সাভারে আবারও ‘ইতিহাস পরিবহন’ নামের একটি যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীবেশী ডাকাত দলের সদস্যরা বাসে থাকা যাত্রীদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ব্যাংক টাউন এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাসযাত্রী টুনি বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এর আগে স্থানীয়রা বাসের চালক ও সহকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
আটককৃতরা হলেন- বাসের চালক রজব আলী (৩০) ও সহকারী এমদাদুল হক (৪০)। এ ছাড়া ডাকাতির ঘটনা ঘটা ইতিহাস পরিবহনের বাসটিও আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে রাজধানীর মিরপুরের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা ইতিহাস পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কর্ণপাড়া ব্রিজ (ব্যাংক টাউন) এলাকায় পৌঁছালে বাসটির চালকসহ আরো ৪ জন ব্যক্তি চলন্ত বাসে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়।
পরে ডাকাতরা সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় বাসটি থামিয়ে রেখে চলে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাসের চালক ও সহকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
বাসযাত্রী সুমন সরকার বলেন, আমি চন্দ্রা থেকে বাসে উঠি। বাসটি উলাইল এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন ছুরি নিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে।
এ সময় আমার কাছে থাকা ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। এ ছাড়াও অন্য যাত্রীদের স্বর্ণালঙ্কার ও মালামাল লুট করে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরকারী বাসযাত্রী টুনি জানায়, বিকেলে মিরপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে চন্দ্রা থেকে ইতিহাস পরিবহন লিমিটেড গাড়িতে উঠে সাভারের কর্নপাড়া ব্রিজের সামনে আসলে গাড়ির চালকসহ আরো্ ৪ জন চলন্ত গাড়িতে আমার গলায় সুইস গিয়ার ঠেকিয়ে গলায় থাকা চার আনা স্বর্ণের একটি চেইন ও গাড়ির অন্যান্য যাত্রীদেরকে ভয়ভীতি ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণসহ আরো মূল্যবান জিনিসপত্র জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে বাস থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পালিয়ে চলে যায়।
তবে আটক বাসচালক রজব আলী বলেন, বাসে ওঠা কয়েকজন ব্যক্তি হঠাৎ অস্ত্র বের করে যাত্রীদের জিম্মি করে মালামাল লুট করে। পরে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা বাসে ভাঙচুর চালায়।
এসময় আমি ও সহকারী এমদাদুল হক সড়কের পাশে লুকিয়ে পড়ি।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, বাসে ডাকাতির ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত শুরু করেছি এবং আশা করছি খুব শিগগিরই অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব। এ ছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসটির চালক ও সহকারীকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, এর আগেও একই স্থানে এবং একই স্টাইলে আরো ৭ বার চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর কয়েকটি ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক কিংবা ডাকাতি করা মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি।