আরসার একমাত্র বাংলাদেশি সদস্য মনিরের বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামে

আলম ফরাজী, ঈশ্বরগঞ্জের চরআলগী থেকে
আলম ফরাজী, ঈশ্বরগঞ্জের চরআলগী থেকে
শেয়ার
আরসার একমাত্র বাংলাদেশি সদস্য মনিরের বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামে
ছবি: কালের কণ্ঠ, ইনসেটে মনির

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল উচাখিলা ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান (মনির)। গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব যে ১০ জন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে, তাদের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশি তিনি। মনিরের পরিবার ও প্রতিবেশীরা এই ঘটনায় হতবাক।

মনিরের বাড়ি চরআলগী গ্রামে একটি টিনশেড বাড়িতে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়িতে গেলে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা শোকে কাতর। মা চম্পা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মনির খুব সরল মনের ছেলে। হয়তো না বুঝে এই কাজে জড়িয়েছে। আমাদের সংসার খুব অভাবের।
সে হয়তো সঙ্গীদের ফাঁদে পড়েছে।

মনিরের বাবা মো. আতিকুল ইসলাম স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তিনি বলেন, মনির মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। গত চার মাস আগে সে বলেছিল, মাদ্রাসায় চাকরি ছেড়ে নতুন চাকরি পেয়েছে।

কিন্তু কী চাকরি, তা বলেনি। এখন কীভাবে আরসার সঙ্গে জড়াল, তা বুঝতে পারছি না।

মনিরের ছোট ভাই মুত্তাকীন হাসান বলেন, ভাই মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। রোজার আগে একবার এসেছিলেন। টঙ্গীতে মাদ্রাসায় চাকরি করতেন বলে জানতাম।

কয়েক মাস আগে বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করলেও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অসুস্থতা ধরা পড়ায় যাওয়া হয়নি।

প্রতিবেশী রতন মিয়া বলেন, মনির খুব শান্ত ও সরল প্রকৃতির ছিলেন। তিনি কারও সঙ্গে মিশতেন না। এই ঘটনা আমাদের জন্য অবিশ্বাস্য। তবে যদি সত্যিই তিনি কোনো ভুল কাজে জড়িয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর বিচার হওয়া উচিত।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ নগরের নতুন বাজার মোড়ের গার্ডেন সিটি ভবনে আরসা সদস্যরা যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেটি মনিরের নামে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও পাওয়া গেছে।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মনিরসহ গ্রেপ্তারকৃত ১০ জন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে আছেন। মামলার প্রয়োজনে তাদের আদালতে হাজির করা হবে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি ওবায়দুর রহমান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা সহযোগিতা করব।

মনিরের গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পরিবার ও প্রতিবেশীরা এখনও এই ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বকশীগঞ্জে পাখি ধরে দেওয়ার কথা বলে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
বকশীগঞ্জে পাখি ধরে দেওয়ার কথা বলে শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা
প্রতীকী ছবি

জামালপুরের বকশীগঞ্জে পাখি ধরে দেওয়ার কথা বলে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে এক শিশুকে (৯) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রিপন মিয়া (২৩) নামে এক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

আটক রিপন মিয়া একই এলাকার মিষ্টার আলীর ছেলে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বকশীগঞ্জ পৌর শহরের কাগমারীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রলি চালক রিপন মিয়া একই এলাকার (৯) বছর বয়সী এক শিশুকে পাখি ধরে দেওয়ার কথা বলে ফুঁসলিয়ে বাড়ির পাশে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায়। ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে শিশুটি ধর্ষণের চেষ্টা করে সে। একপর্যায়ে শিশুটি ডাক চিৎকার দিলে এলাকাবাসী রিপনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এই ব্যাপারে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহম্মেদ জানান, ধর্ষণচেষ্টায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মন্তব্য

কক্সবাজারে মৃত ব্যক্তির নামে মামলা

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
শেয়ার
কক্সবাজারে মৃত ব্যক্তির নামে মামলা

কক্সবাজারে জাফর আলম নামে এক মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রায় আট মাস আগে মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মামলার আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে।

গত বছরের ৪ আগস্ট কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলা ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৭৭০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

মামলায় ৫২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, পাশাপাশি ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (২২ মার্চ) এনামুল হক নামের এক ছাত্র প্রতিনিধি বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। বাদী এনামুল হকের স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রামের বাঁশখালী হলেও তিনি বর্তমানে কক্সবাজারে বসবাস করছেন।

মৃত জাফর আলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার বাবা জাফর আলম ঈদগাঁও উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগছিলেন এবং ২০২৩ সালের ৬ জুন তার অপারেশন হয়। এরপর গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেলে তিনি মারা যান। অথচ তার নাম মামলার আসামির তালিকায় দেখে আমরা হতবাক।’

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, ‘এমন কিছু হয়ে থাকলে তদন্ত করে মৃত ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া হবে।

এদিকে মামলায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফাকে প্রধান আসামি করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের আরো ৫২০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মন্তব্য

ভোটার তালিকা যত নির্ভুল হবে, নির্বাচন তত সুষ্ঠু হবে : ইসি মাছউদ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
শেয়ার
ভোটার তালিকা যত নির্ভুল হবে, নির্বাচন তত সুষ্ঠু হবে : ইসি মাছউদ
ছবি: কালের কণ্ঠ

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেছেন, একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত। ভোটার তালিকা যত নির্ভুল হবে, নির্বাচন তত সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যেসব প্রস্তুতি দরকার, কমিশন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটকেন্দ্র বা ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিদর্শন সেই প্রস্তুতিরই অংশ।

সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে সবার সহযোগিতা দরকার।

শনিবার (২২ মার্চ) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

ইসি মাছউদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময়েই চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার কমিশন তা করছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ মির্জাপুরে পৌঁছালে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহাবুব হাসান, মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম, মির্জাপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এইচ এম রেজওয়ান মাহাবুব সিদ্দিকী, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম প্রামানিক, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ূর রহমান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তার, মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন, বানাইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকী প্রমুখ তাকে স্বাগত জানান।

নির্বাচন কমিশনার বানাইল ইউপি কার্যালয়ে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে সেখানে তিনি ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমে নিয়োজিতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

মন্তব্য

রোহিঙ্গা নৌকাডুবি : গুজব ও অপপ্রচারের ব্যাখ্যা দিল বিজিবি

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
শেয়ার
রোহিঙ্গা নৌকাডুবি : গুজব ও অপপ্রচারের ব্যাখ্যা দিল বিজিবি
সংগৃহীত ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। বিজিবির ভাষ্যমতে, শনিবার (২২ মার্চ) ভোরে নৌকাডুবির সময় পার্শ্ববর্তী স্থানে অবস্থান করা বিজিবির সদস্যরা স্থানীয় একটি নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযানে গেলে বিজিবির এক সদস্যও নিখোঁজ হন। রোহিঙ্গা নৌকা ডুবির ঘটনায় ২৫ জন রোহিঙ্গা জীবিত উদ্ধার এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত চারজনের মৃতদেহ ভেসে আসে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রোহিঙ্গাদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।

এদিকে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় এক বিজিবি সদস্য নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপপ্রচার ও গুজব ছড়িয়েছে একটি চক্র। বলা হচ্ছে ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নাফ নদীতে মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজিবির দৃষ্টি আকর্ষণ হলে বিজিবির পক্ষ থেকে প্রেরিত এক বার্তায় এ ধরনের গুজব ও অপপ্রচারের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

বিজিবি প্রচারিত বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

প্রকৃত ঘটনা হলো- ২২ মার্চ শনিবার ভোর রাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়া ঘাটের নিকট দিয়ে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকা অবৈধ উপায়ে সাগরপথে বাংলাদেশে আসার সময় প্রবল স্রোতের কারণে নৌকাটি উল্টে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পার্শ্ববর্তী স্থানে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা তৎক্ষণাৎ স্থানীয় জেলেদেরকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের জন্য ছুটে যায় এবং ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকার্য চলাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় এবং অন্ধকার রাতের কারণে একজন বিজিবি সদস্য সম্ভবত পা পিছলে পড়ে সমুদ্রে নিখোঁজ হয়।’

বিজিবি আরো জানায়, ‘পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া নৌকাসহ ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি।

সম্পূর্ণ দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং বর্তমানে নিখোঁজ একজন বিজিবি সদস্যসহ অন্যান্য রোহিঙ্গাদেরকে উদ্ধার/সার্চ কার্যক্রম সর্বান্তকরণে অব্যাহত রয়েছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ