<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্য, প্রকৌশলী ও কিছু ঠিকাদার সিন্ডিকেট মিলে গত ১৪ বছরে লুটে নিয়েছে শত শত কোটি টাকা। ছয় থেকে আটজনের প্রভাবশালী ঠিকাদার গ্রুপের দাপটে সাধারণ ঠিকাদাররা ছিলেন অতিষ্ঠ। নানা উপায়ে অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন, দরপত্র প্রক্রিয়ার তথ্য ফাঁস, সমঝোতার নামে প্রকৌশলীদের অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়ে উঠেছিল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই দপ্তরে একজন সহকারী প্রকৌশলী দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় ধরে দায়িত্ব পালন করে গড়ে তোলেন অবৈধ ঠিকাদারি সিন্ডিকেট। তিনি দাপটের সঙ্গে দপ্তর চালাতেন। ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী অনুপমচক্র </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রেট শিডিউল</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> ফাঁস করা থেকে শুরু করে নিম্নমানের কাজের বিল পরিশোধ, কাজ পাইয়ে দেওয়া, বিল ও জামানতের চেক পরিশোধের কমিশন বুঝে নেওয়া হতো। এসব ছাড়াও কাজ শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত অগ্রিম বিল পরিশোধেরও অভিযোগ রয়েছে। এত সব অপকর্মের নীরব সমর্থক ছিলেন গত ১০ বছরে দায়িত্ব পালনকারী সব নির্বাহী প্রকৌশলী। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনুপম বড়ুয়া নামের এই সহকারী প্রকৌশলী ছিলেন এই অধিদপ্তরের সব অপকর্মের হোতা। এই সহকারী প্রকৌশলী বিগত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দাপটের সঙ্গে অবস্থান করে চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া হিসেবে গড়ে তোলেন। অভিযোগ রয়েছে, অনুপম সিন্ডিকেটের এক ঠিকাদার গত এক বছরে এক প্রতিষ্ঠানের নামে ২২টি কাজ পেয়েছেন। এ ছাড়া অনুপম সিন্ডিকেটের অপর এক সদস্যকে কাজের অতিরিক্ত রানিং বিল প্রদান করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সহকারী প্রকৌশলী অনুপম বড়ুয়ার সহযোগী ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী-২ জামাল উদ্দীন আহমেদ ও উচ্চমান সহকারী মো. আলী। তাঁদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্যের বিষয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তারা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রকৌশলী অনুপম সিন্ডিকেটভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইডিয়াল কনস্ট্রাকশন, লাকী এন্টারপ্রাইজ, তায়াক্কুল এন্টারপ্রাইজ, ব্রাদার্স সিন্ডিকেট, এ.টি কনস্ট্রাকশন ও জসিম এন্টারপ্রাইজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ.টি কনস্ট্রাকশনকে বাঁশখালী উপজেলায় একটি মাদরাসার কাজের জন্য প্রাপ্ত টাকার চেয়ে গত জুন মাসে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া আইডিয়াল কনস্ট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে গত এক বছরে ২২টি কাজ পাইয়ে দিয়েছেন তিনি। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেলের প্রভাব খাটিয়ে সহকারী প্রকৌশলীর যোগসাজশে এসব কাজ করিয়ে নিয়েছেন বলেও ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তায়াক্কুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের ছয়তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের কাজ পেয়েছিল ২০১৮ সালে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি কলেজের সেই কাজ না করে রেখে দেয়। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী সমিতির পক্ষ থেকে মৌখিক অভিযোগের পর সেই ঠিকাদারের কাজ বাতিল করে প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর চট্টগ্রামে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী দীপঙ্কর খীসা বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করে বলেছেন, এ ধরনের আরো বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলো তাদের তালিকায় রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, গত অর্থবছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের ১৯টি প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। যার মধ্যে ১০টিই পুরনো প্রকল্প। পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব প্রকল্পের জন্য পুনঃ দরপত্রের কথা উল্লেখ করা হয়নি। শিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত বেশ কয়েকজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে জানান, চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে অগণিত দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে দপ্তরের প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে কাজের মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীরা ঠিকাদারদের নানা প্রলোভনে লোভ সামলাতে না পেরে জড়িয়ে পড়ছেন নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে। এ বিষয়ে জানতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী প্রকৌশলী অনুপম বড়ুয়ার সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে এসব বিষয়ে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী দীপঙ্কর খীসা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমি পাঁচ-ছয় মাস আগে এখানে যোগ দিয়েছি। গত দু-তিন মাসে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি। যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p>