<p>ময়মনসিংহের নান্দাইলের হতদরিদ্র ছোবহান ও আছমা দম্পত্তির ঘরে আজ থেকে ২৩ বছর আগে জন্ম নিয়েছিল একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। বাবা-মা আদর করে নাম রাখেন মো. তামজিদ। কিন্তু জন্মের পর কয়েক মাস যেতে না যেতেই সেই মা-বাবা যখন বুঝতে পারেন তাদের সন্তানটি শারীরিক প্রতিবন্ধী তখন তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।</p> <p>ভালো কোনো চিকিৎসা পাননি তামজিদ। ভাগ্যের এই নির্মম পরিহাসের মধ্যেই বড় হয়েছেন তিনি। প্রতিবন্ধী ভাতার সামান্য টাকা পেলেও এখন আরেকটা হুইল চেয়ার ও নিজের কর্মের জন্য বাড়ির সামনে একটা টং দোকানের আকুতি করছেন।</p> <p>গতকাল শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে তামজিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা আছমা বেগম ছেলের হুইল চেয়ার ঠেলাচ্ছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জন্মের পরপরই ছেলের এই অবস্থা। এরপর থেকেই জীবন চলছে ছেলের পেছনে। গত ২৩ বছর ধরে এভাবেই চলছে। কষ্টের জগদ্দল পাথর বসে রয়েছে। সমাজ সেবা থেকে একটি হুইল চেয়ারেই চলছে। যন্ত্রাংশ নষ্ট হলে তা আবার মেরামত করা হয়। তার স্বামী পরের জমিতে কাজ করেন। নিজেদের জমিজমা বলতে কিছুই নেই। ছেলেটি সারাক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকে। তারপরও সে মানসিকভাবে সুস্থ আছে। তবে ভাঙ্গাচুরা এই হুইল চেয়ারটির জন্য তার মন খুব খারাপ থাকে। একটি হুইল চেয়ার পেলে তার খুব আনন্দ হবে। মানসিক সুস্থতা নিয়ে বাঁচতে পারবে।</p> <p>তামজিদ জানান, শুধু দুইটা পা অচল। তারপরও নিজের মনোবল তুঙ্গে আছে। মন চায় কর্ম করে চলতে। কিন্তু কে করবে তার ব্যবস্থা। সে স্বপ্ন দেখে বাড়ির সামনে একটি দোকানের। যেখানে বসে সে বিকিকিনি করতে পারবে। আর তার আয় দিয়ে সংসারের খরচ ছাড়াও নিজের খরচ মিটতে পারবে। তাহলে পঙ্গু হয়ে সে থাকবে সচল। এ অবস্থায় তিনি সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করছেন।</p> <p>প্রতিবেশীরা জানায়, তামজিদ অত্যন্ত মেধাবী। সে কোনো কাজ করলে অল্পতেই ভালো করবে। তাছাড়া একটি ফেক্সিলোডের ব্যবসা হলে খুব ভালো করবে।</p>