নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মতো পরিবেশ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে সব ধরনের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনা হয়েছে। নভেম্বরের প্রথমার্ধে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। সম্পূর্ণরূপে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মতো পরিবেশ রয়েছে।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরিবেশ রয়েছে : ইসি সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ইসি সচিব বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অত্যাসন্ন। সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
রাষ্ট্রপতির কাছে তফসিল দিয়ে আসা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের। এসংক্রান্ত কমিশন সভাই এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি।’
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, এ পর্যন্ত কমিশনকে মেইলে এনডিআই, ইইউ ও কমনওয়েলথ প্রতিষ্ঠান কনফার্ম করে গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান, যেটা প্রি-অ্যাসেসমেন্ট করে গেছেন। ইইউ আগেই বলেছে এবং অতিসম্প্রতি কমনওয়েলথের একটি টিম ইসির সাক্ষাতের সময় চেয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, শুক্র ও শনিবার ডিসি-এসপির প্রশিক্ষণ। এরপর ১২-১৪ নভেম্বরের কোন সময়ে তফসিল হতে পারে? জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তখন গণমাধ্যমে জানানো হবে। নির্বাচন কমিশনের যেসব প্রস্তুতিমূলক কাজ রয়েছে, তার সব এগিয়ে রয়েছে। নির্বাচনী মালামালও ধাপে ধাপে জেলা পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে।’
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথাসময়ে পরিপত্র জারি করে। ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অবশ্যই পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মাঠে থাকবেন। ভোটাররা নির্বিঘ্নে যাতে ভোট দিতে পারে, সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরিপত্র জারি করা হবে।’
সম্পর্কিত খবর

গরম নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
অনলাইন ডেস্ক

সারা দেশে আগামী আট দিন তাপমাত্রা বেড়ে গরম বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সোমবার সকাল ৯টা পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। পাশাপাশি সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে।

ঈদুল ফিতরের ট্রেনযাত্রা শুরু
অনলাইন ডেস্ক

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অগ্রিম টিকিটে ঘরমুখো মানুষের প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৬টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে শুরু হলো এবারের ঈদুল ফিতরের ট্রেনযাত্রা।
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে কমলাপুর স্টেশনে। অনেকে ভোরের আলো না ফুটতেই হাজির হয়েছেন স্টেশনে।
এদিকে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করা ট্রেনগুলোও চলবে বিশেষ ব্যবস্থায়। আজ যারা যাত্রা করছেন, তাদের অগ্রিম টিকিট গত ১৪ মার্চ বিক্রি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর এই টিকিট বিক্রি কার্যক্রম চলে ২০ মার্চ পর্যন্ত।
এদিকে বিনা টিকিটের যাত্রীরা যেন ট্রেনে চড়তে না পারে এবং নাশকতা ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতায় নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনী দুর্বল হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়লে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না। সেই সময়ে প্রতিবেশী দেশ হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিই চাচ্ছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা।
সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিষোদগার সম্পর্কে এমন কথা বলেন তারা। সামরিক বিশেষজ্ঞ রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) আব্দুল হক গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সময় এখন খুবই স্পর্শকাতর। ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেখে যাওয়া প্রেতাত্মারা খুব সরব। দক্ষতার সঙ্গে তারা পরিস্থিতি পাল্টে ফেলতে চাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘সেনাবাহিনী হচ্ছে একটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়লে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি সামরিক ও সামাজিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলব, এখনো যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, মানুষ আর্মির কাছে চলে যাবে। এখন যদি আর্মি উঠিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে দেশের পরিস্থিতি কী হতে পারে আপনারা কল্পনা করতে পারছেন? রাস্তায় হাঁটার মতো পরিস্থিতি থাকবে না। এই বিষয়টি অনেকে বোঝেন না। যদি গণ্ডগোল লাগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসই বলবেন, আর্মি নামাও। তখন বাধ্য হয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা এই পরিস্থিতিই সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। সামরিক বাহিনী সম্পর্কে ঘরোয়াভাবে যে কথা বলা যায়, প্রকাশ্যে তা বলা উচিত না। সেনাবাহিনী প্রধান একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর মর্যাদার সঙ্গে সেনাবাহিনীর মর্যাদাও জড়িত। কেউ যদি ঘরোয়া আলোচনায় কিছু বলে থাকেন, সেটা প্রকাশ করা ঠিক না। কেউ কি তাদের ঘরের কথা বাইরে প্রকাশ করেন? কোনো ব্যক্তির নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। সেই মতামত তো বাইরে প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। উনি তো কাউকে ডেকে নিয়ে যাননি। যাঁরা এই অপরিপক্ব কাজটি করেছেন, তাঁরাই এখন বলছেন, আমাদের ভুল হয়ে গেছে।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. বায়েজিদ সরোয়ার বলেন, ‘ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পক্ষে একাত্ম থাকে। ২০২৪-এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বা জুলাই বিপ্লবের সময় সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী বাঁকবদলকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আন্দোলনকারী জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। পরবর্তী সাত মাসে পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্বল অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও অন্তর্বর্তী সরকারের শক্তিশালী কার্যকর শক্তি হলো সেনাবাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিষোদগার অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত ঘটনা। আমরা জটিল ও কঠিন সময় পার করছি। এই সময় জুলাই বিপ্লবের অসাধারণ সাহসী ও বীরত্বসুলভ ভূমিকা পালনকারী কিছু তরুণ নেতার (বর্তমানে এনসিপি নেতা) সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে। এখন সব পক্ষের ধৈর্য ও বিচক্ষণতা কাম্য। এই ক্রান্তিলগ্নে প্রয়োজন ঐক্যের।’
মেজর জেনারেল (অব.) মো. নাঈম আশফাকুর চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের একটাই উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, ইন্টিগ্রেশন। আমাদের অবজেক্টিভ হওয়া দরকার ঐক্য। ভিন্নমত থাকতেই পারে। একেকজনের একেক ধরনের মতামত হবে—এটাই বিউটি অব ডেমোক্রেসি। কিন্তু দেশের ইউনিটিকে ধ্বংস করা কারোরই উচিত না। বিশেষ করে যাঁরা কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নেতৃত্বে আছেন। তিনি স্টুডেন্ড লিডার অথবা পলিটিক্যাল লিডার হলে তাঁর প্রতিটি বক্তব্যের প্রতিটি শব্দ জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ জনগণ তাঁর প্রতিটি শব্দ তাঁর অনুপস্থিতিতে ইন্টারপ্রিটেশন করবে এবং নিজেদের মতো করে বুঝে নেবে। এ জন্য তিনি কী বাক্য, শব্দ ব্যবহার করবেন, তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, কী কী পদ্ধতিতে হতে পারে, এসব দিক বিবেচনা করে মন্তব্য করা উচিত। বিশেষ করে পোস্ট জুলাই রেভল্যুশনের পরের যে অবস্থা, আমরা একটি জটিল সময় পার করছি, রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে, সব সংস্কার তো আর এত দ্রুত করা যাবে না। রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই দুর্বল অবস্থায় আছে, সেগুলোর সংস্কার দরকার। নির্বাচনও এগিয়ে আসছে। এই সময় সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক এবং ঐক্যবিনষ্টকারী বক্তব্য অপ্রত্যাশিত। কারো প্ররোচনায় এ ধরনের বক্তব্য এসেছে কি না সেটাও জানার বিষয়। আমার মতে, আমাদের ঐক্যের দিকেই এগিয়ে যাওয়া উচিত। অনৈক্যের দিকে নয়। ‘আমি’ ও ‘আপনি’ এই সব শব্দ বাদ রেখে এখন ‘আমরা’ বলতে হবে। ‘আমরা’ কখন, কিভাবে বলতে পারব তার ওপর কাজ করা উচিত। যা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত। সেনাবাহিনীকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য সাধারণ জনগণও মেনে নিচ্ছে না। আপনি একদিকে বলবেন সেনাবাহিনীই হচ্ছে জাতীয় ঐক্য ও দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য শেষ ভরসা, আবার এই সংস্থার দিকে আঙুল তুলছেন। এটা শুধু সেনাবাহিনীর দিকে আঙুল তোলা নয়, রাষ্ট্রের দিকেও আঙুল তুলছেন।”

অপপ্রচার থামাতে এক মাস আগেই অনুরোধ করেছিলেন সেনাপ্রধান
নিজস্ব প্রতিবেদক

সেনাবাহিনীর প্রতি আক্রমণাত্মক কথা না বলার আহ্বান আরো এক মাস আগেই জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি বলেছিলেন, ‘একটা কমন জিনিস আমি দেখতে পাচ্ছি, সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানের প্রতি বিদ্বেষ কারো কারো। কিন্তু কী কারণে, আজ পর্যন্ত আমি এটা খুঁজে পাইনি।’
ওই দিন সেনাপ্রধান আরো বলেন, ‘আমরা হচ্ছি একমাত্র ফোর্স, যেটা আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, দাঁড়িয়ে আছি প্ল্যাটফরমে।
কিন্তু সেনাপ্রধানের সেই অনুরোধেও ঐক্য বিনষ্টকারীদের অপচেষ্টা থামেনি।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বিস্ময়করভাবে নিজের ফেসবুক পোস্টে ‘ক্যান্টনমেন্টের চাপ’-এর কথা বলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। তবে হাসনাতের এই বক্তব্য তাঁর দলের অনেকেই সমর্থন করতে পারেননি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে। দেশ এখন একটি কঠিন ও জটিল সময় পার করছে।