<p>বিশালদেহী মানুষটির সঙ্গে মানানসই সংলাপেই তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স, ‘শোঁ শোঁ বাতাস! ঝড় উঠবে ঝড়। কে আসছে এবার স্ট্রাইকার্স ডেরায়? সব কিছু উড়িয়ে নিয়ে যাবে! ঝাঁকুনির সঙ্গে মাঠ কাঁপাবে!’ যদিও মাঠ কাঁপানোর সুযোগই হয়নি রাকিম কর্নওয়ালের।</p> <p>বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলতে এসে যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই বিধ্বংসী ব্যাটার। এ জন্য ঢাকায় তো বটেই, আসরটির সিলেট পর্বের শুরুতেও নিজেদের প্রথম ম্যাচটি মিস করেছেন তিনি। খেলতে না পারলেও ক্যারিবীয় অলরাউন্ডারকে ঠিকই আলোচনায় রেখে দিয়েছে তাঁর শারীরিক গড়নের সঙ্গে দিব্যি মানিয়ে যাওয়া বাড়তি ওজনের ব্যাট।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ঢাকাকে গুঁড়িয়ে রংপুরের অপরাজেয় যাত্রা চলছেই" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/07/1736245688-e17a12ef93ab24835222f9560e0273e3.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ঢাকাকে গুঁড়িয়ে রংপুরের অপরাজেয় যাত্রা চলছেই</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/sport/2025/01/07/1466054" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বিপিএল খেলতে বাংলাদেশে আসার আগে এই অনুশীলন ব্যাটটি রাকিম বানিয়ে নেন স্থানীয় ব্যাট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এমকেএস থেকে। সিলেট দলের সোশ্যাল মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর রিয়াজ আহমেদ শোনাচ্ছিলেন বিশেষ এই ব্যাটের গল্পই, ‘রাকিম আসার আগে আমাদের জানান, অনুশীলনের জন্য তাঁর একটি ভারী ব্যাট লাগবে। এরপর যে ব্যাট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তেমন ব্যাটের একটি ছবি এমকেএসকে আমরা পাঠাই। তারাই এটি বানিয়ে দিয়েছে। রাকিমেরও ব্যাটটি খুব মনে ধরেছে।’</p> <p>স্ট্রাইকার্স শিবিরে রাকিমের সতীর্থরা তো বটেই, অন্যান্য দলের খেলোয়াড়রাও সুযোগ পেলেই ব্যাটটি নেড়েচেড়ে দেখছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ‘বিশেষ’ এই ব্যাটের ছবি ও ভিডিও। এর ওজন ‘ছয় কেজি’ বলে প্রচারিত হলেও সংশোধনী দিলেন এর নির্মাতা এবং এমকেএসের পরিচালক হোসেন মোহাম্মদ আফতাব। ভুল প্রচারণা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলছিলেন, ‘কর্নওয়ালের ব্যাটের ওজন দুই হাজার ৮০০ গ্রাম। অথচ সবাই ছয় কেজি বলে প্রচার করছে। ব্যাটটি আমার নিজ হাতে বানানো। আমার চেয়ে তো কেউ ভালো বলতে পারবে না।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পাঁচে পাঁচ করতে সহজ লক্ষ্যই পেল রংপুর" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/07/1736240584-4e28bebed1863b9334febd6202d0adb7.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পাঁচে পাঁচ করতে সহজ লক্ষ্যই পেল রংপুর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/sport/2025/01/07/1466031" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তাই বলে এমনও নয় যে কর্নওয়ালের সমান ভারী ব্যাটে আর কেউ অনুশীলন করেন না। মাহমুদ উল্লাহ, নাজমুল হোসেন ও নাঈম শেখরা ব্যবহার করছেন দুই হাজার ৫০০ গ্রামের ব্যাট। সৌম্য সরকারের অনুশীলন ব্যাটের ওজন দুই কেজির বেশি। ম্যাচে যাতে ব্যাটের ওজন হালকা অনুভব করেন এবং যেভাবে ইচ্ছা ব্যাট সুইং করাতে পারেন, সে জন্যই মূলত অনুশীলনে ভারী ব্যাট ব্যবহার করেন ব্যাটাররা। ম্যাচ চলাকালীন ব্যাটিংয়ে নামার আগে ডাগ আউটে দুটি ব্যাট একসঙ্গে ধরে যেটা করতে দেখা যেত মহেন্দ্র সিং ধোনি ও ড্যারেন সামির মতো পাওয়ার হিটারদের।</p> <p>এখন প্রশ্ন আসতে পারে, মাহমুদ-নাজমুলরা কর্নওয়ালের মতো অনুশীলনে ভারী ব্যাট ব্যবহার করলেও সেটি দেখতে এমন মোটা বা ভারী মনে হয় না কেন? এখানে মিলেছে এক চমকপ্রদ তথ্য। সাধারণত এক হাজার ৩০০ বা এক হাজার ৪০০ গ্রামের বেশি ভরী ব্যাট বানান না ব্যাট প্রস্তুতকারকরা। কেউ এর চেয়ে ভারী ব্যাট নিতে চাইলে তখন রডের টুকরা ঢোকানো হয় ব্যাটের ভেতরে, যেটি মাহমুদ-নাজমুলদের অনুশীলন ব্যাটেও আছে। কিন্তু রাকিমের ব্যাটে রড রাখেনি এমকেএস। তিনটি কাঠ জোড়া দিয়ে বানানো হয়েছে বিশালদর্শন এই ব্যাট।</p> <p>চমকপ্রদ তথ্য আছে আরো। ম্যাচে রাকিমের চেয়েও ভারী ব্যাট ব্যবহার করেন বাংলাদেশের মাহমুদ উল্লাহ। ক্যারিবীয় ক্রিকেটার যে ব্যাট দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে নামেন, সেটির ওজন এক হাজার ২০০ গ্রাম। অথচ মাহমুদের ব্যাটের ওজন এক হাজার ২৭০ গ্রাম। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে এই ভারী ব্যাট ব্যবহার শুরু করেন মাহমুদ। এমনকি তামিম ইকবালের ব্যাটের ওজনও এক হাজার ২০০ গ্রাম। নাঈম খেলেন এক হাজার ১৭০ গ্রামের ব্যাট দিয়ে। নাজমুলের ব্যাটের ওজন এক হাজার ১৬০ গ্রাম।</p> <p>নেটে ভারী ব্যাটে অনুশীলনের রেওয়াজ শুরু করেছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এর প্রচলন সাকিব আল হাসানের ব্যাটে। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার অনেক দিন ধরেই নেটে আড়াই কেজি ওজনের ব্যাট ব্যবহার করেন। পরে এই ধারায় যোগ হয়েছেন মাহমুদরাও, যাঁদের অনুশীলন ব্যাটের ওজন রাকিমের জন্য তিনটি কাঠ জোড়া দিয়ে বানানো বস্তুর কাছাকাছিই।</p>