কক্সবাজারের টেকনাফে হামলা ও অপহরণের ঘটনায় ছয় মাস ধরে ঘরছাড়া কাতারপ্রবাসী জাকের আহমদের পরিবার। এতে তার পাঁচ সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে।
জাকের আহমদের স্ত্রী নাজমা কাওসারের অভিযোগ, তার স্বামীর আপন ভাই ছিদ্দিক আহমদ ও তার ছেলে রাসেলসহ একদল সন্ত্রাসী টাকার দাবিতে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ভোররাতে তারা দা-কিরিচ দিয়ে তাকে ও তার বৃদ্ধ শ্বশুর নুর আহমদকে কুপিয়ে আহত করে এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করে।
একপর্যায়ে তার সপ্তম শ্রেণির মেয়ে সুরাইয়া জান্নাতকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশি সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নাজমা কাওসার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এরপর থেকেই প্রতিপক্ষের হুমকির মুখে পরিবার নিয়ে তিনি অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হন।
বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় তার সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, মামলা করার পর নাজমা কাওসার নিজ ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ৮ ডিসেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সুরাইয়াকে উদ্ধারে সহায়তা করায় তার স্কুলের প্রাক্তন সভাপতি সাইফুল কাদের এবং হামলার পর চিকিৎসায় সহায়তা করায় স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুস সালামকেও সন্ত্রাসীরা হুমকি দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে তারাও থানায় জিডি করেন।
প্রবাসী জাকের আহমদ জানান, হামলা ও অপহরণের ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
বিষয়টি তিনি কাতারে বাংলাদেশ কাউন্সিল উইংয়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর তার সন্তানরা স্কুলে যেতে পারছে না।
এ বিষয়ে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শোভন কুমার সাহা বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। ভিকটিম উদ্ধার হয়েছে। রাসেলকে ধরতে অভিযান চলছে।
দ্রুতই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে। প্রবাসীর পরিবার চাইলে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ছিদ্দিক আহমদ আটক থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, তার ছেলে সুরাইয়াকে অপহরণ করেছে। তবে তিনি দাবি করেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। পরিবারের সদস্যদের হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।