স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে ও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে চাল বিতরণ করছে সরকার। এই কর্মসূচির আওতায় দেশের এক কোটি পরিবার প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে চাল পায়। এ খাতে বরাদ্দ না থাকলেও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে টিসিবিকে চাল সরবরাহ করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) পাঁচ মাসে এরই মধ্যে আড়াই লাখ টন চাল দেওয়া হয়েছে টিসিবিকে।
চাল বিতরণের তথ্য দিচ্ছে না টিসিবি
উবায়দুল্লাহ বাদল

জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল খালেক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তরের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে টিসিবির চাল বিতরণের তথ্য চেয়ে নির্ধারিত ছকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রথম দফায় গত ২৩ অক্টোবর চিঠি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু ওই চিঠির কোনো সাড়া দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই তথ্য চেয়ে গত ১২ নভেম্বর ফের তাগিদপত্র দেওয়া হয়।
বাণিজ্য সচিবকে লেখা ওই তাগিদপত্রে বলা হয়, সারা দেশে টিসিবি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারকে প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে মোট ৫০ হাজার টন চাল দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের গত পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) মোট আড়াই লাখ টন চাল এ খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। ওএমএস (টিসিবি) খাতে বিতরণ করা চালের সঠিক তথ্য সংরক্ষণের জন্য টিসিবির কার্ডধারী কতজন ভোক্তার অনুকূলে কী পরিমাণ চাল বিতরণ করা হয়েছে তার তথ্য প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হলো। তবে এ তাগিদপত্র পাওয়ার পরও তথ্য পাঠায়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আবারও চিঠি/তাগিদপত্র পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে এক কোটি পরিবারের কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। বাকি ৪৩ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। যেসব কার্ড এখনো স্মার্ট কার্ড হয়নি সেগুলোর বিপরীতে কী চাল বিতরণ করা হচ্ছে? হয়ে থাকলে ভালো কথা। কিন্তু যদি না হয়ে থাকে তাহলে সেই ৪৩ লাখ কার্ডের চাল কোথায় গেল? সে হিসাব বের করতেই আমরা বারবার চিঠি দিচ্ছি, কিন্তু কোনো জবাব পাচ্ছি না। আমরা শিগগিরই আবারও চিঠি দেব।’
খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সরকার গত বছর চাল কিনেছে কেজিপ্রতি ৪৬ টাকায়। কিন্তু এর অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৫৬ টাকা। চলতি অর্থবছরের গত পাঁচ মাসে এক কোটি পরিবারের মাঝে পাঁচ কেজি হারে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টন চাল টিসিবিকে দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কেজিপ্রতি ৫৬ টাকা দরে আড়াই লাখ টন চালের মূল্য এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ৪৩ লাখ কার্ডের বিপরীতে গত পাঁচ মাসে যে পরিমাণ চাল টিসিবিকে দেওয়া হয়েছে তার মূল্য ৬০০ কোটি টাকার বেশি। বাজেটে এ খাতের কোনো বরাদ্দ না থাকলেও ওএমএসের বরাদ্দ থেকে এ চাল দেওয়া হচ্ছে।
বাণিজ্যসচিব বিদেশ সফরে থাকায় তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে হোয়াটসঅ্যাপে পরিচয় দিয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সাড়া দেননি।
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি। তবে এক কোটি পরিবারের কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। বাকি ৪৩ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ অবস্থায়ও এক কোটি কার্ডধারী সবাইকে পণ্য দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি স্থানে ৩৫০ জনের জন্য টিসিবির পণ্য বরাদ্দ থাকে। পুরনো কার্ডেই এখনো পণ্য দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে স্মার্ট কার্ডে টিসিবির পণ্য দেওয়ার টার্গেট রয়েছে।’
সম্পর্কিত খবর

বিদেশি গণমাধ্যমে যেন দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার না হয় : তথ্য উপদেষ্টা
অনলাইন ডেস্ক

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘বিদেশি গণমাধ্যমে যেন দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার না হয়, সে বিষয়ে প্রেস উইংকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।’ এ সময় তিনি বিদেশের বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোর প্রেস উইংয়ের কাজের গতি বৃদ্ধির তাগিদ দেন।
রবিবার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণায়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
মাঠ পর্যায়ের প্রচার কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, জেলা তথ্য অফিসগুলোকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনগুরুত্বপূর্ণ বার্তা ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।
বিদেশের বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোর প্রেস উইংয়ের কাজের গতি বৃদ্ধির তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি গণমাধ্যমে যেন দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার না হয়, সে বিষয়ে প্রেস উইংকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। উপদেষ্টা মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর-সংস্থাগুলোকে গতিশীল ও যুগোপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারে ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত বাড়তি শুল্কহার প্রত্যাহার করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরেও পৃথক চিঠি পাঠানো হবে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, চিঠি দুটি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে পাঠানো হবে।
এর আগে, শনিবার (৫ এপ্রিল) বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দিন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন শুল্কহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ প্রধান উপদেষ্টা। তিনিই শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশের আমদানি পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার
অনলাইন ডেস্ক

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরো ৫২ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে মোট ১ হাজার ৯৫৪ জন।
রবিবার (৬ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১ জন করে রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৫৪ জন। এর মধ্যে ৬২.৫ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭.৫ শতাংশ নারী রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি। চলতি বছরে এযাবৎ ডেঙ্গুতে ১৪ জন মারা গেছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন। মারা গেছে ৫৭৫ জন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক নিয়ে বৈঠক শুরু
অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এই শুল্ক নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে।
আজ রবিবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা, পরিকল্পনা উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতা উপস্থিত রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস প্রকাশিত একটি তালিকায় দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর বাংলাদেশের শুল্ক ৭৪ শতাংশ। আর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। আগে বাংলাদেশি পণ্য গড়ে ১৫.৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে মার্কিন বাজারে প্রবেশ করত।
শুধু বাংলাদেশই নয়, বহু দেশেই যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছে। এশিয়ার অন্য দেশগুলোও নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের মুখে পড়েছে।
শুল্কহার নিয়ে গতকাল শনিবার জরুরি বৈঠক করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন শুল্কহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।