<p>বিবিসির নিউজবাইট এর গবেষণা অনুসারে জেনারেশন 'জেড' হলো ভুল বুঝাবুঝির শিকার একটি প্রজন্ম। এই প্রজন্মের বয়স ১৬ থেকে ২২ বছর।<br /> যারা নিজেদেরকে খুবই কঠোর পরিশ্রমী, আত্মনির্ভরশীল এবং সৃজনশীল বলে বিবেচনা করে থাকে। অথচ পুরনো প্রজন্মগুলো তাদেরকে অলস এবং স্বার্থপর মনে করে। এমনটাই দেখা গেছে বিবিসির ইপসোস পরিচালিত একটি জরিপে।<br /> বিবিসির জরিপে 'জেড' প্রজন্মের ১০০৩ জনকে তাদের অগ্রাধিকারমূলক বিষয়গুলো, তারা নিজেদেরকে বিশ্বের কোথায় দেখে থাকে এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।</p> <p>কোন বয়সীরা কোন প্রজন্মের অংশ<br /> জেনারেশন জেড : ১৬ থেকে ২২ বছর বয়সীরা (যাদের জন্ম হয়েছে ১৯৯৫-২০০১ সালের মধ্যে) (২০০২ সাল থেকে যাদের জন্ম তারা আরেকটি নতুন প্রজন্ম হিসেবে গণ্য হবে। এদের নামকরণ হয়নি এখনো)<br /> জেনারশেন ওয়াই : ২৩ থেকে ৩৭ বছর বয়সীরা (যাদের জন্ম হয়েছে ১৯৮০-১৯৯৪ সালের মধ্যে)<br /> জেনারেশন এক্স : ৩৮ থেকে ৫১ বছর বয়সীরা (যাদের জন্ম হয়েছে ১৯৬৬-১৯৭৯ সালের মধ্যে)<br /> বেবি বুমারস : ৫২ থেকে ৭১ (যাদের জন্ম হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে ১৯৬৫ সালের মধ্যে)</p> <p>নিউজবিট ২৩ থেকে ৩৭ বছর বয়সী ২ লাখ ৪২৩ জনকেও নতুন জেনারেশন ‘জেড’ সম্পর্কে প্রশ্ন করে যে তারা কীভাবে নতুনদেরকে দেখে থাকেন।<br /> গবেষণায় দেখা গেছে, জেনারেশন জেড পরিবার ও শিক্ষাকে বাইরে বেড়াতে যাওয়া, সামাজিক গণমাধ্যম এবং ইন্টারনেটের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দেন।<br /> আর তারা নিজেদের ভবিষ্যতের ব্যাপারেও অনেক বেশি আশাবাদী। পুরোনো প্রজন্মগুলোর ধারণার চেয়েও তারা অনেক বেশি আশাবাদী।</p> <p>গবেষণায় প্রাপ্ত প্রধান তথ্যগুলো<br /> ১. যৌনতার ব্যাপারে তাদের মনোভঙ্গি ভিন্ন। জরিপে দেখা গেছে, ১৬ থেকে ২২ বছর বয়সীদের মাত্র দুই তৃতীয়াংশ বলেছে, তারা শুধু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট।<br /> যা বেবি বুমারস ও জেনারেশন এক্স এর তুলনায় অনেক কম। বেবি বুমারস এর ৮৮% আর এক্স জেনারেশনের ৮৫% ছিল শুধু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট।<br /> জেনারেশন জেড এর প্রতি ১০ জনের একজন বলেছেন, তারা সমানভাবে উভয় লিঙ্গের প্রতিই যৌনতায় আকৃষ্ট!<br /> ২. বয়স্ক প্রজন্মগুলো মনে করে সামাজিক গণমাধ্যম, বাইরে বেড়াতে যাওয়া এবং ইন্টারনেটই ১৬-২২ বছর বয়সী জেড প্রজন্মের সদস্যদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অথচ নিউজবাইটের গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- পরিবার, শিক্ষা এবং জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনী; এই বিষয়গুলো।<br /> ৩. বয়স্করা এদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে নৈরাশ্যবাদী হলেও এরা নিজেদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। এদের ৫৯ শতাংশই মনে করে তাদের ভবিষ্যত জীবন খুব ভালো হবে।<br /> আর মাত্র ৪১% মনে করে তাদের ভবিষ্যত খারাপ হবে। অথচ বেবি বুমারস প্রজন্মের ৫৪% নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে হতাশ ছিলেন।<br /> ৪. ওই জরিপে ব্রিটেনের কোন কোন ইস্যুগুলো আরো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া দরকার এমন প্রশ্নও করা হয়েছিল বিভিন্ন প্রজন্মের লোকদেরকে।<br /> আগের সবগুলো প্রজন্মই স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদ এবং ব্রেক্সিটের পর অর্থনীতির চাকা সচল রাখার কথা সবচেয়ে বেশি বলেছে।<br /> কিন্তু জেনারেশন জেড বা ২৩ এর নিচের বয়সীরা এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায় এর অধিকার, লিঙ্গ সমতা এবং বর্ণবাদ ইস্যুকেও গুরুত্বপূর্ণ বলেছে।<br /> ৫. ফেসবুক তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক গণমাধ্যম। জেনারেশন জেড এর সদস্যদের ৭৫ শতাংশই ফেসবুক ব্যবহার করে। আর ৪৪% টুইটার ব্যবহার করে।<br /> এ ছাড়া তাদের ৫৯% ইনস্টাগ্রাম (পুরোনোদের ২১%), ৫৬% স্ন্যাপচ্যাট (পুরোনোদের মাত্র ৯%), ১৭% টাম্বলার (পুরোনোদের ৩%) এবং ১৩% টুইচও (পুরোনোদের ২%) ব্যবহার করে।<br /> ৬. পুরোনো প্রজন্মগুলো সবচেয়ে বেশি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি বেশি ব্যবহার করে তা হলো- লিঙ্কডইন।<br /> ৭. জেনারেশন জেড খুবই প্রভাব বিস্তারকারী প্রজন্ম। এমনটাই মত চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অফ মার্কেটিং এর জেমস ডেলভস এর।<br /> স্ন্যাপচ্যাটের মতো ব্র্যান্ডও তাদের এই প্রভাববিস্তারকারী বৈশিষ্টটি উপলব্ধি করতে পেরেছে। স্ন্যাপচ্যাট বুঝতে পেরেছে তারাই এখন ফ্যাশনের প্রথমসারিতে আছে। আর তাদের প্রভাব তাদের প্রজন্ম ছাড়িয়ে তাদের আগের প্রজন্মগুলোকেও প্রভাবিত করছে।<br /> সূত্র : বিবিসি</p>