<p style="text-align:justify">ব্যাংক খাতে যে পরিমাণ মন্দ ঋণ তৈরি হয়েছে, তার প্রকৃত পরিমাণ দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব ছিল। কারণ বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। নামে-বেনামে ঋণ বের করা, বিদেশে অর্থপাচারসহ কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। ফলে ব্যাংক খাতের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নেমে গেছে শূন্যের কোঠায়, এখন যার চড়া মূল্য দিচ্ছে ব্যাংকসহ পুরো দেশ।</p> <p style="text-align:justify">গতকাল রবিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তার তেজগাঁও কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এতে এই তথ্য উঠে এসেছে।</p> <p style="text-align:justify">প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ব্যাংক খাতে যে পরিমাণ মন্দ ঋণ তৈরি হয়েছে, তার প্রকৃত পরিমাণ দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব ছিল। কারণ বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। নামে-বেনামে ঋণ বের করা, বিদেশে অর্থপাচারসহ কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। ফলে ব্যাংক খাতের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নেমে গেছে শূন্যের কোঠায়, এখন যার চড়া মূল্য দিচ্ছে ব্যাংকসহ পুরো দেশ।</p> <p style="text-align:justify">শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট ছিল। আর এই প্রভাব ব্যাংকিং খাতের সংকটকে আরো গভীর করেছে। আলোচ্য সময়ে যে পরিমাণ ঋণ মন্দ বা বিপর্যস্ত হয়েছে, তা ১৪টি ঢাকা মেট্রো সিস্টেম অথবা ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণের খরচের সমতুল্য। ক্রমাগত ঋণখেলাপি ও হাই প্রফাইল কেলেঙ্কারি আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে এবং মূলধনকে উৎপাদনশীল খাত থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">এতে আরো বলা হয়েছে, প্রবাসে কর্মী পাঠাতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো গত ১০ বছরে ভিসার জন্য হুন্ডির মাধ্যমে ১৩.৪ লাখ কোটি টাকা লেনদেন করেছে। এই টাকা ঢাকা এমআরটি লাইন-৬ (উত্তরা থেকে মতিঝিল) নির্মাণ ব্যয়ের চার গুণ। সিন্ডিকেট এবং এই শোষণমূলক নিয়োগের কারণে অভিবাসী শ্রমিকরা ন্যায্য কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং দেশে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমেছে।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমরা দেশের আর্থিক খাতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। সামনে খেলাপি ঋণ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে, এখন যা সাড়ে ১২ শতাংশ। আগামী মাসে তা ১৫ শতাংশ, এরপর ১৭ শতাংশ হয়ে ধীরে ধীরে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে। এই খেলাপি আগেই হয়ে আছে। এখন হিসাবে তা আসবে। এটা কমিয়ে আনতে আমরা কাজ শুরু করেছি।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, সামনে খেলাপি ঋণ যেটা দাঁড়াবে তার অর্ধেক বা আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে এস আলম, সাইফুজ্জামানসহ (সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী) বড় কয়েকটি গ্রুপ ও ব্যবসায়ীর। ২০১৭ সালের পরে এসব ঋণ নেওয়া হয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পাচার করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">শ্বেতপত্র হস্তান্তরকালে আরো উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন সাথী, সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ প্রমুখ।</p>