<p>বাংলার শীত মানে পিঠা-পায়েশের মৌসুম। আর এই মৌসুম আবর্তিত হয় খেঁজুর গুড়কে ঘিরে। শীতের হরেক রকম পিঠা ও পায়েশকে মিষ্টি করতে খেঁজুর ব্যবহার হয়ে আসছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। তবে খেজুর গুড়ের রমরমা ব্যবহারে আজ ভাটার টান। চাষের জমি বাড়াতে উজাড় হয়ে গেছে এদেশের খেজুর বাগান ও গাছগুলো। অতি প্রাচীন গুড়শিল্প তাই আজ ধুকছে।</p> <p>একবারও কি ভেবে দেখেছেন, খেজুর গুড় কেন এত জনপ্রিয় ছিল?</p> <p>স্বাদ ও গন্ধ বটেই—পুষ্টিগুণেও অন্য যেকোনো মিষ্টির চেয়ে খেজুরগুড় সম্মৃদ্ধ। খেজুর গুড়ের মূল পুষ্টি উপদান হলো, প্রাকৃতিক চিনি গ্লুকোজ ও ফ্রুকটেজ। এছাড়া আরও আছে নানারকম ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার।</p> <p>খেজুর গুড়ে প্রাকৃতিক চিনি অর্থাৎ গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকে, যা শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায়। ফলে ক্লান্তি দূর করতে খেজুর গুড় খুবই কার্যকর।</p> <p>এটা আয়রনের ভালো উৎস। খেজুর গুড়ের আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যামিনিয়া বা রক্তাল্পতার হাত থেকে শরীরকে বাঁচায়।</p> <p>খেজুর গুড়ে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান থাকে। এগুলো হাড় ও দাঁত শক্তিশালী করে। খেজুর গুড় ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বলিরেখা দূর করতে সহায়ক।</p> <p>খেজুর গুড়ে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের ফ্রি র‍্যাডিকেল দূর করে, যা কোষের ক্ষতি রোধে সাহায্য করে।  অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও খনিজ উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, লিভার থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন দূর করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। </p> <p>খেজুর গুড়ে কিছুটা খাদ্য আঁশ (ফাইবার) রয়েছে। ফাইবার পেটের সমস্যা সমস্যা দূর করে, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচায় এবং হজমে সহায়তা করে</p> <p><strong>সতর্কতা</strong><br /> খেজুর গুড় স্বাস্থ্যকর—এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। এতে উচ্চ পরিমাণে চিনি রয়েছে। এই চিনি ডায়াবেটিক ও কিডনি রোগীদের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে।</p> <p>খেজুর গুড় একটি প্রাকৃতিক, স্বাস্থ্যকর খাবার, যা সঠিক পরিমাণে খেলে শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি শক্তি জোগায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন পুষ্টি সরবরাহ করে। তাই প্রতিদিনের খাবারে পরিমিত পরিমাণে খেজুর গুড় রাখার অভ্যাস করা যেতে পারে।</p>