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী একটি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার মেয়াদ শেষ হলে জাকির খাঁনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জাকির খাঁনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, জাকির খাঁন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সফল সভাপতি। আমরা প্রত্যাশা রাখতে চাই, জাকির খাঁনের নেতৃত্বে আগামীতে নারায়ণগঞ্জে স্বনির্ভর ও উজ্জ্বল রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে। জাকির খাঁনের হাত ধরে বিএনপি, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করা হবে।
উল্লেখ্য, হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩টি মামলার আসামি ছিলেন জাকির খাঁন। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১ এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পাবনা
শ্রমিক লীগ নেতা থেকে যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ পাবনা জেলা শাখার আওতাধীন চাটমোহর উপজেলা শাখার আংশিক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে দলটির পাবনা জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আগামী এক বছরের জন্য ঘোষিত কমিটিতে গুরত্বপূর্ণ দুটি পদ পেয়েছেন চাটমোহর উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও একজন সৌদি প্রবাসী।
নতুন কমিটি প্রকাশের পর শ্রমিক লীগ নেতার যুব অধিকারে অনুপ্রবেশ ও পুনর্বাসন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়।
জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি সোহেল রানা নোমান এবং সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কমিটিতে মো. রিপন হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
সে সময় জোরপূর্বক এলাকার খাল-বিল দখলসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গণ অধিকার পরিষদে যুক্ত হয়ে পোস্টারিং ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে গণ অধিকার পরিষদের নেতা হিসেবে প্রচারণা চালান। সবশেষ বাগিয়ে নেন বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ চাটমোহর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের পদ।
অপরদিকে সৌদি প্রবাসী শরিফুল ইসলাম সবুজ বিদেশে থেকেও যুব অধিকার পরিষদ চাটমোহর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন। নতুন এ কমিটিকে আগামী ১ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা কমিটি।
নতুন কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক জানান, রিপন হোসেন শ্রমিক লীগ করতেন কি-না এটি তার জানা নেই। জেলায় কমিটিতে জমা দেওয়ার পর গত ৫ এপ্রিল জেলা কমিটি তা অনুমোদন করে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ পাবনা জেলা শাখার সভাপতি সোহেল রানা নোমান জানান, রিপন হোসেন জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা ছিলেন বিষয়টি আমার জানা নেই। কমিটি অনুমোদনের পূর্বেই শরিফুল ইসলাম সবুজ বিদেশে চলে গেছেন, সেটাও জানা নেই। তবে কেউ দলের জন্য কাজ করলে বিদেশ থেকেও করা সম্ভব।

রাণীশংকৈলে ৭৮০ পিস ট্যাপেনটাডোলসহ যুবক গ্রেপ্তার
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ৭৮০ পিস ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটসহ শহিদুল হক (২৩) নামে মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে উপজেলার ধুমপুকুর টোটোয়ার মোড় নামক স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শহিদুল পাশ্ববর্তী হরিপুর উপজেলার মারাধার (উত্তরপাড়া) গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, রাণীশংকৈল থানা পুলিশের একটি দল মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ধুমপুকুর টোটোয়ার মোড় নামক স্থান থেকে মাদক কারবারি শহিদুল হককে গ্রেপ্তার করে।
রানীশংকৈল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক জানান, মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে মাদক কারবারি রশিদুলকে ৭৮০ পিস ট্যাপেনটাডোল ট্যাবলেটসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে রবিবার সকালে জেলা জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।