নাটোরে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর প্রতিনিধি
শেয়ার
নাটোরে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
সংগৃহীত ছবি

নাটোরের বড়াইগ্রামে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার মুশিন্দা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুর রহমান বলেন, গত রাত সাড়ে ১০টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলার মুশিন্দা এলাকার ১৪ বছরের এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে মোবাইল ফোনে বাড়ির বাইরে ডেকে নেয় প্রতিবেশী যুবক মনির হোসেন সরকার। পরে বাড়ির পাশে একটি আম বাগানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে কামরুল ইসলাম নামে অপর এক যুবক।

ভুক্তভোগীকে বাড়িতে না পেয়ে খুঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে আম বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে রাতেই অভিযান চালিয়ে মনির হোসেন সরকার, কামরুল ইসলাম ও আরো এক যুবককে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অপর যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা দুইজনকে আসামি করে বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করেছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক ভুটভুটি চালক ও এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে দুর্ঘটনা দুটি ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র।

নিহতরা হলেন- ভুটভুটি চালক ও নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেজগ্রাম এলাকার আসাদ শাহ-এর ছেলে আল আমিন (২৬) এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাজাহানপুর ইউনিয়নের নরেন্দ্রপুর এলাকার কাদির মন্ডলের টোলা গ্রামের তাইফুর রহমানের ছেলে সায়েম আলী (৫)।

আরো পড়ুন
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে যা বললেন আবরারের মা

মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে যা বললেন আবরারের মা

 

সদর থানার ওসি মতিউর রহমান বলেন, ‘রবিবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে মান্দা যাওয়ার পথে সদর উপজেলার আতাহার বুলনপুর এলাকায় আমনুরা সড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় একটি ভুটভুটির।

এতে ভুটভুটি চালক আল আমিন ও  মান্দার চকশল্লা  এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (৩০) নামে এক ভুটভুটি আরোহী ঘটনাস্থলে আহত হন। তাদের জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পর দুপুর ১২টায় আল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য মেহেদী হাসানকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রায় একই সময় শাহজাহানপুরের হুরুপাড়া এলাকায় নানাবাড়ির পাশের সড়ক পারাপারের সময় একটি অটোরিকশার ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ৫ বছরের শিশু সায়েম।

এসব ঘটনার পরপরই ট্রাক ও অটোরিকশা পালিয়ে যায়। পুলিশ উভয় মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ সব ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।’

মন্তব্য

বরিশালে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, ঘটনার নেপথ্যে কী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
শেয়ার
বরিশালে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, ঘটনার নেপথ্যে কী
প্রতীকী ছবি

বরিশাল নগরে শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মো. সুজন (২৩) নামের এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার করা হয়েছে। তবে তার পরিবারের দাবি, মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকতে চায়নি বলে বলে তাকে হত্যা করেন মাদক ব্যবসায়ীরা। 

শনিবার সন্ধ্যায় নগরের ধান গবেষণা রোডে সুজনকে আটক করে পিটুনি দেয় স্থানীয়রা। রাত ৮টার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি।

তাকে পিটুনি দেওয়ার ঘটনায় বাঁধন নামের এক যুবককে রবিবার আটক করেছে পুলিশ।

সুজনের পরিবারের সদস্যরা বলছে, ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ মিথ্যা, এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে সুজনকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।  

সুজন নগরের ধান গবেষণা রোড এলাকার জিয়া নগরের একটি ভাড়া বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন।

তার বাবা মনির হোসেন পেশায় একজন শ্রমিক। রবিবার তার লাশ দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। তবে এজাহারে কারো নাম উল্লেখ্য করা হয়নি।
 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, যারা সুজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তদন্তকালে তাদের নাম উঠে আসবে। এই ঘটনার বেশকিছু ভিডিও ফুটেজ এবং স্থিরচিত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। 

এদিকে সুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর বাবা শনিবার বরিশাল কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে তার মেয়েকে একটি কাজে সুজনের বাড়িতে পাঠানো হয়। তখন সুজন একা বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।

ওই শিশু ভেতরে প্রবেশ করতেই তাকে আটকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সুজন। এ সময় শিশুটি চিৎকার দিলে সুজন পালিয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয় মালেক মুন্সির ছেলে রুবেল, বাচ্চু দুরানীর ছেলে ছাব্বির, বিএনপি কর্মী কাউয়ুম হোসেন, মাদক ব্যবসায়ী ঈমন, মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে বাঁধনসহ বেশকিছু লোক জিয়ানগর চরে জড়ো হন। এক পর্যায়ে তারা সুজনকে বাড়ি থেকে ধরে এনে কীর্তনখোলা তীরের সেই চরের একটি গাছের সঙ্গে দুই হাত বেঁধে ফেলেন। পরে পালা করে লাঠি দিয়ে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত পেটাতে থাকেন তারা।

পিটুনির ফলে সুজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সন্ধ্যার দিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। একইসঙ্গে সুজনের বিরুদ্ধে চার বছরের শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে থানায় এজাহার দেওয়া হয়। পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী একই সঙ্গে শিশুকে বরিশাল-শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টাফ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। সুজনকে সন্ধ্যার পর বরিশাল-শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। চিকিৎসাধীন রাত ৮টার দিকে সুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

সুজনের ছোট ভাই মো. আকাশ রাতে হাসপাতালে বলেন, সুজনকে দিয়ে এলাকার একটি মাদক ব্যবসায়ীচক্র মাদক বিক্রি করাতো। সুজনও মাদকাসক্ত ছিলেন। মাসখানেক আগে স্বজনদের পক্ষ থেকে সুজনকে মাদক বিক্রি ও সেবন না করতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এমনকি তাকে ঘর থেকে বের হওয়াও বন্ধ করে দেয় পরিবার। এরপর সুজনকে ওই চক্র বারবার তাদের সঙ্গে কাজে যেতে তাগিদ দিলেও সুজন আর যাননি। এতে ক্ষিপ্ত হয় ওই চক্রটি।

আকাশের দাবি, কয়েক দিন আগে তার ভাইকে বাইরে ডেকে নিয়ে ওই চক্রের সদস্যরা মারধর করেছিল এবং তাদের সঙ্গে কাজ না করলে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। এর জেরেই মিথ্যা অভিযোগ তুলে তার ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে।

সুজনের মা বলেন, শুক্রবার ঘটনার পর বাচ্চু দুরানী তার বাসায় গিয়ে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছিলেন। তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বাচ্চু ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছিলেন, ধর্ষক সুজনকে মানুষ পিটিয়ে মারবে। 
সুজনের মায়ের দাবি, বাচ্চুর নেতৃত্বেই তার লোকজন সুজনকে বাঁচতে দেয়নি, পিটিয়েই মেরে ফেলেছে।   

এই মারধরের সঙ্গে তার ছেলে ছাব্বির জড়িত ছিল না বলে দাবি করে বাচ্চু দুরানী মুঠোফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, শনিবার দুপুর ৩টার দিকে সুজনের মা তার বাড়িতে এসেছিলেন। ছেলেকে মামলা থেকে মুক্ত করার জন্য তার সহযোগিতাও চেয়েছিলেন। তিনি সুজনের মাকে বলেছিলেন, এটা মীমাংসা যোগ্য মামলা নয়। আদালত এটার সিদ্ধান্ত দেবে। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুজনকে মারধরের খবর শুনতে পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনিই সুজনকে উদ্ধার করে থানায় পাঠান।

পুলিশ জানায়, ধর্ষণচেষ্টার শিকার শিশুটির বাবার অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তদন্ত করতে ওই এলাকায় যায়। পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিতে স্থানীয় লোকজন সুজনকে আটক করে। এ সময় উত্তেজিত লোকজন তাকে পিটুনি দিলে সুজন আহত হন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। রাত ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি।

হাসপাতালে থাকা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক সাহা বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে সুজনের সারা শরীরে মারধরের ক্ষত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তারা। মারধরের কারণেই সুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা।

ওসি মিজানুর রহমান বলেন, শিশুটির বাবার করা অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। শিশুটি ওসিসিতে রয়েছে। অন্যদিকে পিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সুজনের পরিবার থেকে এজাহার দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই গণপিটুনিতে অংশ নেওয়া বাঁধনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আরো যারা অংশ নিয়েছিল, তাদের অন্তত চারজনকে শনাক্ত কর গেছে। তাদেরকেও গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ মাঠে রয়েছে।

মন্তব্য

কুমিল্লায় র‌্যাবের অভিযানে ১২ মামলার আসামি রিয়াদ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনি
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনি
শেয়ার
কুমিল্লায় র‌্যাবের অভিযানে ১২ মামলার আসামি রিয়াদ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার

কুমিল্লায় ১২টি মামলার আসামি মো. রাকিবুল হাসান রিয়াদ (২৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে কুমিল্লা র‌্যাব-১১।

এর আগে শনিবার রাতে র‌্যাবের একটি অভিযানে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার আমতলী এলাকায় থেকে ৩ হাজার ৭৫০ পিস ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার মো. রাকিবুল হাসান রিয়াদ কুমিল্লার বালুতুপা গ্রামের মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাইসহ ১২টি মামলা রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব-১১-এর উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম (বিপিএম) জানান, গ্রেপ্তার রাকিবুল হাসান রিয়াদ দীর্ঘদিন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য ইয়াবা সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের কাছে পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রয় করে আসছিল। শনিবার দিবাগত রাতে র‌্যাবের নিয়মিত অভিযানে তাকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

মন্তব্য

মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে যা বললেন আবরারের মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
শেয়ার
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে যা বললেন আবরারের মা
ছবি : কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আবরারের মা রোকেয়া খাতুন। তিনি দ্রুত রায় কার্যকর ও পলাতক আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে আজ রবিবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আদালতকক্ষে আবরার ফাহাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আদালতের রায় শোনার পরে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাসায় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন, দাদা আব্দুল গফুর বিশ্বাস, মেজো চাচি নিলুফা ইয়াসমিন ও সেজো চাচি মমতাজ বেগমও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আরো পড়ুন
ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৫, ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও

ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৫, ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও

 

শহীদ আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্ট আজ যে রায় দিয়েছেন তাতে আমি সন্তোষ প্রকাশ করছি। শুধু আমরা নয়, সারা দেশের মানুষও সন্তুষ্ট।

২০২২ সালের রায় বহাল রয়েছে। প্রথম যখন রায় ঘোষণা করা হয়েছিল, সে রায়েও দেশবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছিল। আমি বর্তমান সরকার, বিচার বিভাগের সংশ্লিষ্টরা, ছাত্রজনতা, সাংবাদিক ও দেশবাসীর সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মৃত্যুর চার বছর পরেও আমার সন্তানকে কেউ ভুলে যায়নি।
সবাই আমার আবরারকে মনে রেখেছে, কেউ ভুলে যায়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান র‍্যাগিংমুক্ত থাক। বর্তমানে যেমন জুলুম-অত্যাচার নেই। তেমন যেন সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব সময় নিরাপদ থাকে। ভবিষ্যতে যেন আমার মতো কাউকে সন্তান হারাতে না হয়।

শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন লক্ষ্য যেন ধ্বংস না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যে রায় হয়েছে, সেটা দ্রুত কার্যকর করা হোক। যাতে আবরারের মতো কাউকে জুলুম-অত্যাচার করতে না পারে কেউ। এ রকম কাজ করার কেউ সাহস না পাই। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উচিত, শিক্ষার্থীদের ছেলের মতো করে দেখা। পিতামাতার মতো শাসন করতে হবে।’

আরো পড়ুন
মদন পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মদন পৌরসভার সাবেক মেয়রসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এসএম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)। 

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামি হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।

আরো পড়ুন
বইটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, সম্পূর্ণ গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস না : আসিফ মাহমুদ

বইটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, সম্পূর্ণ গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস না : আসিফ মাহমুদ

 

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে সংগঠনটির ক্যাডাররা। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।  

আবরার ফাহাদ ১৯৯৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. বরকত উল্লাহ এবং মায়ের নাম রোকেয়া খাতুন।

আবরার কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নটর ডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বর্তমানে বুয়েটে মেকানিক্যাল বিভাগে অধ্যয়নরত।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ