আইকিউএয়ারের প্রতিবেদন

বায়ুদূষণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ, শহরে তৃতীয় ঢাকা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বায়ুদূষণে দ্বিতীয় বাংলাদেশ, শহরে তৃতীয় ঢাকা
ফাইল ছবি

গত বছরে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত ছিল আফ্রিকার দেশ চাদ ও বাংলাদেশের বাতাস। আজ মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

১৩৮টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৪০ হাজার নজরদারি স্টেশন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আইকিউএয়ার প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

আইকিউএয়ার জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে বছরজুড়ে ১৫ গুণ খারাপ অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ ও চাদের বায়ু।

মাত্র সাতটি দেশ ডব্লিউএইচওর মানদণ্ড বজায় রাখতে পেরেছে। সেগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দ্য বাহামাস, গ্রানাডা, এস্তোনিয়া ও আইসল্যান্ড।

উদ্বেগজনক দূষণের দেশের তালিকায় চাদ ও বাংলাদেশের পরেই রয়েছে পাকিস্তান, ডিআর কঙ্গো ও ভারত। বিশ্বের ২০টি সবচেয়ে দূষিত শহরের মধ্যে ১২টিই ভারতের।

বায়ুর মান নির্ণয় নিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকায় অস্পষ্টতা রয়েছে। উন্নয়নশীল অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও কনস্যুলেট ভবনে স্থাপিত বায়ুমান পর্যবেক্ষণ সেন্সরের ওপর নির্ভর করত।

তবে বাজেট স্বল্পতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সম্প্রতি এ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র তার বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

এটি বিশ্বব্যাপী বায়ু মান পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমের জন্য একটি ‘বড় ধাক্কা’ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তথ্যের সীমাবদ্ধতার কারণে ২০২৩ সালের তালিকা থেকে চাদকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে ২০২২ সালে দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যেখানে সাহারা মরুভূমির ধুলা ও অনিয়ন্ত্রিত ফসল পোড়ানো অন্যতম প্রধান কারণ ছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, পিএম২.৫-এর গড় বার্ষিক মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়। গত বছর চাদে ক্ষুদ্র ও বিপজ্জনক বায়ুবাহিত কণার গড় মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৯১.৮ মাইক্রোগ্রাম, যা ২০২২ সালের তুলনায় সামান্য বেশি।

এদিকে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। গেল বছর ঢাকার বায়ুতে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ৭৮ মাইক্রোগ্রাম। ২০২৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ৮০.২ মাইক্রোগ্রাম।

এ তালিকায় শীর্ষে থাকা নয়াদিল্লির বাতাসে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ৯১.৮। ২০২৩ সালে তা ছিল ৯২.৭ মাইক্রোগ্রাম।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা দেড় কোটি, ৮০ শতাংশই কিশোর-তরুণ

মোবারক আজাদ
মোবারক আজাদ
শেয়ার
দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা দেড় কোটি, ৮০ শতাংশই কিশোর-তরুণ
প্রতীকী ছবি

দেশে মাদকসেবী প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে এক কোটি মাদকাসক্ত এবং বাকি ৫০ লাখ মাঝেমধ্যে মাদক সেবন করে। মাদকাসক্তদের ৮০ শতাংশই কিশোর-তরুণ। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাদকাসক্তদের ৩০ শতাংশ শুধু নেশার খরচ জোগাতে অপরাধ ও অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) এসব তথ্য জানায়। 

আর দেশে দেশে যত রকমের অপরাধের ঘটনা ঘটছে তার বড় অংশ ঘটছে মাদকসংশ্লিষ্টতায়। মাদক সেবনের টাকা জোগানো ও কেনাবেচা নিয়ে সংঘটিত অপরাধ এখন সর্বত্র।

মাদকাসক্তি আধুনিক সময়ের ভয়ংকর ব্যাধিগুলোর অন্যতম এবং দিনে দিনে এই সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মাদকের নেশার টাকা জোগাতে মাদকসেবীরা মা-বাবা, ভাই-বোনের মতো আপনজনকেও খুন করতে দ্বিধা করছে না।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ওপরও হামলা চালাচ্ছে মাদকাসক্তরা। সম্প্রতি বেশ কিছু পারিবারিক অপরাধমূলক ঘটনা ও পুলিশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদকাসক্তির বহু কারণের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় অন্যতম। এ ছাড়া ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা, দারিদ্র্যের কশাঘাত, বেকারত্বের নৈরাশ্যও দায়ী।

মাদকসেবীদের মধ্যে একটি বড় অংশ বেকার। তারা মাদকের টাকা জোগাড় করতেই ঘরে-বাইরে চুরি-ছিনতাই ও খুনখারাবির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে অহরহ। রাস্তায় মাদকসেবীদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন অমান্য করার মতো ঘটনাগুলোও বাড়ছে।

ফলে সড়ক দুর্ঘটনা, অকালমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, দেশে প্রায় ৩২ ধরনের মাদক সেবন চলে। মাদকের কারণে সার্বিকভাবে কী পরিমাণ অপরাধ ঘটছে, তার কোনো একক জরিপ না থাকলেও মাদকদ্রব্য জব্দ ও আসামি গ্রেপ্তারের পরিসংখ্যান বলছে, মাদকের বিস্তার দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে এবং প্রতিনিয়িত দেখা যাচ্ছে মাদকসংশ্লিষ্টতার কারণে ঘটছে চাঞ্চল্যকর অপরাধ। মাদকাসক্ত অনেকে নেশার টাকা না পেয়ে পরিবারের সদস্যদেরও খুন করছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, একটি পরিবারে একজন সদস্য মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে সেই পরিবারে নেমে আসে বিভীষিকাময় পরিবেশ। মাদককে ঘিরে যেসব সমস্যা তৈরি হয় তা একটি পরিবারকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে নিয়ে যায়। তছনছ হয়ে পড়ে সাজানো সংসার। মাদক সমস্যা পারিবার থেকে ছড়িয়ে পড়ে সমাজে। শেষ পর্যন্ত তা রাষ্ট্রীয় সমস্যায় পরিণত হয়।

লেখক ও মনোচিকিৎসক এম এ মোহিত কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি মনে করি, মাদক হচ্ছে মস্তিষ্কের রাসায়নিক দানব। কোনো কোনো মাদক ব্রেইনে ঢুকে এক বছর পর্যন্ত অ্যাক্টিভ ফর্মে থাকে এবং চিন্তা-ভাবনা, আবেগ-অনুভূতি সব নিয়ন্ত্রণ করে। এ নিয়ন্ত্রণ সুশৃঙ্খল থাকে না, বিশৃঙ্খল করে দেয়। ব্যক্তি সহিংস হয়ে পড়ে, নিষ্ঠুর আচরণ শুরু করে। এক পর্যায়ে মাদকাসক্তরা রাগের বশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খুনখারাবিও করতে দ্বিধা করে না। মা-বাবার মুখে বালিশ চাপা দিতে পারে, তাদের ওপর ছুরি-বঁটি চালাতে পারে। সাধারণ মানুষ এসব কর্ম করতে পারে না। অনেকে বলেন, আমার সন্তান এমন (বিশৃঙ্খল আচরণ) করছে, তার ভেতর দানব ঢুকে গেছে, সেটা বের করে দেন। এই সমস্যা বর্তমানে অনেক পরিবারেই রয়েছে।’

এই মনোচিকিৎসক আরো বলেন, ‘কোথাও কোথাও দেখা যায় মাদকাসক্তরা পুলিশের ওপর হামলা করছে। সুতরাং সবাইকে এর প্রতিরোধে, প্রতিকারে এগিয়ে আসতে হবে এবং আইনের সুরক্ষা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সার্বিক অপরাধ কমে আসবে।’

ঢাকার মানসিক ও মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলর নুসরাত সাবরিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেশির ভাগ পরিবার মাদকসেবীর কথা চেপে রাখে। এ নিয়ে কারো সঙ্গে বলতে চায় না বা চিকিৎসার প্রয়োজন মনে করে না। এভাবেও কিন্তু মাদকসেবী দিন দিন বাড়ছে।’

সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ড : গত ১৪ মার্চ টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মহিষমারা ইউনিয়নে নেশার টাকা না দেওয়ায় মাদকাসক্ত ছেলে রাজিবের হাতে মা রেজিয়া খাতুন (৫০) খুন হন। ৮ মার্চ যশোর জেলায় পারিবারিক কলহের জেরে শরিফুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করেন তাঁর মাদকাসক্ত ছেলে মো. রমেন (২১)। ৪ মার্চ রংপুরের মিঠাপুকুরে মাদকাসক্ত ছোট ভাই শরিফুল ইসলামের (৪০) হাতে বড় ভাই আতিয়ার রহমানের (৫৫) মৃত্যু হয়। ৬ মার্চ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার বেলছড়িতে বাবা আব্দুর রহিম (৭০) এবং মা আমেনা বেগমকে (৬০) কুপিয়ে জখম করেন মাদকাসক্ত ছেলে আবুল কালাম (৩৮)।

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার শহরতলির জগন্নাথপুর গ্রামে সাত বছর বয়সী ছেলে মাহিদকে মারধর করে হত্যা করেন মাদকাসক্ত বাবা খোকন মিয়া।

গত ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে মাদক সেবনের টাকা না দেওয়ায় ছেলে রিফাত (১৮) তাঁর বাবা শফিকুল ইসলামকে (৪৫) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। এ ছাড়া ১ ডিসেম্বর মাগুরার আঠারোখাদা গ্রামে চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেয়ে মাদকাসক্ত ছেলে মো. মফিজুর তাঁর বাবাকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে বাবা সুরমান শেখের মৃত্যু হয়।

মনোচিকিৎসকরা বলছেন, মাদক সেবনে শারীরিক ও মানসিক উভয় প্রকার ক্ষতি হয়। নিয়মিত মাদক সেবনে ব্যক্তির সুস্থ চিন্তা-চেতনা সম্পূর্ণ লোপ পায়। এ কারণে কোনো ঘটনা, পরিস্থিতি কিংবা কোনো বিষয়ে সঠিক বিচার-বিবেচনা, মূল্যায়ন এবং অনুধাবন করার ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকে না। এরই পরিণামে সন্তানের হাতে মা-বাবা খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানি নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদকসেবীদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ। তাদের অনেকের মধ্যে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। ফলে তারা মাদক সেবনের টাকা সংগ্রহ করতে পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা কিংবা ছিনতাইকালে সামান্য টাকার জন্য খুনের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের একাংশ মাদক সেবনের টাকা জোগাড়ে চুরি-ছিনতাইসহ খুনের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যও বলছে, খুন, ধর্ষণ, পরকীয়া, দাম্পত্য কলহ, অর্থ লেনদেন, হত্যা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম সব কিছুর মূলেই রয়েছে এই মাদকের নেশা।

মাদকে শারীরিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারের কর্মকর্তারা জানান, পুরনো মাদকের পাশাপাশি নতুন অনেক মাদকও দেশে আসছে। নতুন মাদকের মধ্যে আইস সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, মানসিক অবসাদ, বিষণ্নতা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভারের জটিলতা হতে পারে। এভাবে প্রতিটি মাদকই মানবদেহের ভয়াবহ ক্ষতির কারণ।

মাদক নিরাময় কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা। এ ছাড়া পারিবারিক কলহ, বেকারত্ব, প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির অসামঞ্জস্যতা, বিবাহবিচ্ছেদে সংসার ভেঙে যাওয়া, প্রেম ও চাকরিতে ব্যর্থতা থেকে হতাশা ইত্যাদি কারণেও যুবসমাজ মাদকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। এভাবে স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক পৌঁছে গেছে অনেক আগ থেকেই। বেশির ভাগ মাদক ব্যবহারকারী বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়াকে দোষারোপ করে। প্রথমবারের মতো মাদক গ্রহণের জন্য কৌতূহল অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে কাজ করে।

এদিকে বিভিন্ন এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চললেও অভিযান চালানো হয় না বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। ফলে দেশে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ মাদক গ্রহণের স্থানে পরিণত হচ্ছে বলে জনপরিসরে আলোচনা আছে।

অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। মাদকাসক্তি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। মাদকের এই নীল দংশন থেকে যুবসমাজকে বাঁচাতে হলে গড়ে তুলতে হবে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা। এতে সমাজ, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া দেশে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে মাদকের সরবরাহ চেইন বন্ধ করতে চোরাচালানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির আভাস

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির আভাস
সংগৃহীত ছবি

ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি ঝরতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। 

সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

আরো পড়ুন
মহেশপুর সীমান্তে ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

মহেশপুর সীমান্তে ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

 

এতে আরো বলা হয়েছে, এ সময় আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে।

সেই সঙ্গে পশ্চিম/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।

এদিকে সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৬৫ শতাংশ। 
 

মন্তব্য

একনজরে আজকের কালের কণ্ঠ (২১ মার্চ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

ভোট পেছানোর কারণ নেই : ড. ইউনূস

বাসস
বাসস
শেয়ার
ভোট পেছানোর কারণ নেই : ড. ইউনূস
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক। ছবি : পিআইডি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।’

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত এ তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।

তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এই বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।

আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই।’ পাশাপাশি, তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’

রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

তবে দলের যে সব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।’

তিনি আরো জানান, জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সম্ভাব্য অপরাধের অভিযোগ থাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করার বিষয়টি সরকার বাতিল করেনি। ‘এটি এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে’ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরো জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে।

সরকারের নীতিনির্ধারণে দিকনির্দেশনা দিতে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করা ও স্বাক্ষরের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতা আতাউল্লাহর গ্রেপ্তারকে সরকারের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতির ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে প্রশংসা করেন।

কর্মকর্তারা আরো জোর দিয়ে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মির সঙ্গে সরকারের আরো কার্যকর যোগাযোগের প্রয়োজন।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, ঢাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সহায়তা ত্বরান্বিত করতে কাজ করছে এবং আসন্ন জাতিসংঘের বিশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করার আশা করছে।

ড. কমফোর্ট ইরো ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানোর মোকাবেলায় সহায়তার আশ্বাস দেন।

অধ্যাপক ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষার কথা জানান। তবে, তিনি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশবিরোধী অপতথ্য প্রচারের একটি বড় অংশ ভারতীয় গণমাধ্যম থেকেই আসছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ