মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার, প্রতিশোধ নিতে ধর্ষণ মামলা

রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার, প্রতিশোধ নিতে ধর্ষণ মামলা
পারভীন বেগম। ছবি : সংগৃহীত

মাদারীপুরের রাজৈরে মানবপাচার মামলার আসামি পারভীন বেগম (৪৭) নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (৬ এপ্রিল) রাতে অভিযান চালিয়ে পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতিশোধ এবং মামলাটি ধামাচাপা দিতে সাক্ষীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন পারভীন।

পারভীন শাখারপাড় গ্রামের রেজাউল মোল্লার স্ত্রী।

তার বিরুদ্ধে একাধিক মানবপাচারের মামলা রয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, শাখারপাড় গ্রামের শাহ আলম মোল্লার ছেলে নূর আলম মোল্লাকে ১৫ লাখ টাকা চুক্তিতে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখান পারভীন ও তার স্বামী রেজাউল মোল্লা। গত বছরের ১৫ জানুয়ারি তাদের ছেলে সাকিব মোল্লার মাধ্যমে নূরকে লিবিয়ার ত্রিপলিতে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন করে ধাপে ধাপে ১৭ লাখ আট হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে পারভীন ও তার চক্রের লোকজন।

এরপর আরো মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা চালালে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাহায্যে মাফিয়াদের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। 

আরো পড়ুন
বিয়ের ১৫ বছর পর ৪ সন্তান প্রসব

বিয়ের ১৫ বছর পর ৪ সন্তান প্রসব

তারা আরো জানায়, ১৭ জুলাই নূরকে আহত অবস্থায় দেশে পাঠান দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় ছেলের চিকিৎসা শেষে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি মাদারীপুর বিজ্ঞ মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা রাশিদা বেগম। 

তারা জানায়, এ মামলায় পারভীনকে প্রধান করে তার স্বামী, ছেলে ও আরেক মানবপাচারকারী শাহীন মিয়াকে আসামি করা হয়।

খবর জানতে পেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান পারভীন ও রেজাউল। এর প্রতিশোধ এবং মামলাটি ধামাচাপা দিতে ২০ মার্চ মানবপাচার মামলার ৩ ও ৪ নম্বর সাক্ষী বখতিয়ার মোল্লা ও শাহ জালাল মোল্লাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার আবেদন করেন পারভীন।

এর আগে অপর এক ভুক্তভোগী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় গ্রামের আলী শেখের স্ত্রী আচমিনা আক্তার (২৭) বাদী হয়ে মাদারীপুর আদালতে গত বছরের ১১ অক্টোবর একই অভিযোগে পারভীনসহ চারজনকে আসামি করে মানবপাচার মামলা করেন। তার বোন-জামাই সাইদুর ও চাচা সবুজকে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়ার মাফিয়া ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করে কয়েক ধাপে ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে পারভীন চক্র।

আরো পড়ুন
সালমান বাটের আহ্বান : কঠিন সময়ে বাবর-রিজওয়ানের পাশে দাঁড়ান

সালমান বাটের আহ্বান : কঠিন সময়ে বাবর-রিজওয়ানের পাশে দাঁড়ান

এই দুই মামলার আসামিদের মধ্যে চানপট্টি গ্রামের সুমন খালাসী (৩০) লিবিয়া, শাহীন মিয়া লিবিয়া, সাকিব মোল্লা ইতালি এবং রেজাউল মোল্লা, খালেদা আক্তার খাফিজা (২০) ও উর্মি বেগম (২৫) বাংলাদেশে পলাতক রয়েছে।

ভুক্তভোগী নূরের বোন ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘১৫ লাখ টাকায় আমার ভাইকে ইতালি নেওয়ার কথা বলেছিলেন পারভীন। কিন্তু তার ছেলের মাধ্যমে লিবিয়ায় নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৭ লাখ আট হাজার মুক্তিপণ নিয়েছে। তারপরও আমার ভাইকে মুক্তি দেননি তারা। একপর্যায়ে লিবিয়ার ত্রিপলিতে থাকা আমাদের পরিচিত লোকের মাধ্যমে দূতাবাসে খবর পাঠাই। পরে তারা পারভীনের মাফিয়াদের কাছ থেকে উদ্ধার করে ভাইকে দেশে পাঠিয়েছে। তারা এত নির্যাতন করেছে যে আমার ভাই এখন পর্যন্ত ঠিকমতো হাঁটতে পারে না।' 

আরো পড়ুন
হামে দ্বিতীয় মার্কিন শিশুর মৃত্যু, আক্রান্ত ৬৫০

হামে দ্বিতীয় মার্কিন শিশুর মৃত্যু, আক্রান্ত ৬৫০

পারভীনসহ সব দালালদের শাস্তি চেয়ে তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে মামলা করার আগে দালালরা আমাদের অনেক হুমকি দিয়েছে। কারণ এলাকায় তারা অনেক প্রভাবশালী। মামলা ফেরাতে না পেরে প্রতিশোধ নিতে আমাদের মামলার দুই সাক্ষীসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দিয়েছে তারা।'

মানবপাচার মামলার এক সাক্ষী শাহ জালাল মোল্লা বলেন, 'দালালকে আমি নিজের হাতে টাকা দিয়েছি। তাই আমি রাজ সাক্ষী। এ ছাড়া বখতিয়ার মোল্লাও দালালকে টাকা তার মাধ্যমে টাকা দিয়েছে। আমাদের দুইজনের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়েছে তাই আমরা সাক্ষী হয়েছি।' 

আরো পড়ুন
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় এনার্জি ড্রিংকস, বলছে গবেষণা

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় এনার্জি ড্রিংকস, বলছে গবেষণা

তিনি আরো বলেন, এই মামলা ধামাচাপা দিতে আমাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন পারভীন। কোর্ট থেকে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অথচ পারভীন তার পরিবারসহ পলাতক ছিলেন, বাড়ি থাকতেন না। 

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, মানবপাচারের অভিযোগে পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মানবপাচার মামলা রয়েছে।

আরো পড়ুন
জাপানে সমুদ্রে মেডিক্যাল হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৩

জাপানে সমুদ্রে মেডিক্যাল হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৩

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মুক্তি পেলেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল নেতা জাকির খান

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
মুক্তি পেলেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল নেতা জাকির খান
সংগৃহীত ছবি

মুক্তি পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল নেতা আলোচিত জাকির খান। ২২ বছর পলাতক ও পরে বন্দি থাকার পর রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেল সুপার মো. ফোরকান ওয়াহিদ।

আরো পড়ুন

উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা

উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা

 

এদিকে আলোচিত এই নেতাকে বরণ করতে সকাল থেকেই হাজার হাজার সমর্থক শত শত গাড়িবহর নিয়ে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে সামনে এসে উপস্থিত হন।

পরে কারমুক্ত জাকির খানকে নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, চাষাঢ়া, ২নং রেলগেইট হয়ে দেওভোগ এলাকায় প্রবেশ করেন। এসময় জাকির খানকে সবাই ফুলেল শুভেচ্ছা দেন। 

উল্লেখ্য, আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলাসহ চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩ মামলার আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-১১-এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরো পড়ুন

আ. লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতা আহত, আটক ৩

আ. লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতা আহত, আটক ৩

 

এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে তিনি এবং মামলার অন্য আসামিরা খালাস পান।

মন্তব্য

উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
শেয়ার
উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা
ছবি : কালের কণ্ঠ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপহাস থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাতে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাঁটিহাতা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তির নাম মো. জামাল মিয়া (৪৫)। তিনি খাঁটিহাতা গ্রামের শনু মিয়ার ছেলে।

ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত জামাল মিয়ার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছেন। জামাল মিয়ার চাচাতো ভাই বাবুল মিয়ার ছেলেরও সম্প্রতি বিদেশে যাওয়ার কথা। এ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবুল তার চাচাতো ভাই জামালকে উপহাস করেন।

একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে দুই পরিবারের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে জামাল মিয়া আঘাতপ্রাপ্ত হন।
গুরুতর আহত জামাল মিয়াকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য
সুন্দরগঞ্জ

আ. লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতা আহত, আটক ৩

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আ. লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতা আহত, আটক ৩
সংগৃহীত ছবি

গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জের মণ্ডলেরহাটে আওয়ামী লীগ নেতার ভাই বাবুর সঙ্গে ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলামের কথাকাটাকাটির জেরে হামলা ও দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন শফিকুলসহ বিএনপি ও যুবদলের ৬ নেতা।

গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের মণ্ডলের হাটে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে গোলম কিবরিয়া মির্জা নামে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন
কৃষ্ণাকে রেখেই ভুটান গেলেন আরো ৫ নারী ফুটবলার

কৃষ্ণাকে রেখেই ভুটান গেলেন আরো ৫ নারী ফুটবলার

 

এ ঘটনায় পুলিশ ছাপড়রহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাজমুল মাস্টার, তার ভাই একই ইউনিয়ন সহসভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও বাঁধনসহ তিনজনকে আটক করেছে। তবে অভিযুক্ত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বাবু আগেই পালিয়ে গেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ছাত্রনেতা ও ছাপড়হাটি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য শফিকুল ইসলাম মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাবুর ওষুধের দোকানের সামনে রাখা বসার বেঞ্চে থাক্কা লাগে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।

এ সময় বাবুর ভাই আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল মাস্টার ও মঞ্জুরুল ইসলামসহ তাদের লোকজন শফিকুলের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করেন। পরে শফিকুল জীবন রক্ষায় পাশের আলম ডাক্টারের দোকানে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানেও হামলা করেন তারা।

খবর পেয়ে পাশেই দলীয় কার্যালয় থেকে যুবদল ও বিএনপির নেতাকর্মী শফিকুলকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের ওপরেও হামলা চালানো হয়।

এতে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতাকর্মীসহ অন্তত ৬ জন আহত হন। পরে বিক্ষুদ্ধ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাবুর দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল মাস্টার ও তার ভাই মঞ্জুরুলসহ তিন জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

আরো পড়ুন
বাটার শোরুমে ইটপাটকেল ছুড়ে আটক ৪

বাটার শোরুমে ইটপাটকেল ছুড়ে আটক ৪

 

ছাপড়হাটি ইউনিয়ন বিএনপি আহ্বায়ক এফ আই জাহাঙ্গীর মন্ডল হামলার ঘটনাটি আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাইদের পরিকল্পিত বলে দাবি করে বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য শফিকুল ইসলাম, উপজেলা যু্বদলের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, ছাড়রহাটি ইউনিয়ন বিএনপি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলম কিবরিয়া মির্জা, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আলম মিয়া ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবীব।

তাদের মধ্যে গোলম কিবরিয়া মির্জাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘বসার বেঞ্চে মোটরসাইকেল ধাক্বা লাগার জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে উভয়ের দলীয় পদ-পরিচয় থাকলেও ঘটনাটি কোন রাজনৈতিক নয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। হামলার শিকার ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিযা চলছে।’

মন্তব্য

বৈশাখের ছুটিতে নদী-প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে পারেন বরিশালে

রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
শেয়ার
বৈশাখের ছুটিতে নদী-প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে পারেন বরিশালে
ছবি: কালের কণ্ঠ

সাত সকালে ব্রজমোহন (বিএম) স্কুল মাঠে প্রাভাতী অনুষ্ঠান দিয়ে পহেলা বৈশাখের শুরু। সেখানে পরানো হবে রাখি। বর্ষবরণের গানের আয়োজনও থাকছে। তারপর বর্ষবরণের সমবেত গান নিয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হবে।

নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। বরিশাল চারুকলার উদ্যোগে আয়োজিত শোভাযাত্রা ব্রজমোহন (বিএম) স্কুল মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নগরীর অশ্বিনী কুমার হল চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হবে।

শোভাযাত্রার দীর্ঘ বিরতির পর বিকেলে বিএম স্কুল মাঠেই উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন থাকছে। পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রার পর থেকে বিকেল মেলা শুরুর আগ পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়টা পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব মিলে ঘুরতে বের হন অনেকেই।

 

আরো পড়ুন
কৃষ্ণাকে রেখেই ভুটান গেলেন আরো ৫ নারী ফুটবলার

কৃষ্ণাকে রেখেই ভুটান গেলেন আরো ৫ নারী ফুটবলার

 

কীর্তনখোলা নদীর পাড় ঘেঁষে সবুজের বেষ্টনী। আছে নদী তীরে ঝাউ বন। এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পামগাছের সারি। শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ।

কীর্তনখোলা তীরে এ শহরের রয়েছে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই ঘুরে আসতে পারবেন বেশ কয়েকটি স্পর্ট।

কীর্তনখোলা নদীর পাড়
বরিশাল শহরের অদূরেই কীর্তনখোলা নদী তীরে এ জায়গাটি কীর্তনখোলা তীরের বেরিবাঁধের একটি অংশ। যেখানে আছে ঝাউবন। তার পাশের এ জায়গাকে ত্রিশ গোডাউন বলে।

এখানে বধ্যভূমিও রয়েছে। বিকেলের দিকে কীর্তনখোলাা পাড়ে গেলে নদীর শান্ত, শীতল পানির স্পর্শ নিয়ে যখন বাতাস আপনার গায়ে এসে লাগবে, তখন মন প্রফুল্ল হয়ে যাবে। সন্ধ্যার দিকে এখানে নানান মুখরোচক খাবারের পসরা বসে। 

মুক্তিযোদ্ধা পার্ক
বরিশাল নগরের বান্দরোডে কীর্তনখোলা নদী ঘিরে গড়ে উঠেছে আরেক বিনোদনকেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধা পার্ক। ঝাউ-কাঠবাদাম, নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল ও বনজ গাছে ছায়া সুনিবিড় এই পার্কে এলে নগরের ইটপাথর আর কোলাহল থেকে একটু স্বস্তি মেলে। প্রায় ৪ হাজার বর্গমিটার আয়তনের পার্কটিতে ৬২টি বসার আসন আছে। নদীতীরের প্রশস্ত সড়ক ধরে হেঁটে কীর্তনখোলার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এখান থেকে। এখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ট্রলারে ভ্রমণ করা যায় নদী। যাওয়া যায় ত্রিশ গোডাউন রিভারভিউ পার্কে। বিনামূল্যে পার্কটি ঘুরে দেখার সুযোগ থাকায় নগরবাসীর কাছে পার্কটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

প্ল্যানেট পার্ক
বরিশালে যতগুলো শিশু বিনোদনকেন্দ্র আছে, তার মধ্যে অন্যতম বান্দরোডের প্ল্যানেট পার্ক। ৫০ টাকা প্রবেশ ফি এই পার্কের। ভেতরে আছে শিশুদের জন্য ৮টি রাইড। প্রতিটি রাইডের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। রাইডগুলোর মধ্যে আছে প্লেন, ট্রেন, হর্স রাইডার, সুপার চেয়ার, ফ্লাওয়ার কাপ, শান্তা মারিয়া, প্যাডেল বোট ও প্যারাট্রুপার। এ ছাড়া পুরো পার্কের মধ্যে শিশুদের জন্য আছে রাইড ছাড়াও ঘুরে দেখার মতো নানা স্থান।
 
পার্কের ঠিক বিপরীত পাশের রয়েছে বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক)। এই উদ্যাগ ঘীরে সব সময়ই মানুষের ঢল নামে। তবে যে কোনো উৎসবকে ঘীরে সেটা জনস্রোতে রুপ নেয়। উদ্যানে খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। আরো আছে বিশাল মাঠ। আপনি চাইলে পরিবার-পরিজন নিয়ে সেই মাঠে বসে আড্ডা দিতে পারেন। উদ্যান ঘেঁষেই রয়েছে গ্রীণ সিটি পার্ক। প্রায় ৯ বছর পর এই পার্কে সিটি করপোরেশন জনপ্রতি ১০টা প্রবেশ ফি নির্ধারণ করেছে। এখানে শিশুদের জন্য কয়েকটি খেলনা রয়েছে। সবগুলো খেলনাই ফ্রিতে শিশুরা ব্যবহার করতে পারবে।

লাল গির্জা
বরিশাল নগরীর জীবনানন্দ দাশ সড়কের (বগুড়া রোড) পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে লাল গির্জাটি। লাল ইটের তৈরি বলে স্থানীয় মানুষের কাছে এটি ‘লাল গির্জা’ হিসেবে পরিচিত। প্রাচীন এ গির্জারকেতাবি নাম ইপিফানি গির্জা হলেও এটি অক্সফোর্ড মিশন নামেই বেশি পরিচিত। গির্জাটি ১২২ বছর আগে গ্রিক স্থাপত্য শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়েছে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণে গির্জাটি দেখতে এখনো ঝকঝকে তকতকে রয়েছে।

গির্জার দক্ষিণ পাশে শানবাঁধানো বড় পুকুর। পুকুরের টলটলে জলে গির্জার মোহনীয় প্রতিবিম্ব নজরকারে পর্যটকদের। মূল গির্জাটির রং লাল হলেও এর আঙিনায় পরতে পরতে সবুজের সমারোহ। সুদৃশ্য পামগাছে ঘেরা গির্জার চারদিকের সীমানা। ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি গাঢ় সবুজ আঙিনা, বৃক্ষশোভিত উদ্যান, মাঠ, ফুল ও ঔষধি বাগান। অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন এই গির্জায়।

বিএম কলেজ ক্যাম্পাস
অক্সফোর্ড মিশন চার্চ ঘুরে হাটা পথের দুরত্বে সরকারি বজ্রমোহন (বিএম) কলেজ। কলেজে কবি জীবনানন্দ দাশের অনেক স্মৃতি রয়েছে। প্রধান ফটকে লেখা ‘সত্য প্রেম পবিত্রতা’। কলেজের লাল-সাদা রঙের মূল দোতলা ভবন এক চমৎকার স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন। ভবন পেরোলেই বিশাল মাঠ। এক কোনায় জীবনানন্দ দাশ চত্বর। জীবনানন্দ দাশ হিন্দু ছাত্রাবাস রয়েছে। তার পাশেই বিএম স্কুল মাঠে উদীচীর বৈশাখী মেলা বসে।
 
লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
বিএম কলেজ থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি। জমিদার রাজচন্দ্র রায় আনুমানিক ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে বরিশালের লাকুটিয়া গ্রামে এ জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাংলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীর পাশাপাশি ইউরোপীয় স্থাপত্যের ছোঁয়াও রয়েছে নকশায়। বাড়ির মূল কাঠামোটি দোতলা। সেখানে রয়েছে কারুকাজ করা দরজা, জানালা, নকশা করা ছাদ এবং বিস্তত বারান্দা। বাড়ির অঙ্গনে আছে বিশাল এক পুকুর এবং সুন্দর উদ্যান।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ