<p>ডি ব্রগলি বললেন, সকল বস্তুই তরঙ্গ। শ্রোডিঙ্গার দিলেন সেই বস্তুতরঙ্গের সমীকরণ। চিরায়ত তরঙ্গের মতো বস্তুতরঙ্গে নিয়ে এলেন একটা ফাংশন— ψ (শাই)। এটা দিয়েই পরমাণুর ভেতরে নির্দিষ্ট সময়ে ইলেকট্রন-তরঙ্গের অবস্থান ও প্রকৃতি বের করার চেষ্টা করলেন। ψ পরমাণুর কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু— তা বলে।</p> <p>খেয়াল করুন, এখানে প্রবাবিলিটি বা সম্ভাবনা তত্ত্ব ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ, কোয়ান্টাম দুনিয়ায় পর্যবেক্ষণের আগে কোনো কিছুই সুনির্দিষ্ট নয়। সম্ভাবনাই তরঙ্গ ফাংশনের আসল সৌন্দর্য। যেই মুহূর্তে পর্যবেক্ষণ করা হবে, সেই মুহূর্তে আমরা একটা সুনির্দিষ্ট অবস্থা দেখতে পাবো।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ভার্চুয়াল কণা আসলে কী?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/15/1728984263-6b270cb47b88bb972cfc2a02eec87d18.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ভার্চুয়াল কণা আসলে কী?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/15/1435377" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সেখানে ψ-এর মান হবে ১। অর্থাৎ, ইলেক্ট্রন পাবার সম্ভাবনা ১০০%। বাকি সব জায়গায় ইলেকট্রনের তরঙ্গ ফাংশন অকার্যকর। অর্থাৎ ψ-এর মান শূন্য হয়ে যাবে। এই ঘটনাকে বলা হয় 'ওয়েভ ফাংশন কলাপ্স' বা 'তরঙ্গ-ফাংশনের ভাঙন'।</p> <p>শ্রোডিঙ্গারের বিড়ালটি যখন বাক্সে বন্দি ছিল, তখন বক্স না খুলে জানা যায়নি, সেটা জীবিত না মৃত। তেজস্ক্রিয় পরমাণুর ক্ষয় হলে বিড়ালটি মারা যাবে। ক্ষয় না হলে কিছু ঘটবে না। যাকে বলা হয় 'ফিফটি-ফিফটি চান্স'। শ্রোডিঙ্গারের মতে, যতক্ষণ না বাক্সটি খোলা হবে, ততক্ষণ বিড়ালটি একই সাথে জীবিত ও মৃত।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জেমস ওয়েব আবিষ্কার করেছে সবচেয়ে শীতল এক্সোপ্ল্যানেট" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/15/1728976196-272df6c5e8b16f4cd6b8a632444060c9.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জেমস ওয়েব আবিষ্কার করেছে সবচেয়ে শীতল এক্সোপ্ল্যানেট</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/15/1435342" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এই সময় বিড়ালটির ওপর বস্তুতরঙ্গের সমীকরণ কাজ করবে। সমীকরণই বলে দেবে বিড়ালটির বাঁচা মরার সম্ভাবনা সমান-সমান। যেই মুহূর্তে কেউ বাক্স খুলে দেখবে, সেই মুহূর্তে বিড়ালটির প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে। হয় বেঁচে থাকবে, নয়ত মারা যাবে। যাই ঘটুক, তার বিপরীত ঘটনায় তরঙ্গ ফাংশন ভেঙে পড়বে।</p> <p>এই নিয়েও রয়েছে হাজারও প্রশ্ন। তরঙ্গ-ফাংশনের ভাঙন কি শুধু গাণিতিক ধারণা? নাকি বাস্তবেও এমন কিছু ঘটে? চিরায়ত ধারণা অনুযায়ী, আমরা কোনো কিছু দেখার আগে তার সঠিক অবস্থান জানতে পারি না। কেউ কেউ মনে করেন, তরঙ্গ ফাংশন সবসময় কার্যকর। সম্ভাব্য ফলাফলগুলো কেবল ভিন্ন ভিন্ন জগতে ঘটে। যেমন এই জগত বা ইউনিভার্সে শ্রোডিঙ্গারের বিড়ালটি যদি মারা যায়, অন্য কোনো জগতে হয়ত জীবিত।</p> <figure class="image"><img alt="কোয়ান্টাম ডবল স্লিট পরীক্ষায় কণা মূলত সম্ভাবনার তরঙ্গ হিসেবেই আচরণ করে।" height="767" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/10/16/my1182/111111.jpg" width="600" /> <figcaption>কোয়ান্টাম ডবল স্লিট পরীক্ষায় কণা মূলত সম্ভাবনার তরঙ্গ হিসেবেই আচরণ করে।</figcaption> </figure> <p>তরঙ্গ-ফাংশনের ভাঙন নির্দেশ করে বস্তুটি আর সুপারপজিশন অবস্থায় নেই। পর্যবেক্ষণের আগে সুপারপজিশন অবস্থা থাকে। পর্যবেক্ষণ করা সম্পন্ন হলেই তরঙ্গ-ফাংশনের কাজ শেষ।</p> <p>মার্কিন পদার্থবিদ ডেভিড বোম তরঙ্গ ফাংশন ভেঙে পড়ার অন্যরকম একটা কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, মহাবিশ্বের সকল কণারই নিজস্ব তরঙ্গ রয়েছে। যা একটি কেন্দ্রীয় তরঙ্গ ফাংশনে নিয়ন্ত্রিত হয়। একক ফাংশন হওয়ায় প্রতিটি ঘটনাই একে অপরের সাথে সংযুক্ত। উদাহরণস্বরূপ— গাছ থেকে আপেল পড়লে তা মাটিতে পড়বে নাকি আকাশে যাবে, তা নির্ভর করে গ্রহের মহাকর্ষ বলের ওপর।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পারমাণবিক বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয় কীভাবে?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/13/1728823649-6d446f1b11ca7e95bcd1e8be99e8edb8.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পারমাণবিক বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয় কীভাবে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/10/13/1434741" target="_blank"> </a></div> </div> <p>আপেল যতক্ষণ গাছে ঝুলে আছে, ততক্ষণ তাতে মহাকর্ষ কাজ করছে না— এমনটা নয়। এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ করলেই তরঙ্গ ফাংশন ভেঙে পড়ল— এটাও বলা যাবে না। বরং যেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি, ঠিক তেমনটাই হওয়ার ছিল। আর তা ঠিক করেছে সেই একক ফাংশন।</p> <p><strong>সম্পর্কিত তত্ত্ব</strong><br /> শ্রোডিঙ্গারের বিড়াল<br /> তরঙ্গ ফাংশনের ভাঙন</p> <p><strong>বিজ্ঞানী</strong><br /> <strong>রজার পেনরোজ</strong><br /> ১৯৩১—বর্তমান<br /> প্রখ্যাত ইংরেজ গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি প্রথম স্থানকালের বক্রতাকে তরঙ্গ ফাংশন ভাঙনের জন্য দায়ী করেছিলেন।</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> ফিলিপ বল</p>