<p>ডেঙ্গুর প্রকোপে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এডিস মশার বিস্তার ঘটে বলে এ সময়টাতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। সাধারণত  শীতের শুরুতেই ডেঙ্গুর প্রভাব কমতে থাকে।কিন্তু এ বছর ডিসেম্বর মাসেও ডেঙ্গুর পরিস্থিতি অনুকূলে নেই। এমনকি আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এর প্রভাব থাকতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।</p> <p>স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।</p> <p>বসুন্ধরা শুভসংঘ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) রংপুর শাখার আয়োজনে ডেঙ্গু সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে। আজ রবিবার (১৫ ডিসেম্বর)  বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-২ এর একটি কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।</p> <p>সভায় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ বেরোবি শাখার উপদেষ্টা এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তাবিউর রহমান প্রধান এবং বেরোবি শাখার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সানজানা ইবনাত, সহসভাপতি ইমন আলী, মো আবুল খায়ের জায়ীদ, প্রচার সম্পাদক মাসফিকুল হাসান, আজিজুর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তৌকির ইসলাম। অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সজীব, দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান, ক্রিয়া সম্পাদক আবির হোসাইন সহ অন্যান্য সদস্যরা।</p> <p>সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাধারণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় এবং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।</p> <p>বসুন্ধরা  শুভসংঘ বেরোবি শাখার উপদেষ্টা তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে, আর তারই উদাহরণ আজকের এই ডেঙ্গু সচেতনতামূলক সভা। মশার কামড় এড়ানোই ডেঙ্গু প্রতিরোধের মোক্ষম উপায়। আমাদের জোর দিতে হবে লার্ভা নিধনে। ডেঙ্গু যেমন নিজের লক্ষ্মণ বদলাচ্ছে,  এডিস মশাও তেমনি বদলাচ্ছে নিজের চরিত্র। আগে বর্ষা বা বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ডেঙ্গুর সম্পর্ক থাকত। এখন দেখা যাচ্ছে সারা বছরই ডেঙ্গু হতে পারে।’</p> <p>বসুন্ধরা শুভসংঘের বেরোবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সানজানা ইবনাত বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর সেরে যাবার পরবর্তী সময় খুবই ভয়ংকর। এ সময় তীব্র পেট ব্যথা, বার বার বমি, পাতলা পায়খানা অথবা শরীরের যেকোনো স্থান থেকে রক্তক্ষরণ, রোগীর শরীর ও হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, কিছুই খেতে না পারলে এবং শরীর অনেক দুর্বল ও হাঁটাচলা করতে কষ্ট হলে অতি দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।’</p> <p>বক্তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধে অনেক বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, বাসা-বাড়ির যেকোনো আবদ্ধ পানি নিয়মিত অপসারণ করতে হবে, চারপাশের আঙ্গিনা ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, পানি জমে হতে পারে এমন জিনিসপত্র উল্টে রাখতে হবে, দিনে ও রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানাতে হবে, জানালাতে মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহার হবে, মশা নিধনের ওষুধ ও স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।</p> <p>আলোচনাসভা শেষে শুভসংঘের বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন।</p>