<p>প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গতকাল বুধবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন। তফসিলে মনোনয়নপত্র দাখিল ১২ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র যাচাই ১৩ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ ১৯ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল সকালে নির্বাচন কমিশন সভা শেষে সিইসি এ তফসিল ঘোষণা করেন।</p> <p>তবে বর্তমান পরিস্থিতি ও সংশ্লিষ্ট আইন অনুসারে বঙ্গভবনের পরবর্তী বাসিন্দা কে হচ্ছেন তা জানতে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার জন্য সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভা শেষে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা জানা যাবে। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদীয় বোর্ডের সভায় যাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তিনিই রাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্মানিত এ পদের দায়িত্ব পাবেন। সংশ্লিষ্ট আইন অনুসারে এ নির্বাচনে নির্বাচনী কর্মকর্তা (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র যাচাইয়ের পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করবেন।</p> <p>২০১৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয় ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গণভবনে সংসদীয় বোর্ডের সভা হয় ৩১ জানুয়ারি। ওই দিনই গণমাধ্যমকে জানানো হয়, মো. আবদুল হামিদকেই দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরপর নির্বাচনী কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা, মনোনয়নপত্র যাচাইরের পর ওই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি তাঁকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। ওই দিনই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ করা হয়। সন্ধ্যায় গণভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে ওই গেজেট তাঁর হাতে তুলে দেন তৎকালীন সিইসি ও অন্য চার কমিশনার।</p> <p>এবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গতবারের মতোই এবার ২৫ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হলেও তফসিল ঘোষণা থেকে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ের ব্যবধান ১৭ দিন। গতবার এ ব্যবধান ছিল ১১ দিন। এ অবস্থায় এবার আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বেশি সময় পাচ্ছে। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়ের আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত করার বিকল্প নেই। সে কারণে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।</p> <p>সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি তাঁর কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর এ পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের কার্যভার গ্রহণ করেন। সে অনুযায়ী তাঁর দায়িত্বের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। এ পদে একই ব্যক্তি তৃতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হতে পারেন না।</p> <p>সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। আইনজ্ঞদের মতে, মেয়াদ পূরণের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বলতে প্রথম ৩০ দিনকে বোঝাবে। এই বিধানের আলোকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে গত ২৪ জানুয়ারি। এ ছাড়া সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কারো বয়স ৩৫ বছরের নিচে হলে, সংসদ সদস্য নির্বাচনের যোগ্য না হলে এবং সংবিধানের অধীন অভিশংসন দ্বারা রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারিত হলে তিনি অযোগ্য বিবেচিত হবেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী আইন অনুসারে সংসদ সদস্যরা প্রস্তবক ও সমর্থক না হলে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না।</p>