<p>ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দায় অপ্রয়োজনীয় স্থানে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকল্পনাহীনভাবে তিনটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু তিনটির দুই পাশে মাটি ভরাটসহ রাস্তা না থাকায় এলাকাবাসীর কোনো উপকারে আসছে না। এর ফলে সেতুসংলগ্ন বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ছে। বর্ষার পানি আসার আগে সেতুগুলোর দুই পাশে রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।</p> <p>সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সালথার ভাওয়াল ইউনিয়নের শেষ সীমানায় থাকা তুগোলদিয়া গ্রাম ও মাঝারদিয়া ইউনিয়নের শেষ সীমানায় থাকা কুমারপট্টি গ্রামের মধ্য দিয়ে বেদাখালী খালের ওপর ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামের আলমগীর মিয়ার বাড়ির সামনে পাকা সড়কের পশ্চিম পাশে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট প্রকল্পের অধীনে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সেতু দুটি নির্মাণ করা হলেও, আজ পর্যন্ত সেতু দুটি দুপাশে রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি।</p> <p>স্থানীয় তুলোগদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. হাবিব মাতুব্বর ও বকুল মোল্যা কালের কণ্ঠকে বলেন, বেদাখালী খালের ওপর সেতুটি ৫-৬ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে, তবে দুপাশে রাস্তা নেই। এমনকি সেতুর গোড়া মাটিও ভরাট করা হয়নি। এটি আমাদের কোনো কাজে আসছে না। বর্ষায় সেতুর দুইপাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কয়েকটি গ্রামের মানুষ পারাপার হয়। ছোট বাচ্চারা তো ভয় পেয়ে সেতু পার হতে চায় না। বর্ষার পানির আগে সেতুটির দুপাশে রাস্তা নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।</p> <p>খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজল শেখ বলেন, খারদিয়া গ্রামের আলমগীর মিয়ার বাড়ির সামনে সেতু নির্মাণের কোনো প্রয়োজন ছিল না। শুধু সরকারি টাকার অপচয় করা হয়েছে। রাস্তা থাকলে মানুষ সেতু পার হয়ে অন্তত মাঠে যেতে পারত। এভাবে সরকারি টাকা নষ্ট করা উচিত নয়।</p> <p>সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, তবে খোঁজ-খবর নিয়ে ওই সেতু দুটির দুপাশে রাস্তার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।</p> <p>অপরদিকে, চলতি অর্থবছরে নগরকান্দা উপজেলা সদরের নগরকান্দা-মাঝারদিয়া সড়কের ছাগদী এলাকায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুটির কাজ প্রায় শেষ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর একপাশে পাকা সড়ক সংযুক্ত থাকলেও অপরপাশে কোনো রাস্তা নেই। বরং রয়েছে ফসলি জমি, এমনকি সেখানে কোনো গ্রামও নেই। স্থানীয়রা জানান, সেতুটির দুপাশে কোনো বসতি নেই, তাই এটি কারো কাজে আসবে না।</p> <p>তবে রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, সেতুটির দক্ষিণ পাশে একটি কবরস্থান রয়েছে। সেখানে যাওয়ার জন্য একটি সরকারি হালটও আছে। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর ওই হালটের ওপর রাস্তা নির্মাণ করা হবে।</p>