জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই সপ্তাহ আগে স্বামীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। এ অবস্থায় সোমবার (০৭ এপ্রিল) তার স্ত্রীকে ঘরে ঢুকে হত্যা করা হলো। এসময় পিটিয়ে জখম করা হয় তাদের ১৪ বছরের সন্তানকে।
জমি নিয়ে বিরোধ
স্বামীকে কোপানোর ২ সপ্তাহ পর ঘরে ঢুকে স্ত্রীকে হত্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের পুঁথাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার ভোরে ওই গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ময়না বেগমকে (৪৬) হত্যা করে তারই স্বজনরা। এর দুই সপ্তাহ আগে মানিক মিয়ার উপর হামলা করা হয়। সোমবারের হামলায় তাদের ছেলে মহিমও (১৪) আহত হয়।
নিহতের পরিবার জানায়, মানিক মিয়ার সঙ্গে তার আপন ভাই ও চাচাতো ভাইদের জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে সোমবার ভোরে মানিক মিয়ার ঘরে হামলা চালিয়ে গবাদি পশু লুট করা হয়। এতে মানিক মিয়ার স্ত্রী ময়না ও ছেলে মহিম বাধা দিতে গেলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়না বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই নারীর লাশের ময়নাতদন্ত জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পর্কিত খবর

কৃষকের সাফল্য, ২১ কেজি বীজে ২২১ মণ ধান!
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

চলতি বোরো মৌসুমে বাগেরহাটের ফকিরহাটে চার বিঘা জমিতে মাত্র ২১ কেজি বীজ লাগিয়ে ২২১ মণ ধান উৎপাদন করেছেন কৃষক মোস্তফা হাসান। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক জাত ব্রি-১০৮ ধান চাষে এ অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন তিনি। উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে সোনালি বর্ণের এই ধান।
জানা গেছে, ইউটিউবের মাধ্যমে ধানের বীজ সম্পর্কে জানতে পারেন কৃষক মোস্তফা হাসান। পরে শেরপুর থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে ২১ কেজি বীজ ধান সংগ্রহ করেন। চার বিঘা জমিতে কিষান খরচ, জমি চাষ, সার, ওষুধ ও সেচ খরচ মিলে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান তিনি। সার ব্যবস্থাপনা কম লাগায় ও বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় অধিক লাভের আশা প্রকাশ করছেন।
ধান ইতোমধ্যে পেকে গেছে। এক শতক জমির ধান নমুনা কর্তনে ৪৫ কেজি ধান পেয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে প্রতি মণ ধানের মূল্য ১ হাজার ৬শ টাকা। ২-১ দিনের মধ্যে বাকি ধান কর্তন করবেন বলে জানান মোস্তফা হাসান।
ইতোমধ্যে ফকিরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বীজের জন্য ২০ মন ধানের চাহিদার কথা জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন।
উপজেলার বাহিরদিয়া ব্লকে কৃষক মোস্তফা হাসানের ধান খেতে গিয়ে দেখা গেছে, আশে-পাশের অনেক কৃষক আগ্রহ নিয়ে ধান দেখতে এসেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাসহ কৃষি বিভাগের লোকজন কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নয়ন সেন বলেন, ‘সোনালি রঙের ব্রি-১০৮ জাতের ধানটি এই উপজেলায় প্রথম চাষ হয়েছে। সম্ভবত জেলায়ও প্রথম হবে।
কৃষক মোস্তফা হাসান জানান, ৪ বিঘা ৫ শতক জমিতে ব্রি-১০৮ ধান চাষের সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ হবে। এ অঞ্চলে প্রথম চাষেই সাফল্য পাওয়ায় অনেক চাষি এটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করতে চান তিনি। কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ব্রি-১০৮ হলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের আবিষ্কৃত সর্বাধুনিক জাতের ধান। এ ধানটি অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি উৎপাদন হয়। প্রতি গোছায় গড় কুশির সংখ্যা ১৬/১৭টি। দানার পুষ্টতা শতকরা ৮৮.৬ ভাগ। চালে প্রটিনের পরিমাণ ৮.৮ ভাগ যা অন্যান্য চালের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্যসম্মত।’
উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ধানটি ছড়িতে দিতে এই খেত থেকে সরকারিভাবে বীজ সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

চলন্ত মাইক্রোবাসে আগুন, প্রাণ বাঁচল পাঁচজনের
চলন্ত মাইক্রোবাসে আগুন

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে একটি চলন্ত মাইক্রোবাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে কুমিল্লা থেকে ঢাকামুখী লেনের নিমসার বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় চালকের দক্ষতার কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় মাইক্রোবাসে থাকা পাঁচজন যাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর দেড়টার দিকে মহাসড়কের মধ্যেই চলন্ত অবস্থায় মাইক্রোবাসটিতে আগুন লাগে।
গাড়িটির চালক মো. সজিব মিয়া জানান, ক্যান্টনমেন্টের সৈয়দপুর এলাকার একটি সিএনজি পাম্প থেকে গ্যাস নিয়ে পাঁচজন যাত্রীসহ চান্দিনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তিনি। নিমসার বাজার এলাকায় আসলে ইঞ্জিনের গিয়ার বক্সের মধ্যে প্রথমে আগুন দেখতে পান তিনি।
যাত্রীরা নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আগুন পুরো গাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে চোখের সামনে গাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
খবর পেয়ে চান্দিনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চালক সজীব আরো জানান, গাড়িটির মালিক মাধাইয়া এলাকার আব্দুল আলিম। আজকেই প্রথম তিনি গাড়িটি নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাসের লিকেজের কারণেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ি পরিদর্শক সাইদুল ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি জানান, আগুনে গাড়িটি সম্পূর্ণ ভষ্মীভুত হয়েছে, গাড়িটির কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই। গাড়ির মালিক ঘটনাস্থলে আসলে তাকে গাড়িটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম
অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন, তিন দিনে ৭০ বিঘা ফসলি জমি বিলীন
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের উলিপুরে অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে নদ তীরবর্তী মানুষজন। গত ৩ দিনে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসূলপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ৭০ বিঘা ফসলি জমি, গ্রামীণ সড়ক ও সাতটি বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনের ফলে হুমকিতে রয়েছে রসূলপুর মার্কাজ জামে মসজিদ, রসূলপুর আলহাজ্ব রোস্তম আলী নূরাণী হাফিজিয়া মাদরাসা, রসূলপুর ঈদগাহ মাঠসহ বসতঘর।
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরেই বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের শিকার বেগমগঞ্জ, সাহেবের আলগা ও হাতিয়া ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের মানুষ। বছরের পর বছর নদীভাঙনে কৃষিজমি, ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেকেই অসহায় দিন কাটাচ্ছেন। এতদিন ভাঙন হতো বর্ষা মৌসুমে। তবে এখন নদী ভাঙছে শুষ্ক মৌসুমেও।
ভাঙনকবলিত রসূলপুর এলাকার মিজানুর রহমান, নায়েব আলী, সাহেব আলী, হেলাল উদ্দিন, আব্দুর রশিদ, রায়হান মিয়া, নুর আলমসহ অনেকের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর দিক পরিবর্তন হয়েছে। ফলে অসময়ে নদী ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে একদিন বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, গত তিন দিনে আমার বাড়িসহ ৭ জনের বাড়ি ও প্রায় শত বিঘা জমি ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এখন শুকনো মৌসুম, এই সময়ে ভাঙনরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে দাবি করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙনরোধে সেখানে ৫০০ জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাজ চলমান রয়েছে।

সংঘর্ষে নিহত, শাহজাদপুরে বিএনপির ২ নেতার পদ স্থগিত
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নের বড়ধুনাইল গ্রামে সরকারি খাস জমি দখল ও দফা দফায় সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের এক ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির দুই নেতার পদ স্থগিত ও যুবদল এবং ছাত্রদলের দুই নেতার পদ স্থগিতের জন্য জেলা যুবদল ও ছাত্রদলকে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়াও ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পদ স্থগিত হওয়া নেতারা হলেন- রুপবাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হালিম সেখ।
অভিযুক্ত যুবদল ও ছাত্রদল নেতারা হলেন- রুপবাটি ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সেখ ও একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি ইনজাজাম সেখ।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ সুইটকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক নওশাদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহজাদপুর উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নে প্রতি বছর সরকারি জমি দখল নিয়ে মারামারি হয়ে থাকে। এবারও সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
বড়ধুনাইল গ্রামে ১৫০ বিঘা সরকারি খাসজমি দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র জাফর গ্রুপ ও রাজ্জাক গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এরই জের ধরে শনিবার ও রবিবার দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে রাজ্জাক গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষ জাফর গ্রুপের লোকজনের অন্তত ১০টি বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ উঠেছে।