<p>পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তিন দিনের তীব্র সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে অন্তত ৮২ জন নিহত ও ১৫৬ জন আহত হয়েছে। একজন স্থানীয় কর্মকর্তা রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।</p> <p>পাকিস্তান একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি মুসলিম দেশ। তবে আফগানিস্তান সীমান্তসংলগ্ন খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় উল্লেখযোগ্য শিয়া জনগোষ্ঠী রয়েছে। এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলছে। সর্বশেষ এ সহিংসতা শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার, যখন পুলিশ প্রহরায় চলাচলকারী শিয়াদের দুটি আলাদা গাড়িবহর হামলার শিকার হয়। এতে অন্তত ৪৩ জন নিহত হয় এবং দুই দিনের বন্দুকযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে।</p> <p>নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ‘২১, ২২ ও ২৩ নভেম্বর সংঘর্ষ ও গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ৮২ জন নিহত ও ১৫৬ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সুন্নি ও ৬৬ জন শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য।’</p> <p>স্থানীয় সময় শনিবার রাত পর্যন্ত হালকা ও ভারী অস্ত্রের সংঘর্ষ চলতে থাকায় প্রায় ৩০০ পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে রবিবার সকালে নতুন করে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘পুরো কুররাম জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে এবং প্রধান মহাসড়কে যান চলাচল স্থগিত রয়েছে।’</p> <p>পুলিশ কুররামে সহিংসতা প্রতিরোধে নিয়মিতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। অঞ্চলটি ২০১৮ সালে খাইবারপাখতুনখোয়ার সঙ্গে একীভূত হওয়ার আগে পর্যন্ত আধা-স্বায়ত্তশাসিত উপজাতি অঞ্চলের অংশ ছিল। শনিবার প্রাদেশিক সরকারের একটি প্রতিনিধিদল শিয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসে এবং রবিবার সুন্নি সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করে। প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, আলোচকদলের হেলিকপ্টার ওই অঞ্চলে পৌঁছনোর সময় গুলিবর্ষণের শিকার হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।</p> <p>প্রাদেশিক আইনমন্ত্রী আফতাব আলম আফ্রিদি রবিবার বলেছেন, ‘আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার হলো উভয় পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি করানো। একবার এটি স্থাপন করতে পারলে আমরা মূল সমস্যাগুলো সমাধানের কাজ শুরু করতে পারব।’</p> <p>গত মাসে কুররামে এক সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে তিনজন নারী ও দুই শিশু ছিল। জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসের আগের সংঘর্ষগুলোতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং তা শেষ হয় কেবল জিরগা বা উপজাতীয় পরিষদের মাধ্যমে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করার পর।</p> <p>পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে ৭৯ জন প্রাণ হারিয়েছে। শুক্রবার পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র করাচিতে সহিংসতার বিরুদ্ধে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছে।</p> <p>সূত্র : এএফপি</p>