মুদ্রার উল্টো পিঠটাও দেখলেন নুরুল হাসান সোহান। ডিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিতে পারলেও আজকের তিন অঙ্কের ইনিংসে পরাজয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের অধিনায়ক।
মিরপুরে ২১৭ রানের লক্ষ্যটা খুব বড় ছিল না ধানমন্ডির জন্য। যখন দলের অধিনায়ক সোহান একাই ১০০ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন।
কিন্তু বাকি ১১৭ রান ১০ ব্যাটার মিলেও কতরতে পারেনি ধানমণ্ডি। অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ১৯৩ রানে অলআউট হয়ে ২৩ রানের পরাজয় দেখেছে ধানমন্ডি।
শুরুটা ভালোই করেছিল ধানমন্ডি।
ব্যক্তিগত ৩১ রানে ওপেনার হাবিবুর রহমান আউট হলে দলীয় ৩৮ রানে আরো ২ উইকেট হারিয়ে তারা। সেই শুরু এরপর একের পর এক উইকেট হারাতে থাকা দলটির এক প্রান্ত আগলে রাখেন সোহান। ‘নিঃসঙ্গ শেরপার’ মতো লড়ে সেঞ্চুরিটা পেলেন কিন্তু হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারেননি তিনি। মোহামেডানের সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেওয়া পেসার সাইফ উদ্দিনের বলে ধানমন্ডি শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১০ চার ও ৪ ছক্কায় কাঁটায় কাঁটায় ১০০ রানের ইনিংস খেলেন।
এর আগে দারুণ শুরু পেয়েছিল মোহামেডানও। কিন্তু তিন টপ অর্ডার রনি তালুকদার (৩৯), তামিম ইকবাল (২৬) ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (৪৪) দারুণ শুরুর পরও নিজের ইনিংস বড় করতে না পারায় দলও একটা সময় ভুগছিল। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ৫৩ রান করা তাওহিদ হৃদয় দলকে ৬ উইকেটে ২১৬ রানের সংগ্রহ দেন। সেই পুঁজিতেই লড়াই করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন মোহামেডানের বোলাররা।
তাদের ৬ বোলারই কমপক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
নাঈমের সেঞ্চুরিতে উড়ে গেছে শাইনপুকুর
সোহান এবারের ডিপিএলের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ধানমন্ডিকে জয় এনে দিতে না পারলেও নাঈম শেখ পেরেছেন। তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
জয়টিও এসেছে ১৭৯ বল হাতে রেখে। বলা যায় ওপেনিংয়ে নেমে বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে শাইপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে উড়িয়ে দিয়েছেন নাঈম। ৪৭ রান কর তাকে সঙ্গ দিয়েছেন ওপেনিং সঙ্গী সাব্বির হোসেন। দলীয় ১২০ রানে সাব্বির আউট হওয়ার পর জয়ের বাকি কাজটুকু সারেন শাহাদাত হোসেন দীপুকে (৯) নিয়ে। বাঁহাতি ওপেনার অপরাজিত থাকেন ১০৪ রানে। ৬৪ বলের ঝোড়ো ইনিংসটি সাজান ১১ চার ও ৫ ছক্কায়।
অবশ্য প্রাইমের জয়ের কাজ আগেই সেরে রেখেছিল তাদের বোলাররা। প্রতিপক্ষকে মাত্র ১৫৯ রানে অলআউট করে। প্রতিপক্ষের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেছেন ফারজান আহমেদ। প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকাতে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন শফিকুল ইসলাম ও নাজমুল অপু।
‘ডাবল হ্যাটট্রিক’ জয়ে শীর্ষে আবাহনী
সহজ জয়ই পাওয়ার কথা ছিল আবাহনী লিমিটেডের। কিন্তু মাঝপথে হঠাই খেই হারিয়ে ফেলে দলটি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মুখকালায় নয়, ২ উইকেটের জয়ে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
চূড়ায় ওঠার লড়াইয়ে আজ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দল আবাহনী ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে মুখোমুখি হয়। তাতে ২০০ রানের সহজ লক্ষ্যই পায় আবাহনী। তবে শুরুটা ভালো ছিল না। দলীয় ১৬ রানে ড্রেসিংরুমে ফেরেন দুই ওপেনার জিশান আলম (১০) ও পারভেজ হোসেন ইমন (৬)।
তবে এরপরে শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুন যে জুটিটা গড়েন তাতের সহজ জয়ই পাওয়ার কথা ছিল। তৃতীয় উইকেটের ১৩৩ রানের জুটি তেমনি ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু সর্বোচ্চ ৭৬ রানে মিঠুন আউট হওয়ার পরেই ম্যাচের মোড় ঘুঁরে যায়। উইকেটরক্ষক ব্যাটারের আউটের পর শেষ ৫৩ রান করতেই ৫ উইকেট হারায় আবাহনী। তার মধ্যে ৪৩ রানে ফেরেন অধিনায়ক শান্তও।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় শঙ্কা জেগেছিল প্রাইম ব্যাংকের ম্যাচ হারার। তবে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১৮) ও মমিনুল হকের (২৪) ছোট ইনিংসে ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় পায় প্রাইম।
এর আগে এনামুল হক বিজয়ের ফিফটিতে ১৯৯ রানের সংগ্রহ পায় গাজী গ্রুপ। অধিনায়ক বিজয়ের ৬৮ রানের বিপরীতে অবশ্য দুই শ ছুঁই ছুঁই স্কোরে অবদান রাখেন ৪২ রান করা ওয়াসি সিদ্দিকী। আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার মমিনুল। এ জয়ে ১২ পয়েন্টে শীর্ষে আবাহনী। আর সমান ১০ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে দুইয়ে গাজী গ্রুপ, অগ্রণী ব্যাংক ও মোহামেডান।