ঢাকা, বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫
১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫
১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ রমজান ১৪৪৬

সুদানে হাসপাতালে ড্রোন হামলা, নিহত ৩০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সুদানে হাসপাতালে ড্রোন হামলা, নিহত ৩০
সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশারে একটি হাসপাতালে জনাকীর্ণ ওয়ার্ড। ফাইল ছবি : এএফপি

সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশারে সর্বশেষ সচল হাসপাতালগুলোর একটি—সৌদি হাসপাতালে ড্রোন হামলায় ৩০ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছে। একটি চিকিৎসা সূত্র শনিবার এই তথ্য জানিয়েছে।

নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় হওয়া এই বোমা হামলায় জরুরি চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হাসপাতালের ভবনটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলা সুদানের যুদ্ধরত কোন পক্ষ চালিয়েছে, তা স্পষ্ট হয়নি।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। আরএসএফ বিস্তীর্ণ পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুরের প্রায় পুরোটা দখল করেছে এবং মে মাস থেকে এল-ফাশার শহরটি অবরোধ করে রেখেছে। তবে শহরটি এখনো তারা দখল করতে পারেনি। কারণ সেনাবাহিনী সমর্থিত মিলিশিয়ারা তাদের বারবার প্রতিহত করছে।

চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে একই ভবনটি আরএসএফের একটি ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল। এল-ফাশারে স্বাস্থ্যসেবার ওপর আক্রমণ একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স এ মাসে জানিয়েছে, সৌদি হাসপাতালটিই শহরের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল, যেখানে অস্ত্রোপচারের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশজুড়ে ৮০ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।

এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, এক কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। এল-ফাশার অঞ্চলের আশপাশে তিনটি শরণার্থী শিবিরে—জামজাম, আবু শউক ও আল-সালামে ইতিমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মূল্যায়নে বলা হয়েছে, আগামী মে মাসের মধ্যে এই দুর্ভিক্ষ আরো পাঁচটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার মধ্যে এল-ফাশার শহরও রয়েছে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আম্বানিপুত্রের ‘বনতারা’ উদ্বোধন মোদির

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আম্বানিপুত্রের ‘বনতারা’ উদ্বোধন মোদির
মুকেশ আম্বানির কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত আম্বানির বন্য প্রাণী উদ্ধার, পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্র ‘বনতারা’ মঙ্গলবার উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি : এক্স থেকে সংগৃহীত

ধনকুবের মুকেশ আম্বানির কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত আম্বানির বন্য প্রাণী উদ্ধার, পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্র ‘বনতারা’ মঙ্গলবার উদ্বোধন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পুরো বনতারা এলাকা ঘুরেও দেখেন তিনি। সময় কাটান বন্য প্রাণীদের সঙ্গে।

গুজরাটের জামনগরে অবস্থিত ‘বনতারা’ দুই হাজারেরও বেশি প্রজাতির প্রাণীর আশ্রয়স্থল।

দেড় লাখেরও বেশি প্রাণী রয়েছে সেখানে, যার মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা ও বিপন্ন প্রাণীও রয়েছে। এ ছাড়া বনতারার বন্য প্রাণী হাসপাতাল ও পশুচিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে প্রাণীদের শুশ্রূষার জন্য এমআরআই, সিটি স্ক্যান, আইসিইউর ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে অ্যানেসথেশিয়া, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, এন্ডোস্কোপি, দন্তচিকিৎসার ব্যবস্থাও। মোদি যখন হাসপাতালের এমআরআই কক্ষ পরিদর্শন করেন, তখন সেখানে একটি এশীয় সিংহের চিকিৎসা চলছিল।
অস্ত্রোপচার চলছিল দুর্ঘটনার কবলে পড়া একটি চিতাবাঘেরও।

এদিন বনতারায় বেশ কয়েকটি প্রাণীকে খাবার খাওয়ান প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাদের মধ্যে ছিল এশীয় সিংহের শাবক, সাদা সিংহের শাবক, চিতাবাঘের শাবক। মোদি সাদা সিংহের যে শাবকটিকে খাওয়ান, তার জন্ম বনতারাতেই।

ভারতে একসময় প্রচুর পরিমাণে কারাকাল বনবিড়াল পাওয়া যেত। কিন্তু এখন ভারতে তারা বিরল। বনতারায় সেই কারাকালদের সংরক্ষণ ও প্রজননের ব্যবস্থা রয়েছে। কয়েকটি কারাকাল শাবককেও খাওয়ান প্রধানমন্ত্রী।

আরো পড়ুন
আম্বানিপুত্রের বিস্ময়কর চিড়িয়াখানার উদ্দেশে ২০ হাতির বিশাল যাত্রা

আম্বানিপুত্রের বিস্ময়কর চিড়িয়াখানার উদ্দেশে ২০ হাতির বিশাল যাত্রা

 

এ ছাড়া বনতারায় বেশ কয়েকটি হিংস্র বন্য প্রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ছবিও তোলান।

এর মধ্যে সোনালি বাঘ ও চারটি তুষারচিতা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং, জলহস্তী, কুমির, জেব্রা, জিরাফ, একশৃঙ্গ গণ্ডার, অজগর, দুই মাথা যুক্ত বিরল সাপ ও কচ্ছপের আবাসস্থল ঘুরে দেখেন তিনি।

বনতারায় হাতিদের জন্য বিশেষ একটি হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। সেটিও ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। বেশ কয়েকটি তোতাপাখিকে মুক্তি দেন। কথা বলেন বনতারার কর্মী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে। বনতারা সফরের ছবি ইতিমধ্যে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেই পোস্টে লিখেছেন, ‘বনতারা নামে একটি অনন্য বন্য প্রাণী সংরক্ষণ, উদ্ধার ও পুনর্বাসন উদ্যোগের উদ্বোধন করেছি। এই কেন্দ্র পরিবেশের স্থায়িত্ব বজায় রাখা ও বন্য প্রাণীদের কল্যাণের পাশাপাশি প্রাণীদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। এই অত্যন্ত সহানুভূতিশীল প্রচেষ্টার জন্য আমি অনন্ত আম্বানি ও তার পুরো দলের প্রশংসা করি।’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

মন্তব্য

ট্রাম্পের অনুদান বন্ধ, ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিকে তালা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রাম্পের অনুদান বন্ধ, ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিকে তালা
সংগৃহীত ছবি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক অনুদান বাতিলের ঘোষণার পরপরই বন্ধ হয়ে গেছে ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিক। গত মাসেই হায়দরাবাদে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের জন্য তৈরি তিনটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এত দিন ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা মানবিক কাজের জন্য অনুদান দিত। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পরই ৯০ দিনের জন্য এই অনুদান স্থগিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যার প্রভাব পড়েছে ভারতেও।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিক গড়ে ওঠে হায়দরাবাদে। তার নাম মিত্র ক্লিনিক। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের চিকিৎসাসহ নানা পরিষেবা দেওয়ার জন্যই এই ক্লিনিক খোলা হয়েছিল।

সাধারণ স্বাস্থ্য পরিষেবার পাশাপাশি এইচআইভির কাউন্সেলিং, স্ক্রিনিং, চিকিৎসা করা হতো এই সব ক্লিনিকে। এ ছাড়া এইচআইভি আক্রান্তদের সামাজিক এবং আইনি সাহায্যও করা হতো এই সব ক্লিনিকের মাধ্যমে।

ট্রান্সজেন্ডাররাও সেই সব ক্লিনিকে কাজ করতেন। হায়দরাবাদে মিত্র ক্লিনিকের সাফল্য দেখে পুনে এবং কল্যাণে আরো ২টি ক্লিনিক খোলা হয়েছিল।

মার্কিন অনুদান বন্ধের জেরে তিনটি ক্লিনিকই এখন বন্ধ।

মিত্র ক্লিনিকের সঙ্গে জড়িত ট্রান্স হেলথ এক্সপার্ট রচনা বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানুয়ারি মাসের একেবারে শেষে অনুদান বন্ধের ঘোষণা করার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে ক্লিনিক। আমাদের জানানো হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লিনিকের জন্য ফান্ডিং বন্ধ করে দিয়েছেন। তার পর থেকেই ক্লিনিক বন্ধ রয়েছে।’

যুদ্ধের জন্য মিত্র দেশকে অস্ত্র জোগানো থেকে আফ্রিকার গরিব দেশের মানুষের উন্নয়ন, বিভিন্ন খাতে বিশ্বের নানা দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পেয়ে থাকে।

একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্টের শাসনকালে আর্থিক সাহায্যের এ রকম বিভিন্ন প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে বিশ্বের অনেক দেশকেই।

এবার সব ধরনের অনুদান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে বিদেশি সাহায্যে ৯০ দিনের জন্য বিরতি দিয়েছিলেন।

সূত্র : বিবিসি, হিন্দুস্তান টাইমস

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের স্থূলতা নিয়ে গবেষণায় ভয়ংকর তথ্য

আলজাজিরা
আলজাজিরা
শেয়ার
প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের স্থূলতা নিয়ে গবেষণায় ভয়ংকর তথ্য
প্রতীকী ছবি : এএফপি

বিশ্বব্যাপী সরকারগুলো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ও এক-তৃতীয়াংশ শিশু অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত হবে। নতুন এক গবেষণায় এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

দ্য ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে মঙ্গলবার প্রকাশিত গবেষণাটি ২০৪টি দেশের তথ্য ব্যবহার করে বিষয়টি তুলে ধরেছে এবং এটিকে বর্তমান শতাব্দীর অন্যতম গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে অভিহিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) প্রধান গবেষক ইমানুয়েলা গাকিডু এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অতুলনীয় মাত্রায় ছড়িয়ে পড়া অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার এই বৈশ্বিক মহামারি গভীর শোকাবহ ও সামাজিকভাবে চরম ব্যর্থতার পরিচায়ক।

গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯০ সালে বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৯২.৯ কোটি, যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬০ কোটি। গুরুত্বপূর্ণ কোনো পরিবর্তন না হলে আগামী ১৫ বছরে বিশ্বের ৩৮০ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত হবে বলে গবেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, যা ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ।

গবেষকরা সতর্ক করেছেন, এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবাকে চরম সংকটে ফেলবে, বিশেষ করে ২০৫০ সালের মধ্যে স্থূলতায় আক্রান্ত প্রতি চারজনের একজনের বয়স ৬৫ বছরের বেশি হবে।

তারা আরো পূর্বাভাস দিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী শিশু ও কিশোরদের মধ্যে স্থূলতার হার ১২১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

এ ছাড়া ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ স্থূল শিশু ও কিশোর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (মেনা) এবং লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে বসবাস করবে বলেও গবেষকরা সতর্ক করেছেন।  

তবে এখনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন গবেষণার সহলেখক অস্ট্রেলিয়ার মারডক চিলড্রেনস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জেসিকা কের। তিনি বলেছেন, ‘টেকসই বৈশ্বিক খাদ্যব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষের খাদ্যাভ্যাস বদলাতে অনেক বেশি রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। মানুষের পুষ্টি, শারীরিক কার্যক্রম ও বসবাসের পরিবেশের উন্নয়নে আরো কার্যকর কৌশল প্রয়োজন, যা বেশি মাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণ বা পর্যাপ্ত পার্কের অভাবের মতো সমস্যাগুলো মোকাবেলা করতে পারবে।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি অতিরিক্ত ওজন বা স্থূল প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি মাত্র আটটি দেশে বসবাস করেন—চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রাশিয়া, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া ও মিসর।  

যদিও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও স্থবির জীবনযাপনকে স্থূলতা মহামারির প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে এর মূল কারণগুলো নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক থোরকিল্ড সোরেনসেন, যিনি এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তিনি দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক সংযুক্ত মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন, ‘সামাজিকভাবে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্থূলতার প্রবণতা রয়েছে, যা এখনো ব্যাখ্যার বাইরে।’

এর আগে সোমবার প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা—ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি অ্যাটলাস (বিশ্ব স্থূলতা মানচিত্র) একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি বিশ্ব স্থূলতা ফেডারেশনের সভাপতি সাইমন বারকেরা বলেছেন, ‘সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো।

ওবেসিটি অ্যাটলাসে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের ৭৯ শতাংশ ও শিশুদের ৮৮ শতাংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বসবাস করবে এবং মাত্র ৭ শতাংশ দেশ এই সংকট মোকাবেলায় যথাযথ স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।  

বারকেরা আরো বলেছেন, ‘এটি সত্যিই বিশ্বব্যাপী অন্যতম প্রধান জনস্বাস্থ্য সংকট হয়ে উঠেছে।’

মন্তব্য

দ্বীপের কাছে আটকে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈল, এরপর কী?

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
দ্বীপের কাছে আটকে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈল, এরপর কী?
সংগৃহীত ছবি

বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈলটি (আইসবার্গ) যুক্তরাজ্যের প্রত্যন্ত দক্ষিণ জর্জিয়া নামক দ্বীপের অগভীর পানিতে আটকে গেছে। ওই দ্বীপে লক্ষ লক্ষ পেঙ্গুইন ও সিলের মতো জলজ প্রাণীর আবাস।

মৎস্যজীবীরা আশঙ্কা করছেন, দ্বীপের সঙ্গে এটির সংঘর্ষ ঘটবে এবং এর কারণে এ অঞ্চলে বিচরণকারী পেঙ্গুইন ও সিলের মতো প্রাণীগুলো ঝুঁকিতে পড়বে।

অ্যান্টার্কটিকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিপুল পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বরফের মধ্যে আটকে রয়েছে।

এটি গলতে শুরু করলে মহাসাগরে জীবনের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

এটিকে শূন্য মরুভূমির মাঝে পুষ্টির বোমা ফেলার মতো বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের প্রফেসর নাদিন জনস্টন।

দক্ষিণ জর্জিয়া সরকারের পরামর্শক পরিবেশবিদ মার্ক বেলচিয়ার বলেছেন, ‘এটি যদি ভেঙে যায়, তাহলে বরফখণ্ড স্থানীয় স্রোতের সঙ্গে চলাচল করে জাহাজের জন্য বিপদ সৃষ্টি করতে পারে। স্থানীয় মাছ ধরার এলাকায় প্রবেশের পথ সীমাবদ্ধও করতে পারে এটি।

বিশালাকারের হিমশৈলটি এ২৩এ নামে পরিচিত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো হিমশৈলগুলোরও একটি। ১৯৮৬ সালে হিমশৈলটি অ্যান্টার্কটিকার ফিলচনার বরফ সোপান (আইসশেলফ) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সমুদ্রতলে আটকে পড়ে। 

পরে আবার একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিতে আটকা পড়ে এটি।

শেষ পর্যন্ত গত ডিসেম্বরে হিমশৈলটি সামুদ্রিক ঘূর্ণি থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুতগতিতে বিলীন হওয়ার পথে এগিয়ে যায়।

উত্তরের উষ্ণ পানিতে ‘আইসবার্গ অ্যালি’ নামে পরিচিত অঞ্চলে এটি অক্ষত অবস্থায় ছিল। কয়েক দিন ধরে এটিকে ঘূর্ণায়মান মনে হয়েছিল। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ কিলোমিটার (২০ মাইল) গতিতে চলতে শুরু করে।

গত শনিবার ৩০০ মিটার উঁচু এই বরফ দৈত্যটি ভূখণ্ডের প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দূরে অগভীর মহাদেশীয় শেলফে আঘাত হানে এবং এখন দৃঢ়ভাবে আটকে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভের প্রফেসর অ্যান্ড্রু মেইজার্স বলেন, ‘এটি সম্ভবত যেখানে আছে সেখানেই থাকবে, যতক্ষণ না খণ্ডগুলো ভেঙে পড়ে।’

এটি ক্ষয়ের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। একসময় এর আয়তন ছিল ৩,৯০০ বর্গ কিলোমিটার (১,৫০০ বর্গমাইল), কিন্তু উষ্ণ সমুদ্রের দিকে চলার সময় এটি ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়েছে। বর্তমানে এটি প্রায় ৩,২৩৪ বর্গকিলোমিটার বলে অনুমান করা হচ্ছে।

প্রফেসর মেইজার্স বলেন, ‘যদি এর নিচের বরফটি পচা হয় বা লবণ দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাহলে এটি চাপের কারণে ভেঙে পড়বে। এরপর হয়তো আরো অগভীর কোথাও ভাসবে।’

কিন্তু যেখানে বরফটি শেলফ স্পর্শ করছে, সেখানে হাজার হাজার ছোট ছোট প্রাণী যেমন প্রবাল, সমুদ্রের শামুক এবং স্পঞ্জ রয়েছে।

স্বল্পমেয়াদে এই প্রজাতিগুলোর জন্য এটি বিপর্যয়কর। তবে প্রফেসর মেইজার্সের মতে, এটি এ অঞ্চলের জীবনের স্বাভাবিক চক্রের একটি অংশ। এটি একটি জায়গায় কিছু ধ্বংস করছে, কিন্তু অন্য জায়গায় পুষ্টি এবং খাবার সরবরাহ করছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, হিমশৈলগুলো মহাসাগরীয় জীবনে অবিশ্বাস্য অবদান রাখে। বরফ গলে তাজা পানি লবণপানিতে মিশে যায়।

অধ্যাপক গ্রিফিথস বলেন, ‘বরফ ছাড়া আমাদের এই বাস্তুতন্ত্রগুলো থাকত না। এগুলো বিশ্বের সবচেয়ে উৎপাদনশীল বাস্তুতন্ত্রগুলোর মধ্যে একটি এবং ব্লু হোয়েলের মতো বিশ্বের বৃহত্তম প্রাণীদের খাবার সরবরাহ করে।’

বরফের জীবনচক্র একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অ্যান্টার্কটিকা উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো বরফখণ্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে দ্রুত গলতে পারে, যা অঞ্চলের বন্য প্রাণী এবং মাছ ধরার ধরনে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

অতীতে বড় হিমশৈল এসে ধাক্কা খাওয়ার কারণে সাউথ জর্জিয়ার বরফাচ্ছাদিত সাগরতীর ও খাঁড়িতে বিচরণকারী অগণিত পাখি ও সিল মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। খাবার সংগ্রহের পথ রুদ্ধ হয়ে এদের মারা যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ