<p>চট্টগ্রাম নগরে ২০২১-২০২৩ এই তিন বছরে ৩৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৩ জন নিহত হয়েছেন। প্রাণ হারানো অধিকাংশই ২১-৪০ বছর বয়সী। তিনটি থানা এলাকায় দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে বেশিরভাগ পথচারী। </p> <p>রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উদ্যোগে ‘চট্টগ্রাম নগর সড়ক নিরাপত্তা প্রতিবেদন ২০২১-২০২৩’-এ এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। নগরের টাইগারপাসে অবস্থিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে দ্য ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস)। </p> <p>জানা যায়, বিআইজিআরএস এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ভাইটাল স্ট্রাটেজিস যৌথভাবে এই সমীক্ষা করেছে।</p> <p>প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপনকালে বিআইজিআরএস চট্টগ্রামের সার্ভেইল্যান্স কো-অর্ডিনেটর কাজী সাইফুন নেওয়াজ জানান, চট্টগ্রাম নগরীর ১৬টি থানা থেকে সড়ক দুর্ঘটনার মামলার এজাহার থেকে এসব তথ্য (দুর্ঘটনা ও হতাহত) সংগ্রহ করা হয়। </p> <p>তিনি জানান, ২০১৭-২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ৬৮৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এরমধ্যে হতাহত হয়েছেন এক হাজার ২৮ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৫৬৯ জন। গুরুতর আহত হন ৪০৯ জন। আহত হয়েছিলেন ৫০ জন। এর মধ্যে ২০২৩ সালে মারা যায় ৯৬ জন। তার আগের বছর মারা যায় ৯৪ জন। ২০২১ সালে মারা গেছেন ১০৩ জন। ২০২১ সালের প্রাণহানি ২০১৭-২০২৩ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ।</p> <p>নগরের বায়েজিদ বোস্তামি, বাকলিয়া ও চান্দগাঁও এই তিনটি থানার মধ্যে বহদ্দারহাট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় যাদের প্রাণহানি হয়েছে তাদের মধ্যে পথচারীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ। মোটরসাইকেল আরোহী ৫৮ শতাংশ। প্রাণহানির শিকার সবচেয়ে বেশি ২১-৪০ বছর বয়সী মানুষ যারা দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত। যানবাহনের অতিরিক্ত গতির কারণে অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।</p> <p>প্রধান অতিথির বক্তব্যে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে সব প্রতিষ্ঠানের কাজ করা জরুরি। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে পুলিশ, বিআরটিএ, সিডিএ সবাই একটি সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে সহজেই সড়কে শৃঙ্খলা আনা যাবে।</p> <p>নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের (নিসচা) সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়কে বিশৃঙ্খলা বন্ধ করতে হলে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে একটি ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনতে হবে। চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্সের আওতায় আনতে হবে। পথচারীদের জন্য জেব্রা ক্রসিং ও আন্ডারপাস নির্মাণ করতে হবে।</p> <p>চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আসফিকুজ্জামান আক্তার, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম, বিআরটিএ চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা প্রমুখ। </p>