দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি অনুকূল না থাকলে বৈদেশিক বিনিয়োগ ব্যাহত হবে উল্লেখ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘আন্দোলনের নামে সহিংসতা ও ভাঙচুর হলে বিনিয়োগকারীরা শঙ্কায় পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, তা বাস্তবায়িত হলে ক্ষমতার পালাবদলেও রাষ্ট্রীয় নীতিমালার পরিবর্তন হবে না। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হলে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।’
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর এফডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফাহমিদা খাতুন।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ কর আরোপের প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ। তবে ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কনীতি আমাদের জন্য ওয়েকআপ কল। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর আমরা বেশি সময় কর সুবিধা পাব না।
তাই আমাদের বাণিজ্যিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তুতি খুবই জরুরি।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অতিরিক্ত শুল্ক গ্রহণে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ বাংলাদেশের জন্য কিছুটা স্বস্তির। এই সময়ে সম্ভাব্য ঝুঁকি নিরসনে বাণিজ্য কূটনীতি জোরদার ও অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রশাসন শুল্কহার বৃদ্ধিতে কোনো নিয়ম-কানুনের ধার ধারেনি।
ফলে সারা বিশ্বে এখন শুল্ক-ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক আরোপ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশও এই চ্যালেঞ্জের বাইরে নয়।’
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ঘোষিত নতুন শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও অনিশ্চয়তা কাটেনি। তবে এই স্থগিতাদেশের পর বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা বন্ধ হওয়া ক্রয়াদেশ ফিরে পাওয়া শুরু করছে।
’
অন্যদিকে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের কারণে তাদের ক্রয়াদেশ স্থগিত হচ্ছে। চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে। এ ছাড়া চীনা বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাবে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের এই কঠিন অবস্থার মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা ফিরে পেলে আমাদের রপ্তানি খাত আরো বেশি প্রসারিত হবে, বলে জানান তিনি।