<p>চাপটা মাহমুদ উল্লাহ হয়তো অনুভব করছেন। বয়সের ভার তো আছেই। মাহমুদকে তাড়া করার কথা সঙ্গীহীনতাও! টি-টোয়েন্টি দলে ‘হারাধনের শেষ ছেলেটি’ তিনি। সমসাময়িক কিংবা বাংলাদেশ ক্রিকেটের বহুল চর্চিত পাঁচ সিনিয়রের শেষজন হয়ে তিনি টিকে আছেন টি-টোয়েন্টি দলে।</p> <p>এই সংস্করণ থেকে সর্বশেষ সাকিব আল হাসানের বিদায় মাহমুদকে একাকী তো করেছেই, সঙ্গে তাঁর টি-টোয়েন্টি ভবিষ্যতের মুখে প্রশ্নচিডিগ্রিও বসিয়ে দিয়েছে। সাকিবহীন যাত্রা শুরু টি-টোয়েন্টিতেমাহমুদের সামনে কী অপেক্ষা করছে সেই উত্তর অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের কাছ থেকে সরাসরি পাওয়া যায়নি। তবে ভারতের বিপক্ষে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজে অভিজ্ঞ ব্যাটারের নৈপুণ্য যে আতশকাচের নিচে থাকবে, নাজমুলের কথায় সেটা পরিষ্কার, ‘আমি যতটুকু বুঝতে পারি, রিয়াদ ভাইয়ের জন্য এই সিরিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হয়তো নির্বাচকদের সঙ্গে কথাও বলবেন। আমি এ বিষয়ে খুব একটা স্পষ্ট নই। অবশ্যই নির্বাচক ও বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ হবে।’</p> <p>মাহমুদের ইস্যু নিয়ে চাপে আছে বাংলাদেশও। ব্যর্থ হলে তাঁকে সরানো হয়তো যাবে। কিন্তু মাহমুদের বিকল্প খুঁজতে ঘাম ঝরাতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। শুধু মাহমুদ নয়, তিন ম্যাচের এই সিরিজটি আরো বড় পরীক্ষায় ফেলছে বাংলাদেশকে। কুড়ি ওভারের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। এই ‘শূন্যতার’ শুরু আজকের ম্যাচ দিয়ে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অন্যতম সফল ক্রিকেটারদের একজন সাকিব বাংলাদেশ দলের জন্য ছিলেন ‘একের ভেতর দুই’।</p> <p>একই সঙ্গে ব্যাটার এবং বোলার সাকিবের স্থান পূরণ করতে বাংলাদেশ কোন পথে হাঁটে, সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে বাংলাদেশকে। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা তাওহিদ হৃদয় বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন। সাকিবের শূন্যস্থান পূরণের ডাকও দিয়েছেন তরুণ ব্যাটার। সাকিবকে ছাড়া খেলার চাপটা কেমন হবে—এমন এক প্রশ্নে তাওহিদ বলছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চাপ সব সময়ই থাকে। যদি এটা মাথায় থাকে, তাহলে পারফরম করা যাবে না। আমাদের প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে, ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। সাকিব ভাই নেই, অবশ্যই আমরা তাঁকে মিস করব। কিন্তু এখান থেকে একদিন না একদিন সবাইকে যেতেই হবে। আশা করি আমরা সাকিব ভাইয়ের শূন্যতা ভালোভাবে পূরণ করব।’</p> <p>এ তো গেল মাহমুদ-সাকিবকে নিয়ে ভাবনা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ ভারতও। টেস্ট সিরিজ ভরাডুবির পর টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। কিন্তু ঘরের মাঠে টেস্টের মতোই অপরাজেয় ভারত। এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টির এক নম্বর দলটি ঘরের মাঠে টানা ১৫টি টোয়েন্টি সিরিজ অপরাজিত। সর্বশেষ সিরিজ হেরেছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। বর্তমান দলটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তুলনামূলক অনভিজ্ঞ। তবে আইপিএল মাথায় রাখলে এদিক থেকেও তাদের পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। এর ওপর গোয়ালিয়রের যে মাঠে খেলা হবে, নতুন এই মাঠ নিয়ে বলতে গেলে কোনো ধারণাই নেই বাংলাদেশ দলের। উইকেট নিয়ে তাওহিদ বলছিলেন, ‘এখানে দুই দিন অনুশীলন করেছি। উইকেট নিচু ও মন্থর। মাঠকর্মীদের কাছ থেকে যা তথ্য পেলাম—এখানে ঘরোয়া ম্যাচও হয়। উইকেট মন্থর হবে মনে হচ্ছে।’</p> <p>তাওহিদের পরের কথায় অবশ্য উইকেট নিয়ে অস্পষ্টতাই ফুটে উঠল, ‘টি-টোয়েন্টি তো রানের, সব দল রান করতে চায়। এখানে আন্তর্জাতিক খেলা হয়নি। নতুন ভেন্যু। জানি না কতটুকু কী হতে পারে। ঘরোয়া ম্যাচ হয়েছে, আন্তর্জাতিক হয়নি। খেলা শুরু হলে বুঝতে পারব। আইপিএলও এখানে হয়নি। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়।’ মাহমুদ-সাকিব-ভারত-উইকেট, এত চাপ নিয়ে সর্বশেষ কবে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ!</p>