বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়্যারম্যান আশিক চৌধুরীকে নিয়ে সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর সমালোচনায় পড়েন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে চলে বিভিন্ন আলোচনা। অবশেষে ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে যারা আহত হয়েছেন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মানসুরা আলম।
প্রায় ১৪ ঘণ্টা ডিজেবল ছিল তার ফেসবুক আইডি।
স্ট্যাটাসে আশিক চৌধুরীকে অসম্মান করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানান তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে নতুন আরেক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেছেন।
ওই পোস্টে মানসুরা আলম বলেন, প্রথমত, এপোলজি দিয়ে শুরু করতে চাই, যারা আমার একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে আহত হয়েছেন। গত ১৪ ঘণ্টা আইডিটি ডিজেবল থাকায় সেটা আমি করে উঠতে পারিনি।
আরো পড়ুন
পুলিশের লোগো থেকে বাদ ‘নৌকা’, আরো যেসব পরিবর্তন
তিনি বলেন, ড. ইউনূস সরকার বা তার পরিচালিত কোনো কাজকেই আজ পর্যন্ত একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি তাচ্ছিল্য করিনি বরং অ্যাপ্রিশিয়েট করেছি বারবার। আমার বিগত অনেক অ্যাপ্রিসিয়েশন পোস্ট আপনারা দেখেছেন আশা করি। এই দেশে কেউ কাজ করতে আসবেন, দেশের হয়ে কাজ করবেন- এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যের ব্যাপার। বিশেষ করে আমরা যারা এত বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি একটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বাংলাদেশের জন্য।
আশিক চৌধুরি বা বিনিয়োগ সম্মেলনের মতো প্রজেক্ট নিয়ে আমার ন্যূনতম কোনো সমালোচনার জায়গা নেই। বরং অ্যাপ্রিসিয়েশনের জায়গা অনেক বড়।
পূর্বের পোস্টের উদ্দেশ্য আশিক চৌধুরীকে তাচ্ছিল্য করা নয় দাবি করে তিনি বলেন, আমার সেই পোস্টের উদ্দেশ্য আশিক চৌধুরিকে অসম্মান করা ছিল না। বরং যারা আশিক চৌধুরিকে তার কাজের চেয়েও বেশি কিছু করে দেখছেন, তাকে মহাপুরুষ বানাচ্ছিলেন তাদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছিল। আমি নিশ্চিত, আশিক চৌধুরি নিজেও তেমন কিছু দেখতে চান না, তিনিও তার নিজের কাজ করে যেতে চান।
আরো পড়ুন
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সব মিলিয়ে ৪ দিন
ছাত্রদলের এই নেত্রী আরো বলেন, আমরা একটা সময় সুলাইমান সুখন, আরো বিভিন্ন তথাকথিত স্মার্ট ফিগার দেখেছি ফ্যাসিস্ট আমলে। মাশরাফি, সাকিবদের নিয়ে গালভরা গল্প দেখেছি। শেষে তাদের অবস্থা কি আমরা জানি। আমাদের মনে একটা ভয় থেকে যায়, যখন কাউকে হঠাৎ ফিগার বানাতে দেখি। আমরা এর সাফারার।
আশিক চৌধুরিসহ যারা বাংলাদেশকে ধারণ করে কাজ করে যেতে চান, তাদের জন্য আমাদের শুভকামনা সব সময়। সেই সঙ্গে আশিক চৌধুরিদের ইমেজ বিল্ড করতে গিয়ে তাকে তার কাজের চেয়েও বেশি কেউ বানাবে না, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দেশে সেটাও আমাদের প্রত্যাশা। সঙ্গে বাকস্বাধীনতা (কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ বাদে) চর্চার জন্য তার সোশ্যাল লাইফে হামলে পড়াও আমার লড়াই করা ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের স্বপ্নে ছিল না। আমার বিরুদ্ধে আসা বেশির ভাগ সমালোচনা আমি দেখি না অথবা এড়িয়ে যাই। এমনকি ভয়ানক মিথ্যাচার ও তথ্যবিকৃতিও।
সবশেষে তিনি বলেন, আমার দায় ছিল শুধু আশিক চৌধুরির ব্যাপারে। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার মিথ্যাচার, এডিটেড ছবি, স্ক্রিনশট- কোনো কিছু নিয়ে আমার জবাবের দায় নেই। ব্যক্তিগত আক্রমণের জবাব আমি দেব না। সেসব দায় তাদের, যারা এই ঘৃণ্য বাকস্বাধীনতা চর্চা করে অন্যের স্বাধীনতা ও ত্যাগকে অস্বীকার করছেন। আপনাদের সুস্থতা কামনা করি। নিজের পরিবারের প্রতি মনোযোগ দেন। মানুষকে মানুষ মনে করেন। কেউ সমালোচনা করলেই তাকে ব্যক্তি আক্রমণ করতে হয় না, এটাও পারিবারিক শিক্ষা।