ঢাকা, সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫
২৫ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫
২৫ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ রমজান ১৪৪৬

আনিসুজ্জামান স্যার ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর
শেয়ার
আনিসুজ্জামান স্যার ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান

আনিসুজ্জামান স্যার আর নেই। ১৪ মে বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন। বয়স হয়েছিল মাত্র ৮৩ বছর।  চির নতুন, তরুণ ও সজীব মানুষটির জন্য এ এমন কোনো বেশী বয়স নয়।

বাংলাদেশের অসীম আকাশ থেকে উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটি সারাজীবনের জন্য হারিয়ে গেলো। সমগ্র বিশ্বে করোনা মহামারীর এই ক্রান্তিকালীন আমাদের সকল আশা-ভরসার বাতিঘরটি নিভে গেল। তাঁর মতো এমন নির্মোহ, নিরহংকার ও বিদ্বান মানুষের আবির্ভাব এই বাংলায় আর হয়তো কখনও ঘটবে না। তিনি আনিস থেকে প্রফেসর আনিসুজ্জামান হয়েছেন, ব্যক্তি থেকেপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলেন।
তিনি ছিলেন সকলের প্রিয়, শ্রদ্ধাভাজন ও ভরসার আশ্রয়স্থল 'আনিস স্যার'।

আনিস স্যার আমাদের সকলের শিক্ষক ছিলেন। যদিও আমরা অনেকেই তাঁর ক্লাসরুমের ছাত্র ছিলাম না, এমনকি তাঁর দু’টো বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করিনি। তবু কেমন করে জানি স্বমহিমায় তিনি আমাদের সকলকে তাঁর ছাত্র করে নিয়েছিলেন।

প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা তাঁর সরাসরি ছাত্র ছিলেন বা ছাত্রজীবনে তাঁর সান্নিধ্যে আসতে পেরেছেন তাঁরা সৌভাগ্যবান। আমি পাশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার করার সময়ই তার নাম শুনেছি। কিংবদন্তী তূল্য ছিলেন তিনি। তবে ক্লাসে না হোক অন্যান্য সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে স্যারের সরব উপস্থিতি ও ভূমিকা দূর থেকে প্রত্যক্ষ করেছি এবং তাঁর কর্মস্পৃহা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছি। 

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনটি ছিল এক উত্তাল সময়ে।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কেটেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন। সে সময়ে ও পরবর্তীতে গণতন্ত্র পূণঃরুদ্ধার, যুদ্ধোপরাধীদের বিচার, দেশে জঙ্গীবাদ ও মৌলবাদের উত্থান রোধ থেকে শুরু করে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্যারকে দেখেছি প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখতে। তিনি সবসময়ে ন্যায়ের পক্ষে ছিলেন, মানুষের কল্যাণের পক্ষে ছিলেন। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ষাটের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন এবং সর্বশেষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ছিল তাঁর সরব উপস্থিতি। বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। তাই এদেশের  মাটি ও মানুষের  প্রতি তাঁর ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা। তিনি কখনও আপস করেননি। সময়মতো সঠিক ভূমিকা রাখতে কখনো দ্বিধা করেননি। তাইতো তাঁর চিন্তা, চেতনা, মূল্যবোধ ও ভালোবাসার জায়গাটি প্রকাশে তাঁকে কখনও দ্বিধায় পড়তে হয়নি। সকল পরিবেশে তিনি নির্দ্বিধায় সত্য ওসুন্দরের সাথে ছিলেন। তাঁর দৃঢ়তা ছিল হিমালয়ের মতো অবিচল। যা সবাইকে সাহস যুগিয়েছে।তাইতো তিনি দুঃসময়ে এ জাতির বিবেকে পরিণত হয়ে সবার আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন।
 
একটা সময়ে এসে তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘বিপুলা পৃথিবী’ পড়ার সুযোগ পেয়ে অনেক অজানা তথ্য পেয়ে আমি সত্যিই অভিভূত হয়েছি। কোনো বাড়তি কাহন নয়, অত্যন্ত পরিমিত বোধ রক্ষা করে তিনি নির্লিপ্তভাবে বলে গিয়েছেন অনেক না জানা কথা ও বিষয়। তাঁর দক্ষ লেখনীর এই বইটি পড়ে একটি বিষয় উপলব্ধি হয়েছে সাহিত্যের ছাত্র না হওয়ার কারণে, স্যারের লেখা মৌলিক বইগুলো না পড়তে পেরে, অনেক কিছু থেকেই আমি বঞ্চিত হয়েছি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা, কাজের ধরন, পরিধি ও সীমাব্ধতার একটি অসাধারণ চিত্র ফুটে উঠেছে এই বইতে। স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজয় অর্জনের পর কলকাতা থেকে স্যারের দেশে ফিরে আসা, বাংলায় সংবিধান লেখার কাজে সংম্পৃক্ত থাকা, শিক্ষা কমিশনের কাজে সম্পৃক্ত থাকা, উচ্চ শিক্ষার্থে লন্ডন চলে যাওয়া, বঙ্গবন্ধুর সাথে চলে যাবার আগে কথাবার্তা, সবকিছুই অনেক সাবলীল ভাবে ফুটে উঠেছে তাঁর অসাধারণ লেখনীর মাধ্যমে । বাংলাদেশের সংবিধানটি বাংলায় লিখতে গিয়ে কি নিদারুণ শ্রমই না তিনি দিয়েছিলেন। জাতি তাঁর অবদানসবসময় স্মরণ করবে।

আনিস স্যার ছিলেন সবার শ্রদ্ধাভাজন ও প্রিয়। তিনি ছিলেন সবার আপনজন। তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল সর্বত্র। সকল ভালো কাজে তাঁকে সহজে পাওয়া যেত। সময় ও শারীরিক সমস্যা না থাকলে তিনি কাউকে ফেরাতেন না। সত্যভাষণে তাঁর কোন দ্বিধা ছিল না।তিনি ছিলেন জাতির বিবেক ও বাতিঘর। বিভিন্ন সময়ে, সংকটকালে মানুষ তাঁর কাছে গিয়ে আলোর সন্ধান পেতেন। তাঁর মতামত ও বিবৃতি দিশাহীন দেশ, জাতি, সমাজ বা ব্যক্তিকে সঠিক পথটি দেখতো। তিনি ছিলেন ধ্রুবতারা। সবাইকে তিনি আলোর পথে চালিত করেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন একটি অস্মপ্রাদায়িক ও উদারনৈতকি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশর। এটাই ছিল তাঁর একমাত্র ব্রত। এমন আধুনিক মানুষ পাওয়া সত্যিই এই জাতির জন্য ছিল একটি বিরল ঘটনা। আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি লালনে তাঁর ভূমিকা তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করেছে। আধুনিকতার আড়ালে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানের কারণে আমরা লালন করতে পেরেছি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে।বাংলা সাহিত্য ও বাঙ্গালী সংস্কৃতির তিনি ছিলেন একজন ভ্যানগার্ড।    
 
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য এবং এর আগে টানা আট বছর দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকার সুবাদে স্যারের কর্মকাণ্ড ও ব্যক্তিত্ব অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। তিনি অত্যন্ত সাদাসিধে মানুষ ছিলেন এবং যেকোনো পরিবেশে সাচ্ছন্দবোধ করতেন।যেমন ছিলেন মৃদুভাষী তেমনি ছিল তাঁর পরিমিত বোধ। তাঁর জীবনে বাহুল্যের কোনও স্থান ছিলনা। কথা বলার চাইতে, শুনতে বেশি পছন্দ করতেন। সবাইকে সম্মান করতেন। যেকোনো আসরে তাঁর কথা-বার্তা, পান্ডিত্য ও ব্যক্তিত্বে একটি চমৎকার আবহ তৈরি হতো। তিনি হয়ে উঠতেন সবার আস্থার প্রতীক। আমরা সবসময় চাইতাম তিনি আরও কিছু কথা বলুক, মন দিয়ে শুনি, অজানা বিষয়ে জানতে পেরে আলোকিত হই। আনিসুজ্জামান স্যার জাতীয় অধ্যাপক হয়েছিলেন এক বছরও হয়নি। এই জাতি সবচেয়ে বড় আলোর মশালটি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল, আমরা তাঁকে হারালেও তাঁর কর্ম সেই মশালটিকে সবসময়ে প্রজ্বলিত করে রাখবে এবং অবিরতভাবে আলোকিত করে যাবে আমাদেরকে। এতো মৃত্যু নয়, প্রস্থান মাত্র।

লেখক : সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন

মন্তব্য

ধর্ষণের শাস্তি কোন দেশে কেমন?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ধর্ষণের শাস্তি কোন দেশে কেমন?
সংগৃহীত ছবি

সম্প্রতি ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ধর্ষকদের শাস্তি নিয়ে আওয়াজ তুলছে মানুষ। আইনি ব্যবস্থা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছে দেশে ধর্ষকদের শাস্তির বিধান কী? এর বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ধর্ষণের মতো অপরাধের শাস্তির বিধানগুলোও আলোচনায় আসছে।

কেউ কেউ আইন সংশোধনের কথাও বলছেন।

বাংলাদেশে ধর্ষণের শাস্তি বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত। বর্তমানে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার ধর্ষণের শাস্তি কঠোর করে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন’ সংশোধন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র : 

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের শাস্তি নির্ভর করে অপরাধের ধরন ও রাজ্যভেদে আইন অনুযায়ী। সাধারণত ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।

রাশিয়া : 

রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি কঠোর। দোষী সাব্যস্ত হলে ২০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

চীনে ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কোনো দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড বা আজীবনের জন্য নপুংসক (castration) করে দেওয়া হয়।

সৌদি আরব : 

সৌদি আরবে ধর্ষণের শাস্তি ইসলামী শরিয়াহ আইনের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।

সাধারণত অপরাধ প্রমাণিত হলে শিরচ্ছেদ (শিরোচ্ছেদ) করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করা হয়, যেখানে দোষী সাব্যস্ত হলে পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

আফগানিস্তান : 

আফগানিস্তানে ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করা হয়।

উত্তর কোরিয়া : 

উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণের অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

মালয়েশিয়া : 

মালয়েশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। এখানে ধর্ষণের দোষী সাব্যস্ত হলে সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

ভারত : 

ভারতেও যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে।

মিশর : 

মিশরে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ফাঁসিতে ঝোলানোর বিধান রয়েছে।

ইরান :

ইরানে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ফাঁসিতে ঝোলানো এবং কখনও কখনও পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

রমজান মাসে নরসিংদীতে টিকার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রমজান মাসে নরসিংদীতে টিকার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
সংগৃহীত ছবি

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) উপজেলার সিরাজনগর উম্মুলকুরা মাদরাসা মাঠে ২০০ জন গ্রামবাসীর মধ্যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। 

উপহারসামগ্রীর ফুড প্যাকেজের মধ্যে ছিল চাল, তেল, ডাল, চিনি, ছোলা, আটা, খেজুর ও বিস্কুট।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টার্কিস করপোরেশন অ্যান্ড কর্ডিনেশন এজেন্সি (টিকা) এর কান্ট্রি ডাইরেক্টর শেভকি মের্ত বারিশ।

তিনি বলেন, ‘এই উপহার তুরস্কের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভালোবাসার প্রতীক।’

এ উদ্যোগের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ইয়ুথ অপরচুনিটিস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিওও ডা. ওসামা বিন নূর গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে টিকাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ নরসিংদীর বিখ্যাত শাকসবজি উপহার প্রদান করেন। উক্ত মানবিক উদ্যোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার সঞ্চার করেছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সবুজ রঙের অমূল্য রত্ন পান্না, কেন এত জনপ্রিয়?

    পান্নার সবচেয়ে প্রধান বৈশিষ্ট্য তার উজ্জ্বল সবুজ রঙ
শেয়ার
সবুজ রঙের অমূল্য রত্ন পান্না, কেন এত জনপ্রিয়?
সংগৃহীত ছবি

পান্না বা এমেরাল্ড বা তার সুন্দর সবুজ রং দিয়ে হাজার বছর ধরে মানুষকে মুগ্ধ করে আসছে। বর্তমান সময়ে সবাই বিশেষ করে নারীরা পান্নার ভক্ত।  
চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন পান্না সবার কাছে এত প্রিয় এবং চাহিদাপূর্ণ।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব
এমেরাল্ড প্রাচীনকাল থেকেই মূল্যবান।

মিসরে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রথম পান্নার খনি খনন করা হয়েছিল। মিসরের রানি ক্লিওপেট্রার এই রত্নের প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল। তিনি প্রাসাদে পান্নার তৈরি গয়না ব্যবহার করতেন এবং অতিথিদের উপহার দিতেন। প্রাচীন রোমে পান্নাকে সৌন্দর্য এবং ভালোবাসার দেবী ভেনাসের সঙ্গে তুলনা করা হতো।
রোমান সম্রাট নেরো এমেরাল্ড গ্লাস দিয়ে গ্ল্যাডিয়েটর ম্যাচ দেখতেন। ইনকা এবং আজটেক সভ্যতা এ রত্নকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করত এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহার করত।

অনন্য সৌন্দর্য
পান্নার সবচেয়ে প্রধান বৈশিষ্ট্য তার উজ্জ্বল সবুজ রং। এটি নীলাভ-সবুজ থেকে গভীর সবুজ পর্যন্ত হতে পারে।

এই রঙটি পাওয়া যায় বেরিল খনিজের মধ্যে থাকা ক্রোমিয়াম এবং ভ্যানাডিয়ামের কারণে। 

জ্যোতিষশাস্ত্র
পান্নার সঙ্গে জ্যোতিষশাস্ত্রের সম্পর্ক রয়েছে। পান্নাকে বুধ গ্রহের রত্ন হিসেবে গণ্য করা হয়। যা বুদ্ধিমত্তা ও যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং অর্থনৈতিক সাফল্য আনতে পারে। পশ্চিমা জ্যোতিষশাস্ত্রে মে মাসে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের জন্য পান্না একটি শুভ রত্ন এবং এটি তাদের ভাগ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

তাই অনেকে পান্না বসানো আংটি পরিধান করেন।

সাংস্কৃতিক প্রভাব ও গয়না তৈরিতে ব্যবহার
পান্না পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইদানীং ভারতে এটি বিয়ের গয়না তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। মুঘল সম্রাটরা পান্নার প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। এর সুন্দর সবুজ রং সোনা, প্লাটিনাম এবং সিলভারের মতো ধাতুর সঙ্গে খুব ভালো মানায়। পান্না অন্য রত্নের সঙ্গে মিলিয়ে যেমন ডায়মন্ডের সঙ্গে ব্যবহার করলে আরো আকর্ষণীয় হয়। 

সার্টিফিকেটসহ পান্না কেনা
পান্না কেনার সময় নিশ্চিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ যে এটি আসল এবং উচ্চমানের। সার্টিফিকেটসহ পান্না একটি বিশ্বাসযোগ্য জেমোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি থেকে প্রমাণিত হয়। যা এর বৈশিষ্ট্যগুলো যেমন- রং, স্বচ্ছতা, আকার এবং ওজন নিশ্চিত করে। 
যদি আপনি সুন্দর এ রত্নটি কেনেন তখন চারটি সি (রং, স্বচ্ছতা, কাট এবং ক্যারাট ওজন) মনে রাখুন। সার্টিফিকেটসহ কেনা হলে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে এটি আসল ও অমূল্য একটি রত্ন।

সূত্র : মিন্টলি

মন্তব্য
স্বরণ

পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সংগৃহীত ছবি

ভারতীয় উপমহাদেশের ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব মদনমোহন তর্কালঙ্কারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি লেখ্য বাংলা ভাষার বিকাশে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। তিনি বাংলার নবজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত হিসাবেও পরিগণিত। তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যাপক ছিলেন এবং বাল্যশিক্ষার জন্য একাধিক পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।

১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে নদীয়া জেলায় বেথুয়াডহরী, নাকাশীপাড়ার বিল্বগ্রামে এক হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মদনমোহন। তাঁর পিতার নাম রামধন চট্টোপাধ্যায় ও মাতার নাম বিশ্বেশ্বরী দেবী ৷ তার দুই সন্তান ছিল যাদের নাম ভুবনমালা ও কুন্দমালা।

আরো পড়ুন
সিদ্ধিরগঞ্জের আগুনের ঘটনায় আরো একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩

সিদ্ধিরগঞ্জের আগুনের ঘটনায় আরো একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩

 

মদনমোহন সংস্কৃত কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন, সেখানে তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহপাঠী ছিলেন। তিনি পরবর্তীতে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে শিক্ষা গ্রহণ করেন।

তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। পরবর্তীতে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার বিচারক নিযুক্ত হন। তিনি ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে মুর্শিদাবাদের এবং ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে কান্দির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হয়েছিলেন।

আরো পড়ুন
ল্যানকার্ড-এর ব্যবহার

ল্যানকার্ড-এর ব্যবহার

 

তিনি ছিলেন 'হিন্দু বিধবা বিবাহ' প্রথার অন্যতম উদ্যোক্তা।

১৮৫৭ সালে প্রথম বিধবা বিবাহ হয়। ওই বিয়ের পাত্র শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন এবং পাত্রী ছিলেন কালীমতি। তাঁদের দুজনের সন্ধান ও যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে মদনমোহন তর্কালঙ্কার ছিলেন অন্যতম।  স্ত্রী শিক্ষার প্রসারে তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৮৪৯-এ বেথুন কর্তৃক হিন্দু মহিলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে নিজের দুই মেয়েকে সেখানে ভর্তি করেন তিনি।
নিজে বিনা বেতনে এই স্কুলে বালিকাদের শিক্ষা দিতেন। ১৮৫০ সালে সর্বশুভকরী পত্রিকায় স্ত্রী শিক্ষার পক্ষে একটি যুগান্তকারী প্রবন্ধও লেখেন।

আরো পড়ুন
পুরান ঢাকায় সালিস বৈঠকে বোন জামাইয়ের হাতে ব্যবসায়ী নিহত

পুরান ঢাকায় সালিস বৈঠকে বোন জামাইয়ের হাতে ব্যবসায়ী নিহত

 

তিনি ১৪টি সংস্কৃত বই সম্পাদনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে, রসতরঙ্গিণী (১৮৩৪), বাসবদত্তা (১৮৩৬), শিশু শিক্ষা- তিন খণ্ড (১৮৪৯ ও ১৮৫৩)।

১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৯ মার্চ (আজকের দিনে) কান্দিতে কলেরা রোগে মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ