<p>সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে মোবাইল ফোনে চার্জ দেওয়ার মতো তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষে অন্তত দেড় শতাধিক লোক আহত হয়েছে। শনিবার রাত ও রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়।<br /> এ ঘটনায় ১৩০ জন স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের মধ্য দুজনের অবস্থা গুরুতর।</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বাজারের ফার্মেসিতে মোবাইল চার্জে লাগিয়ে যান বর্ণি গ্রামের বাবুল নামের এক ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পর চার্জে থাকা মোবাইল নিতে আসেন আরেকজন। ফার্মেসি কর্তৃপক্ষ অন্যের হাতে মোবাইল দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাগবিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষ বাধে। এরপর তা দুই গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।</p> <p>শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতের সংঘর্ষে আহত ৭৫ জন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়। তবে আহতের সংখ্যা শতাধিক বলে জানায় স্থানীয়রা। সংঘর্ষ চলাকালে দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।</p> <p>রাতে পরিস্থিতি শান্ত হলেও সকাল থেকে বর্ণি ও কাঁঠালগ্রামের লোকজন জড়ো হতে থাকে। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তারা মাইকিং করে গ্রামের লোকজনকে সংঘর্ষে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। পরে দুপুর ১১টার দিকে দুই গ্রামের লোকজন উপজেলার থানা বাজার পয়েন্ট মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। </p> <p>এ সময় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সহস্রাধিক মানুষের সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংঘর্ষের ভিডিও দিয়ে সেনাবাহিনীকে আসার আকুতি জানাতে থাকেন। দুপুর ২টার দিকে বেশ কয়েক গাড়ি সেনাবাহিনী ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। </p> <p>এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী সেখানে অবস্থান করছিল। সংঘর্ষে আহত ৭০ জনের মতো বিকেল পর্যন্ত স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।</p> <p>কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৭৫ জনের বেশি আহত লোক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।</p> <p>সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর স্থানীয় সালিশ ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। আশা করি, আর সমস্যা হবে না।’ </p> <p>আহতের সংখ্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। কারণ এ ধরনের সংঘর্ষের পর বেশির ভাগই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায় না। নিজেদের মতো করে চিকিৎসা নেয়। তবে বড় ধরনের আঘাতপ্রাপ্ত বা আহতের কোনো খবর এখন পর্যন্ত পাইনি।’</p>