ময়মনসিংহে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
শেয়ার
ময়মনসিংহে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ২
সংগৃহীত ছবি

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুজন মারা গেছেন। রবিবার (২৩ মার্চ) নতুন বাজার খেলার মাঠসংলগ্ন স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরো একজন আহত হন।  

নিহতরা হলেন আহমদপুর গ্রামের লিটন খানের ছেলে অনন্ত খান (২২) এবং ময়মনসিংহ সদরের চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে রাসেল মিয়া (২৫)।

 

মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, রাসেল মুক্তাগাছায় মোটরসাইকেলের গ্যারেজে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। তিনি অনন্তকে নিয়ে মোটরসাইকেলটি ট্রায়াল দেওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অনন্ত মারা যান। 

আরো পড়ুন
‘বিএনপির কেউ চাঁদাবাজি করলে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন’

‘বিএনপির কেউ চাঁদাবাজি করলে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন’

তিনি আরো জানান, রাসেলসহ সড়কে থাকা আরো একজন আহত হন।

তাদের মধ্যে রাসেলকে গুরুতর অবস্থায় আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন মারা যান তিনি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঈদযাত্রা

উত্তরের পথে ডাকাতির আশঙ্কা, প্রতিরোধে পুলিশের ব্যবস্থা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
উত্তরের পথে ডাকাতির আশঙ্কা, প্রতিরোধে পুলিশের ব্যবস্থা
ছবি: কালের কণ্ঠ

ঈদযাত্রায় সিরাজগঞ্জ অংশের ৪৫ কিলোমিটার মহাসড়ক সচল করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে যানবাহন চলাচলে তেমন বেগ পেতে হবে না চালকদের। তবে মহাসড়কে অনুমোদন বিহীন যানবাহন চলাচল এবং পার্শ্ব রাস্তার যানবাহন মহাসড়ক অতিক্রম করার সময় ঝামেলা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাতের বেলায় ডাকাত আতঙ্কে ভুগছেন যাত্রী ও চালকরা।

তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত রয়েছে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ।  

জানা গেছে, যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যানবাহন চলাচল করে থাকে। এসব যানবাহন সেতু অতিক্রম করার পর হাটিকুমরুল গোলচত্বরে গিয়ে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। তবে পাবনা ও রাজশাহী মহাসড়কে যানবাহনের চাপ তুলনামূলক কম থাকলেও অধিকাংশ চাপ থাকে বগুড়ামুখী মহাসড়কে।

এই মহাসড়ক চার লেনে উন্নতিকরণের কাজ অনেকটা শেষের পথে। ঈদযাত্রায় বেশ কিছু উদ্যোগও নিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা

আরো পড়ুন
রান্নার স্বাদ-ঘ্রাণ দুটিই বাড়াবে এই পাতা

রান্নার স্বাদ-ঘ্রাণ দুটিই বাড়াবে এই পাতা

এ বিষয়ে সাসেক (২) প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, 'ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে ঝাঐল ওভারপাস খুলে দেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে সলঙ্গা, ঘুড়কা, সোনকা ও মির্জাপুরের আন্ডারপাস। এ ছাড়া ঢাকা থেকে বগুড়াগামী যানবাহনগুলোর সুবিধার্থে হাটিকুমরুল গোলচত্বরে চারটি পার্শ্ব রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।
আশা করছি, ঈদযাত্রায় যানবাহনগুলো নিরাপদে চলতে পারবে।'  

বাসচালক মানিক মিয়া বলেন, এবার মহাসড়ক অনেক ভালো আছে। তবে তিন চাকার যানবাহনসহ অবৈধ যানবাহনগুলোর চলাচল বন্ধ করতে হবে। এদের কারণেই মহাসড়কে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে এবং দ্রুতগামী বাসের গতি কমে যায়। এ ছাড়া পার্শ্ব রাস্তা থেকে আসা যানবাহনগুলো মহাসড়ক অতিক্রম করার সময় যানজট লেগে যায়।

এসব বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি থাকতে হবে।  

আরো পড়ুন
৫০ বছর মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষার পর অবশেষে মুক্তির পালা

৫০ বছর মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষার পর অবশেষে মুক্তির পালা

বাসচালক মুক্তার হোসেন বলেন, রাতের বেলায় মহাসড়কে যানবাহনে ঢিল দিয়ে গাড়ি থামিয়ে ও রাস্তায় তাঁরকাটা ফেলে চাকা প্যাংচার করে ডাকাতি করা হয়ে থাকে। যা ঈদযাত্রায় আরো বেড়ে যেতে পারে। এ জন্য পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে।

যমুনা সেতুর পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনারুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের নিরাপত্তায় সেতুর পশ্চিম গোলচত্বর থেকে নলকা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এলাকায় থানার ৬০ জন পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি অতিরিক্ত ৮০-৮৫ জন সদস্য দিনে ও রাতে দায়িত্ব পালন করবে। দুই কিলোমিটার পরপর পুলিশের কড়া অবস্থান থাকবে। এ ছাড়া মটরসাইকেলের টিম মহাসড়কে টহল দেবে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে।

যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত পুলিশের সহায়তা নেওয়ার জন্য চালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্জন স্থান, ফাঁকা ও অন্ধকার জায়গা টার্গেট করে ডাকাতরা অপরাধ করে থাকে। এক্ষেত্রে বডিতে ঢিলের শব্দ শুনলেই রাস্তায় গাড়ি থামানো যাবে না।

আরো পড়ুন
মহাখালীতে সাংবাদিকের ওপর শ্রমিকদের হামলা

মহাখালীতে সাংবাদিকের ওপর শ্রমিকদের হামলা

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, নলকা থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এলাকায় ১৬টি স্থানকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এসব স্থানে হাইওয়ে পুলিশের টিম ২৪ ঘণ্টা স্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি মোবাইল টিম ও মোটরসাইকেলের টহল অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া যানজট এড়াতে হাটিকুমরুল গোলচত্বরে বগুড়ামুখী রাস্তায় বাঁশ দিয়ে চারটি লেন আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের নিরাপত্তায় থানা পুলিশের পাশাপাশি ৫০ জন এপিপিএন সদস্য ও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা যুক্ত হবেন।    

রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, 'মহাসড়কের চান্দাইকোনা থেকে সিরাজগঞ্জের সীমান্তবর্তী বগুড়ার শেরপুর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মহাসড়কে অবস্থান করবে। এ জন্য থানার ৩০ জনের পাশাপাশি পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত আরো অন্তত ৩০ জন পুলিশ সদস্য যুক্ত হবেন। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও ভোগান্তি মুক্ত হবে।'

আরো পড়ুন
২০২৭ সাল পর্যন্ত সিমন্সই বাংলাদেশের কোচ

২০২৭ সাল পর্যন্ত সিমন্সই বাংলাদেশের কোচ

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, ২৬ মার্চ থেকে ৬০০ পুলিশ সদস্য পোশাক এবং সাদা পোশাকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টা মহাসড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে স্থায়ীভাবে অবস্থান নেবে। মোবাইল টিমের পাশাপাশি থাকবে মোটরসাইকেলের টহল। বেশ কিছু স্থানে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। প্রয়োজনে ড্রোন ক্যামেরাও ব্যবহার করা হবে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, অনুমোদনবিহীন যানবাহনগুলোকে কোনোক্রমে মহাসড়কে চলতে দেওয়া হবে না। ফিডার রোডগুলোর (পার্শ্ব রাস্তা) নিয়ন্ত্রণে প্রবেশপথে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আশা করছি, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতের পাশাপাশি মহাসড়কের চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি রোধ করা সম্ভব হবে।    

হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া রিজিয়নের পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. শহিদ উল্লাহ বলেন, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের তিনটি মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের প্রায় ৫০০ পুলিশ সদস্য পোশাক এবং সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। থাকবে মোবাইল ও মোটরসাইকেলের টহল টিম। অত্যাধুনিক ড্রোন ক্যামেরায় দিনে ও রাতে মহাসড়কের সবকিছু মনিটরিং করা হবে। এ ছাড়া চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইরোধে মহাসড়কের ১৮টি পয়েন্টে গোপন সার্ভিলেন্স সিস্টেম চালু করা হয়েছে। হাটিকুমরুল গোলচত্বরে স্থাপিত ওয়াচ টাওয়ার থেকে সব কিছু মনিটরিং করা হবে।  

আরো পড়ুন
টমেটো ভর্তা আর ভাত দিয়েই ইফতার-সেহেরি, কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বিধবা সালেহা

টমেটো ভর্তা আর ভাত দিয়েই ইফতার-সেহেরি, কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বিধবা সালেহা

তিনি আরো বলেন, মহাসড়কে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনটি রেকার এবং দুটি অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত হবে।

যমুনা সেতুর প্রস্তুতি সর্ম্পকে সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, সাধারণত প্রতিদিন যমুনা সেতু দিয়ে গড়ে ২০-২১ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। ঈদযাত্রায় তা বেড়ে দ্বিগুণ বা তারও বেশি হয়ে থাকে। সেতু দিয়ে সার্বক্ষণিক টোল চালু রাখার চেষ্টা করা হবে। এবার সেতুর দুই প্রান্তে ৯টি করে বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হবে। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের জন্য দুটি করে আলাদা বুথ থাকবে।

আরো পড়ুন
শ্রমিক দল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা, গ্রেপ্তার ৬

শ্রমিক দল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা, গ্রেপ্তার ৬

মন্তব্য

কালীগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
শেয়ার
কালীগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪

গাজীপুরের কালীগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নেয়ামুল ইসলাম (২২) নামে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৪ জন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় নোয়াপাড়া-দালান বাজার আঞ্চলিক সড়কে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নেয়ামুল উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের বাঙ্গালগাঁও এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে।

তিনি সৌদি প্রবাসী ছিলেন।

আহতরা হলেন, নেয়ামুলের বোন নাদিয়া (১৮) ও মামাতো ভাই মাশফিক (১২)। এ ছাড়া  অপর মোটরসাইকেলে থাকা কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক কলেজের ছাত্র উপজেলার বাহাদুরসাদী এলাকার হাবিউল্লাহর ছেলে রিয়াদ (১৯) এবং পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজের ছাত্র জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে আল আমিন (১৯) গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নেয়ামুলের ছোট বোন ও মামাতো ভাইকে নিয়ে বিকেলে মোটরসাইকেল চালিয়ে নোয়াপাড়া সড়ক দিয়ে দালান বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন।

সন্ধ্যায় দালান বাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা রিয়াদ ও আল আমিনের মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে নেয়ামুল গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে নেয়ামুল মারা যায়। আহত নাদিয়া ও  মাশফিককে গাজীপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গুরুতর আহত রিয়াদ ও আল আমিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা পাঠানো হয়েছে। 

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।  

মন্তব্য

শ্রমিক দল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা, গ্রেপ্তার ৬

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা প্রতিনিধি
শেয়ার
শ্রমিক দল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা, গ্রেপ্তার ৬
সংগৃহীত ছবি

কুমিল্লার মুরাদনগরে সিএনজিচালিত আটরিকশায় থেকে চাঁদা না পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদেরকে মারধর এবং থানায় হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে দুটি মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারা হলেন- বিএনপি কর্মী উপজেলার বাখর নগরপাড় গ্রামের মৃত রুশন আলীর ছেলে কালাম (৪৮), রহিমপুর গ্রামের মাহাবুব হোসেনের ছেলে মো. হোসেন (২২), নবীপুর গ্রামের মৃত জানু মিয়ার ছেলে মো. ওয়াহাব আলী (৫৫), মুরাদনগর উত্তর পাড়ার আবুল হাশেমের ছেলে আবুল হাসান জুয়েল (৪২), পরমতলা গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মহসিন সরকার (৩৮) ও রহিমপুর গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে মো. জসীম উদ্দিন (৫৮)।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক উবায়দুল সিদ্দিকী বলেন, গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) ইফতারের আগে তিনিসহ তিনজন একটি অটোরিকশায় আকবপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন।

অটোরিকশাচালক মুরাদনগর হয়ে সরাসরি নবীনগর রাস্তায় না গিয়ে কোম্পানীগঞ্জ হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কারণ জানতে চাইলে চালক বলেন, ‘ওই দিক দিয়ে গেলে ৫০ টাকা জিপি (চাঁদা) দিতে হবে।’ তখন তিনি চালককে সোজা পথে যেতে বলেন। কিন্তু নবীনগর সড়কের মুখেই চালককে চাঁদা দেওয়ার টোকেন আছে কি না জিজ্ঞেস করা হয়।
চালক টোকেন নেই জানালে কয়েকজন তাকে মারধর শুরু করেন। যাত্রীরা নেমে মারধরের কারণ ও চাঁদাকে তুলতে বলেছে জানতে চাইলে তারা হামলা করেন। চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে এসে তাদের রক্ষা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আবুল কালামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সন্ধ্যার পর হামলার ঘটনায় অভিযোগ করতে তারা থানায় যান।

আরো পড়ুন
টমেটো ভর্তা আর ভাত দিয়েই ইফতার-সেহেরি, কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বিধবা সালেহা

টমেটো ভর্তা আর ভাত দিয়েই ইফতার-সেহেরি, কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বিধবা সালেহা

 

পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানান, সোমবার উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডে চাঁদা না দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলকারীরা। এ সময় আন্দোলনকারীদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। পরে রাত ৮টায় হামলায় শিকার নেতাকর্মীরা মুরাদনগর থানায় অভিযোগ করতে গেলে যুবদল নেতা মাসুদ রানা ওরফে গুছা মাসুদের নেতৃত্বে ৭০/৮০ জনের একটি দল পূনরায় থানার ভেতরেই আরেক দফা হামলা করে। এ সময় থানা কম্পাউনডারের দরজা-জানালার গ্লাস ভাঙ্গাসহ ও হাজত খানার কেচি গেইট ভেঙে আটক এক আসামিকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

হামলাকারীদের বাধা দিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

এ ঘটনায় সোমবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা বাঙ্গরা বাজার থানা এলকার আকুবপুর গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে প্রবাসী আবুল ফয়সাল (৩৫) বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ৩০ জনসহ অজ্ঞাত আরো ৭০/৮০ জনকে আসামী করে চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগে মামলা করেন। একইভাবে সরকারি কাজে বাধা ও থানায় হামলা করার অভিযোগে বিএনপির উপজেলা শাখার সভাপতি মহি উদ্দীন অঞ্জনসহ ৩১জন বিএনপি নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরো ৭০/৮০ জনকে আসামি করে এসআই আক্কাস আলী বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছেন।

আরো পড়ুন
আলোচিত-১০ (২৫ মার্চ)

আলোচিত-১০ (২৫ মার্চ)

 

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দীন অঞ্জন বলেন, থানার ভেতরের ঘটনার সময় আমি তখন সেনাবাহিনীর সাথেই উপস্থিত ছিলাম। তখন আমাদেরকে বলা হয়েছিল মামলা হবে না, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর জানতে পারলাম এ ঘটনায় পুলিশ আমাকেই অভিযুক্ত করে মামলা করেছে। আমিও এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করছি।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, চাঁদা দাবির অভিযোগে এক যুবককে আটকের পর বিএনপি নেতারা তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এমনকি প্রতিবাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা মামলা করতে চাইলে তাতেও তারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তারা থানায়ও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে এ ঘটনায় মামলা করা হলে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারের পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য

টমেটো ভর্তা আর ভাত দিয়েই ইফতার-সেহেরি, কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বিধবা সালেহা

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
শেয়ার
টমেটো ভর্তা আর ভাত দিয়েই ইফতার-সেহেরি, কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন বিধবা সালেহা
সালেহা বেগম। ছবি: কালের কণ্ঠ

‘জীবনডা আর চলে না। ঘরে ছেড়িডাও কাইলা (রোগ)। হের জামাই মইর‌্যা যাওনের পর আমি এক বিধবা আরেক বিধবারে লইয়া চলতাছি। রোজাডা পাড় করতাছি খাইয়া না খাইয়া।

পাড়াত না গেলে (ভিক্ষা) তো ওবাশ (উপবাস) থাহন লাগে। টমেটো হস্তা (সস্তা) দেইখ্যা হেইডা ভর্তা কইর‌্যা ভাত দিয়া ইফতার করি ও সেহেরির সময় ভাত খাই। পুরা রোজাডা এইবাই চলছে। ঈদের আগে পাড়ার অনেকেই চাউল আনতাছে, আমি পাই না।
’ 

এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন ষাটোর্ধ্ব সালেহা বেগম। মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশল্লী ইউনিয়নের পালাহার গ্রামের এক গ্রামীণ সড়কে দেখা মেলে তাঁর। দুপুর ২টার দিকে ভিক্ষা করে অন্য এলাকায় যাচ্ছিলেন তিনি।

স্বামী মারা গেছেন ২০ বছর আগে।

একমাত্র মেয়ে মনোয়ারারও স্বামী মারা যায় ছয় বছর সংসারের পর। এরপর থেকেই সহায়সম্বলহীন সালেহা মেয়েকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কিছুদিন মেয়েটি অন্যের বাড়িতে কাজ করলেও দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন শয্যাশায়ী। প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে না পারায় তার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

নিজেও নানা রোগে ভুগছেন সালেহা।

একটা বিধবার কার্ড থাকলেও অনেক সময় টাকা কেউ নিয়ে যায়। তখন আরও বিপদে পড়তে হয়। বয়স ও অসুস্থতার কারণে আগের মতো পাড়া ঘুরতে পারেন না। দুপুরের আগেই যা পান, তা নিয়েই বাড়ি ফিরেন। রোজার শুরু থেকে খাবারের অভাবে শরীর আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

তিনি আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘বাজান, আপনের কাছে একটা দাবি—আমার ছেড়িডারে একটা বিধবার কার্ড কইর‌্যা দিলে মইর‌্যাও শান্তি পাইয়াম।’

সালেহার অভিযোগ, বিত্তশালীরাও সরকারি সুযোগসুবিধা পেলেও তিনি বঞ্চিত। ঈদ উপলক্ষে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল বিতরণ হলেও তিনি কোনো স্লিপ না পাওয়ায় নিতে পারেননি। কারও কাছে গিয়েও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এসব কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আকাশের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘আছেন হেইল্যা। এরপরও বেহেই ভালা থাহোক—আমার তো জীবন শেষের দিকেই।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ