আত্মরক্ষার সরঞ্জাম ব্যবহারে অনুমতি নেই বিদ্যমান আইনে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আত্মরক্ষার সরঞ্জাম ব্যবহারে অনুমতি নেই বিদ্যমান আইনে
প্রতীকী ছবি

আত্মরক্ষার জন্য কেউ চাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারেন। তবে আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমতি বা লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া অনেক জটিল ও খরচসাপেক্ষ। সাধারণ মানুষের জন্য যা প্রায় অসম্ভব। বিশ্বের অনেক দেশেই আত্মরক্ষায় মারণাস্ত্র নয় এমন ডিভাইস যেমন ‘ইলেকট্রিক টেজার’ বা  ‘টেজার গান’ অনেক জনপ্রিয়।

তবে বাংলাদেশের আইনে এ বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ না থাকায় কোনো ডিভাইস বহন করার অনুমোদন নেই। 

সম্প্রতি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন অনেকে। চুরি, ছিনতাই ও ধর্ষণের কিছু ঘটনা ও কিছু ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষামূলক গ্যাজেট বহনের বিষয়টি আলোচনা এসেছে।

 

জানা গেছে, আত্মরক্ষায় আক্রমণকারীকে হত্যাও বিশেষ ক্ষেত্রে আইনসিদ্ধ। তবে এই বিষয়টি অনেকগুলো ‘যদি’ দিয়ে আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আত্মরক্ষায় কেউ কোনও ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন কিনা বা সঙ্গে কিছু রাখতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই আইনে। 

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কোনো ডিভাইস সঙ্গে রাখতে পারবেন না তা আইনে তা বলা নেই।

আবার রাখতে পারবেন তাও বলা নেই। এ বিষয়টিতে অস্পষ্টতা রয়েছে। আইনে যেসব বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে, সেগুলো করা যায় না। দেশের ১৮৬০ সালের প্রচলিত দণ্ডবিধির ৯৬ ধারা থেকে ১০৬ ধারা পর্যন্ত আত্মরক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরমধ্যে দণ্ডবিধির ৯৬ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার জন্য কোনও অধিকার প্রয়োগ করে থাকলে কোনও কাজই আইনে অপরাধ বলে গণ্য হবে না।
তবে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে নিজের সঙ্গে কোনও সরঞ্জাম রাখার কথা এই ধারাগুলোর কোনোটিতেই উল্লেখ নেই।

১০৬ ধারায় প্রয়োজনে জনতার ওপরে গুলি চালানোর কথা বলা হয়েছে। এতে ইঙ্গিত করে, অনুমোদিত আগ্নেয়াস্ত্রের কথা। তবে অন্য কোনও আত্মরক্ষা সামগ্রীর কথা বলা হয়নি। এ বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। তাই কোনও ডিভাইস বা অন্য কিছুই বহন করা আইনত বৈধ না।

১০০ ধারায় আছে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে আপনি আত্মরক্ষা করতে গিয়ে অন্য কারও মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারেন। আর এগুলো হলো নিজের নিশ্চিত মৃত্যু ঠেকাতে, মারাত্মক আঘাত, ধর্ষণ বা অস্বাভাবিক কাম লালসা থেকে বাঁচতে বা অপহরণের হাত থেকে রক্ষা পেতে। যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে এক্ষেত্রে পরবর্তীতে আত্মরক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে আদালতে প্রমাণ করতে হবে।

তাঁরা বলছেন, ১০১, ১০২ ও ১০৩ ধারাতেও বলা হয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার জন্য একজন মানুষ বলপ্রয়োগ করতে পারবেন। তবে যেকোনও ডিভাইসকে আমাদের দেশের অস্ত্র আইনে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে অস্ত্রের সংজ্ঞায় ফেলা যায়। তাই টেজারগানসহ এসব ডিভাইস ব্যবহার করা আইনতভাবে বৈধ না।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ
সংগৃহীত ছবি

জাতিসংঘের একাধিক প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ন্যায্য লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) তুরস্কে ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’ এর ফাঁকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম এএ খানের সঙ্গে এক বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এই আশ্বাস দিয়েছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠকে দুই উপদেষ্টা সাম্প্রতিক আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের জনগণের দুর্দশায় গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

তারা রোহিঙ্গা সংকট ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসির অবস্থানের জন্য সংস্থাটির প্রশংসা করেন।

দুই উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার ও সংকটের চূড়ান্ত সমাধানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও আইসিসির মধ্যে সব ধরনের সম্পৃক্ততার দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অটল অবস্থানের প্রশংসা করেন আইসিসির প্রসিকিউটর করিম এএ খান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোম সংবিধি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন।

বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও আইনজ্ঞদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে দৃশ্যমান সহযোগিতা অন্বেষণে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

উভয়পক্ষই আগামী দিনে বিদ্যমান সম্পৃক্ততার মাত্রা আরো বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং উভয়পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

‘বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ শুক্রবার তুরস্কের আনাতোলিয়ায় তিন দিনব্যাপী ‘আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরাম (এডিএফ)-২০২৫’ শুরু হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ফোরামের আয়োজন করেছে।

বিশ্বনেতা, নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়িক বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের একত্রিত করেছে এডিএফ। এই ফোরামের মাধ্যমে কীভাবে কূটনীতির পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া যায় এবং একটি বিভক্ত বিশ্বে সম্মিলিত পদক্ষেপের একটি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়, তা অনুসন্ধান করা হবে।

২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, ৫০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৭০ জনেরও বেশি মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন সিনিয়র প্রতিনিধির পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ ৪ হাজার জনেরও বেশি অতিথি ফোরামে অংশ নিয়েছেন।

মন্তব্য
সাবেক সিআইডিপ্রধান

সহকর্মীদের যৌন হয়রানির প্রমাণের পরও ছিলেন বহাল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সহকর্মীদের যৌন হয়রানির প্রমাণের পরও ছিলেন বহাল
মোহাম্মাদ আলী মিয়া। ফাইল ছবি

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ দোসর ও গোপালগঞ্জের পুলিশ লীগের ক্ষমতাধর সদস্য পুলিশের অপরাধ বিভাগকে (সিআইডি) ব্যবহার করেন বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া সিআইডির সাবেক প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মাদ আলী মিয়া। 

চাকরি জীবনে ওয়ানম্যান আর্মি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নানা অপকর্মে জড়িত দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তার নারী পুলিশ সদস্যদের যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। যৌন হয়রানির প্রমাণ হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তৎকালীন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।

বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে গেছেন তিনি।

ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে নাজেহাল করতে, শেখ হাসিনাকে খুশি করতে সিআইডির প্রভাব খাটিয়ে ২০২৩ সালের শুরুর দিকে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি। 

মামলা বাণিজ্য করে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়া মোহাম্মাদ আলী ঘুষ আদায়ে বিশেষ সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সেই সিন্ডিকেটের তিনি প্রধান ছিলেন।

আলোচিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় কারসাজিতে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

গত ১৩ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মোহাম্মাদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে, দুদকের একাধিকবার অভিযোগ জমা পড়লেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়নি।

সিআইডির ক্ষমতাধর সাবেক এই কর্মকর্তা দেশে লুকিয়ে আছেন না বিদেশে পালিয়ে গেছেন তার কোনো হদিস নেই সরকারের কোনো সংস্থার কাছে।

পুলিশ বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৫ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হলেও সাবেক সিআইডি প্রধান এখনো গ্রেপ্তার হননি। 

পাসপোর্ট বাতিল, বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও অবৈধ সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া হয়নি। একটি বিশেষ মহল তাকে রক্ষার চেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়ে ঘুষ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, অনিয়ম-দুর্নীতি, সিআইডি সদর দপ্তরে নিজ বলয় তৈরি, আইনবহির্ভূত কার্যক্রম, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নিজের পৈতৃক সম্পদে পরিণত করেছিলেন সংস্থাটির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। 

পুলিশের এই অতিরিক্ত আইজিপি সম্প্রতি বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন সিআইডির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা।

 

এতদিন প্রভাব খাটিয়ে যাদের ক্ষমতা খর্ব করে রেখেছিলেন তিনি। ড. মোহাম্মাদ ইউনূসকে মামলার জালে জড়িয়ে নাজেহাল করার কারিগর তিনি। বাড়ি গোপালগঞ্জ হওয়ায় পুলিশের শীর্ষস্থানগুলোতে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রভাব খাটিয়ে। 

সিআইডিতে প্রচলিত রয়েছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটিকে ‘মগের মুল্লুক’ বানিয়ে রাখতেন। ধরাকে সরাজ্ঞান করা মোহাম্মদ আলী মিয়া দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।

দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, বিরোধী মতের লোকজনকে জিম্মি করে ক্ষমতার চরম অপব্যবহার ছিল তার অবৈধ অর্থের উৎস।

অভিযোগ রয়েছে, মামলা রুজু, অভিযান, তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে নিষ্পত্তি পর্যন্ত আইনবহির্ভূতভাবে নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতেন সাবেক সিআইডি প্রধান। তার অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ‘টুঁ’ শব্দ করারও সুযোগ ছিল না। 

তার এই সিন্ডিকেটের ‘মিডল ম্যান’ ছিলেন সিআইডি সদর দপ্তরে বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মেট্রো-পূর্ব) এ, কে, এম এমরান ভুঞা। দুই বছর সিআইডিপ্রধান থাকাকালে তিনি কোনো নিয়মনীতিকেই পরোয়া করেননি। পিছপা হননি বিগত সরকারের ‘প্রেসক্রিপ্টেড’ আজ্ঞা পালনে। 

বিশেষ করে ওই সরকারের ‘অপছন্দ’ ব্যক্তিদের শায়েস্তা করতে নানা কূটকৌশলে সিআইডিকে ব্যবহার করতেন তিনি। তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিতেন। 

আর অবৈধ উপার্জনের অর্থ দিয়ে নিজের ক্ষমতা বলয় সবসময় টিকিয়ে রাখতেন। অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদ আলী মিয়া নিজের সেই সিন্ডিকেটে কতিপয় অধস্তন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদেরও যুক্ত করেন। তাদের দিয়ে কয়েকশ ভুয়া অভিযোগ এনে তদন্ত করার নামে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে মোহাম্মদ আলী মিয়ার অবৈধ সম্পদের পাহাড়ের তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর আফতাবনগর, বাড্ডা, মিরপুর, পূর্বাচলসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এসব জায়গায় প্লট, ফ্ল্যাটসহ নানা সম্পদ রয়েছে তার।

লন্ডনে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা, মালয়েশিয়া ও দুবাইতেও ব্যবসা রয়েছে। লন্ডনে এক বাংলাদেশির রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অংশীদার তিনি। মোহাম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে আফনান লাবিব লন্ডন, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের ব্যবসা দেখভাল করেন।

তিনি মালয়েশিয়া, দুবাই ও লন্ডনে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন। অনুসন্ধানে ঢাকায় মোহাম্মদ আলীর বেশকিছু দামি জমির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রাজধানীর আফতাবনগর-সংলগ্ন আনন্দনগরে ১২.৩৭ শতক জমির একটি প্লট।

এটি বাড্ডা মৌজার ৪৪৩২৫ খতিয়ানের জমি। দাগ নম্বর ১৮১৩০। মিরপুর বাউনিয়া মৌজায় ৪০৭২৩ নম্বর খতিয়ানের ৩০ নম্বর দাগে ৮.২২ শতক জমি রয়েছে তার। পূর্বাচলে ৫ কাঠা ও কেরানীগঞ্জে ৫ কাঠার প্লট রয়েছে। এ ছাড়া বেনামে একাধিক ফ্ল্যাটও রয়েছে।

এদিকে, সাবেক সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। গত ১৩ মার্চ মোহাম্মদ আলী মিয়া ও তার দুর্নীতিতে সহায়তাকারী পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। 

এই তালিকায় সিআইডির প্রশাসন শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম, বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মহানগর পশ্চিম) এ কে এম ইমরান ভূঁইয়া, সাইবার ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, পরিদর্শক মানব শাহাজাদা ও পরিদর্শক মনিরুজ্জামান রয়েছেন। 

দায়িত্ব থাকার সময় গত দু’বছরে তার নির্দেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় মূল আসামিদের নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলাটি অন্যতম। 

তা ছাড়া অনেক মামলায় তদন্তে নাম আসা আসামিদের বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়া, সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও মামলায় আসামি করা, এমন অনেক অভিযোগ আছে মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। তার অনৈতিক নির্দেশনা মেনে যেসব কর্মকর্তা কাজ করতে রাজি হননি তাদের হয় বদলি অথবা ডেকে নিয়ে হেনস্তা করতেন। 

অনুসন্ধান, তদন্ত, আসামি গ্রেপ্তার সবই মোহাম্মদ আলীর পছন্দ অনুযায়ী করতে হতো। ডিআইজি থেকে পরিদর্শক পর্যন্ত কারও কথা বলার ক্ষমতা ছিল না। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ২০২৩ সালের শুরুর দিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী।

ড. ইউনূসকে হয়রানি না করার জন্য কিছু কর্মকর্তা বাধা দিলে মোহাম্মদ আলী তাদের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানান এবং সিআইডির মানিলন্ডারিং শাখায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালানোর চিঠি ইস্যু করেন।

গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট মোহাম্মদ আলী সিআইডি কার্যালয়ে এসে ড. ইউনূসের বিষয়ে অনুসন্ধানসংক্রান্ত সব কাগজপত্র নিয়ে যান। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় প্রথম দিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন বিসিএস ২৪ ব্যাচের পদোন্নতিবঞ্চিত পুলিশ কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলাম। তিনি ওই মামলায় মোহাম্মদ আলীর কথামতো বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

অথচ গুরুত্বপূর্ণ ওই মামলায় সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানুল ইসলাম অনেক দূর তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যান। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় কার কী ভূমিকা ছিল সবকিছু তিনি বের করেন দীর্ঘ তদন্তে। 

২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িত হিসেবে মামলার তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রভাবশালী ১৪ কর্মকর্তার নাম উঠে আসে সিআইডির তদন্তে। 

মোহাম্মদ আলী মিয়ার অন্যতম সহযোগী ও ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন বিসিএস ২৭ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান ভূইয়া। 

এই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় এএসপি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তার বিরুদ্ধে একটি বিদেশি রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করার অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।

নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এবং বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দমনে পারদর্শিতার খতিয়ান তুলে ধরে বিভাগীয় মামলা থেকে রেহাই পান তিনি। এরপর পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিও বাগিয়ে নেন ইমরান। 

সাবেক সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলীর সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য ছিলেন এই ইমরান। তাকে সিআইডিতে নিয়ে আসেন মোহাম্মদ আলী নিজে। 

সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটে পদায়ন করা হলেও তিনি আরও দুটি ইউনিটের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ আলীর কৃপায়। মূলত ইমরান ভূইয়া ছিলেন মোহাম্মদ আলীর ঘুষের টাকার ক্যাশিয়ার।

মন্তব্য

আলোচিত-১০ (১১ এপ্রিল)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

লোডশেডিং হলেও গ্রামে নয়, প্রথমে ঢাকায় : ফাওজুল কবির

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
লোডশেডিং হলেও গ্রামে নয়, প্রথমে ঢাকায় : ফাওজুল কবির
ছবি: কালের কণ্ঠ

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‌‌‘রমজানে লোডশেডিং ছিল না। তবে কোথাও কোথাও বিভিন্ন সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ ছিল না। নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চলছে।’

তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এবার গরমে অসহনীয় লোডশেডিং হবে না।

এবার লোডশেডিং শুধু গ্রামে হবে না, যদি লোডশেডিং করা হয়, তাহলে প্রথমে ঢাকায় করা হবে।’

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি ট্রেন, বিদুৎসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাব দেন ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, ‘কোচ ও ইঞ্জিন সংকটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে।

কোচ ও ইঞ্জিন বাড়লে চট্টগ্রাম-চুয়েটসহ বিভিন্ন স্বল্প দূরত্বের জায়গায় কমিউটার ট্রেন সার্ভিস ব্যবস্থা করা হবে। ট্রেনের সার্ভিস বাড়াতে ইঞ্জিন ও কোচের সংখ্যা বাড়াতে হয়। এজন্য আমরা চেষ্টা করছি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমিও চীনে গিয়েছিলাম।
সেখানে চীনের ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টারের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে এবং আমরা আলোচনা করেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ২০০ কোচের জন্য একটি অর্ডার দেওয়া আছে। একটি দল এ মাসে যাবে। যাতে এ কোচগুলো আসা শুরু হয়। লোকোমোটিভ কেনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।

এত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা কমিউটার ট্রেন চালু করেছি। একটি জয়দেবপুর-ঢাকা, আরেকটি ভৈরব-ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা।’

জলাবদ্ধতার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজের কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে যেসব খাল পরিষ্কার করা হয়েছে সেগুলোতে আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এটা থেকে বুঝা যাচ্ছে আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারিনি। বিভাগীয় কমিশনার মতবিনিময়সভা করবে এলাকায় এলাকায়। আমরা চেষ্টা করছি, ৩০ হাজার ডাস্টবিন দেওয়ার জন্য। চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন বিনগুলো বসাবে।’

উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘মতবিনিময়সভায় উদ্বুদ্ধ এবং বিন দেওয়ার পরও যদি ময়লা যত্রতত্র ফেলে তাহলে মোবাইল কোর্ট করা হবে। জলাবদ্ধতা যে এবার হবে না, তা নয়; বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করবে।’

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ