<p>উজানে ভারতের উত্তর সিকিমের ঢলে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বেড়ে বাংলাদেশের পাঁচ জেলায় বড় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নীলফামারীর নিম্নাঞ্চলের ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়। বিকেল থেকে পানি ঢুকে পড়ে তিস্তার প্রবেশদ্বার লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে। ডুবে যায় আমনের ক্ষেত।</p> <p>রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার তিস্তা নদীতেও পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৭টায় লালমনিরহাটের ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপত্সীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপত্সীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।</p> <p>তিস্তার উৎপত্তিস্থল উত্তর সিকিমে প্রবল বৃষ্টিতে গতকাল ভোর থেকে নদীটির পানি ভয়ংকর রূপ নেয়। সেখানে তিস্তার চুংথাং বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেই বন্যার পানি তিস্তা হয়ে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।</p> <p>১৫ গ্রাম প্লাবিত</p> <p>তিস্তার পানি বাড়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, গয়াবাড়ি, ঝুনাগাছ ছাপানী, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ১৫ গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে গতকাল সকাল থেকে সতর্কতা জারি করে প্রচার চালায় স্থানীয় প্রশাসন।</p> <p>ডালিয়া পাউবো সূত্রে জানা যায়, ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বিপত্সীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেল ৪টায় সেখানে নদীর পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করে পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেল ৫টায় ১০ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গভীর রাত পর্যন্ত পানি বেড়ে বিপত্সীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়। ওই পয়েন্টে নদীর পানির বিপত্সীমা ৫২.১৫ সেন্টিমিটার।</p> <p>পূর্ব ছাতনাই ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ও মাইকিং করে তিস্তাপারের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলছি।</p> <p>অনেকে পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত নৌকা মোতায়েন রাখা হয়েছে। পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’ [প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুর প্রতিনিধি]</p>