ঢাকা, রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫
২ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫
২ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ রমজান ১৪৪৬

ট্রাম্প কেন গাজা দখল করতে চান, চাইলেই তা পারবেন?

  • ফিলিস্তিনিদের যানবাহন তল্লাশির জন্য প্রায় ১০০ সাবেক মার্কিন বিশেষ বাহিনী নিযুক্ত
  • ট্রাম্পের মন্তব্য এত বিতর্কিত কেন?
  • যুদ্ধবিরতির শেষ পরিণতি জনশূন্য গাজা?
শেয়ার
ট্রাম্প কেন গাজা দখল করতে চান, চাইলেই তা পারবেন?
ছবিসূত্র : এএফপি

ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে গাজার দখল নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবের প্রতি তীব্র নিন্দা ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে মানুষ। বর্তমানে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে, অন্যদিকে সংঘাত-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তখনই এমন মন্তব্য করে বসলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ট্রাম্পের এমন অস্পষ্ট প্রস্তাব মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়ে মার্কিন নীতিতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ প্রস্তাব, গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অস্তিত্বের প্রয়োজনীয়তার ওপর ব্যাপক আন্তর্জাতিক ঐকমত্যকে ক্ষুণ্ণ করেছে। 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাটির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিলেও আরব দেশসহ কিছু দেশ এবং কিছু মার্কিন মিত্র এই পরিকল্পনা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন কেন এ কথা বললেন?

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি একটি বিষয়ে সঠিক হন তা হলো, কয়েক দশক ধরে মার্কিন কূটনীতি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের এই সংঘাতের সমাধান দিতে ব্যর্থ।

বহু শান্তি প্রস্তাব ও প্রেসিডেন্ট এসেছেন আবার চলেও গেছেন কিন্তু সমস্যাগুলো আরো তীব্র হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণ এবং এর ফলে গাজায় যুদ্ধ শুরুটা ছিল এর ভয়াবহ ফলাফল।

ট্রাম্প একজন ‘প্রপার্টি ডেভেলপার’ হিসেবে লাখ লাখ ডলার আয় করেছিলেন। তিনি সেই টুপি পরে একটি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং বলেছেন, যদি গাজা পুনর্নির্মাণ করতে হয়, তবে কিছু জায়গায় লাখ লাখ বেসামরিক লোক ধ্বংসস্তূপে আশ্রয় নেওয়ার কোনো অর্থ হয় না।

গাজা পুনর্নির্মাণের কাজটি বিশাল।

কিন্তু গাজা উপত্যকার মধ্য ও দক্ষিণ অংশের মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র বা তাদের বাড়ির কাছাকাছি রাখার উপায় বের কারার পরিবর্তে ট্রাম্প বলেছেন, ‘তাদের স্থায়ীভাবে এই অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে উৎসাহিত করা উচিত।’

জাতিসংঘের অনুমান, ১৫ মাস ধরে চলা হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের পর গাজার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবিস্ফোরিত অস্ত্রশস্ত্র এবং ধ্বংসস্তূপের পাহাড় অপসারণ করতে হবে। পানি এবং বিদ্যুতের লাইন মেরামত করতে হবে।

স্কুল, হাসপাতাল এবং দোকান পুনর্নির্মাণ করতে হবে।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফও বলেছেন, এতে বছরের পর বছর সময় লাগতে পারে এবং এটি চলতে থাকলে ফিলিস্তিনিদের কোথাও যেতে হবে। ট্রাম্পের বিশ্বাস, ফিলিস্তিনিদের অনুপস্থিতিতে আমেরিকান মালিকানাধীন ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ সেই যুদ্ধের ছাই থেকে উঠে আসবে এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থান, বিনিয়োগের সুযোগ এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বের মানুষের বসবাসের জন্য একটি জায়গা হয়ে উঠবে গাজা।

ট্রাম্পের মন্তব্য এত বিতর্কিত কেন?

ট্রাম্প এমন একজন প্রেসিডেন্ট, যে তার প্রথম মেয়াদের বেশির ভাগ সময় মার্কিন মধ্যপ্রাচ্যনীতিকে উল্টে দিয়েছিলেন, যার মধ্যে ছিল তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর এবং অধিকৃত গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া।

কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কখনো ভাবেননি যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাত সমাধানের জন্য ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের একটি অংশ দখল করতে হবে এবং সেখানকার জনগণকে উচ্ছেদ করতে হবে। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, বলপ্রয়োগ করে এটি করা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হবে।

এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে কিছু ফিলিস্তিনি সম্ভবত গাজা ছেড়ে অন্যত্র তাদের জীবন গোছানোর বিষয়টি মেনে নেবেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি ইতিমধ্যেই এটি করেছে। কিন্তু অন্যরা তা চিন্তাও করতে পারবে না। কারণ তাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই অথবা গাজার প্রতি তাদের ভালোবাসা, যে ভূখণ্ডটাকে তারা ফিলিস্তিন বলে এবং সেই অনুভূতি খুব বেশি শক্তিশালী।

গাজার বাসিন্দার মধ্যে রয়েছেন ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সময় পালিয়ে যাওয়া অথবা তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়া লোকদের বংশধর। ফিলিস্তিনিরা ওই ঘটনাকে বা সময়কালকে ‘নাকবা’ (যার আরবি অর্থ বিপর্যয়) বলে। তাদের কাছে অন্য বিকল্পের কথা ভাবা প্রচণ্ড বেদনাদায়ক। তারা চাইবে গাজার অবশিষ্টাংশে তাদের ক্ষুদ্র জীবনকে তীব্র দৃঢ়তার সঙ্গে আঁকড়ে ধরতে। যারা ইসরায়েলের মতো তাদের নিজস্ব রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেন, তাদের জন্য এর কিছু অংশ হারানো অঙ্গচ্ছেদের মতো।

১৯৪৮ সাল থেকে গাজা পশ্চিম তীর থেকে বিচ্ছিন্ন। ট্রাম্পের ২০২০ সালের ‘ভিশন ফর পিস’ টানেল বা রেলপথের পরিকল্পনা এই দুটি অঞ্চলকে সংযুক্ত করতে পারে, কিন্তু এখন ট্রাম্প উল্টো বলছেন ফিলিস্তিনিদের গাজা নিয়ে চিরতরে হাল ছেড়ে দিতে।

ট্রাম্প বেসামরিক নাগরিকদের জোরপূর্বক নির্বাসনের পক্ষে কথা বলছেন না বলে মনে হচ্ছে (যা আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে), তবে ট্রাম্প স্পষ্টতই ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে উৎসাহিত করছেন। এদিকে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তারা হাজার হাজার ক্যারাভ্যানের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে, যা গাজাবাসীদের ভূখণ্ডের কম ক্ষতিগ্রস্ত অংশে থাকতে সাহায্য করতে পারত। 

অন্যদিকে ট্রাম্প যেসব আরব দেশকে গাজার ১৮ লাখ শরণার্থীকে গ্রহণ করার কথা বলেছেন, তারা বিশেষ করে মিসর এবং জর্দান এই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি, বরং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। 

গাজার বর্তমান অবস্থা কী?

১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল কর্তৃক দখলের আগে গাজা ১৯ বছর ধরে মিসরের দখলে ছিল। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, এটি এখনো ইসরায়েলের দখলে বলে বিবেচিত, তবে ইসরায়েল এর বিরোধিতা করে।

এ নিয়ে ইসরায়েলের যুক্তি, ২০০৫ সালে সেই দখলদারির অবসান ঘটেছে। যখন তারা একতরফাভাবে ইহুদি বসতি ভেঙে দিয়েছিল এবং তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। তবে বেড়া এবং ইসরায়েলি সামুদ্রিক অবরোধে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন গাজা। এটি কখনো সত্যিকারের স্বাধীন অঞ্চল বলে মনে হয়নি।

ইসরায়েলের অনুমতি ছাড়া গাজাবাসী গাজার ভেতরে বা বাইরে যাতায়াত করতে পারে না। ১৯৯৮ সালে ব্যাপক আন্দোলনের মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর খোলা হয়েছিল কিন্তু ইসরায়েল সেটাও ধ্বংস করে দেয়। ২০০১ সালে দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি বিদ্রোহের সময় ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি ধ্বংস করে দেয়। জাতিসংঘের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ সদস্য গাজাকে সার্বভৌম ফিলিস্তিনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেয়নি।

২০০৬ সালে হামাস ফিলিস্তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। এর পরের বছর তীব্র লড়াই হয় এবং হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বীদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করার পর নিরাপত্তার কারণে ইসরায়েল এবং মিসর গাজার ওপর অবরোধ আরোপ করে। সর্বশেষ যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই ফিলিস্তিনিরা গাজাকে একটি উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেছিল।

ট্রাম্প কি চাইলে গাজা দখল করতে পারবেন?

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই ভূখণ্ডের ওপর আমেরিকার কোনো আইনি দাবি নেই। তবে ট্রাম্প কোন আইনে কিভাবে আমেরিকান শাসন এ ভূখণ্ডে চাপিয়ে দিতে চান, তা মোটেও স্পষ্ট নয়।

যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার শাসনব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। গত ডিসেম্বরে দুটি প্রধান ফিলিস্তিনি দল হামাস এবং ফাতাহ প্রশাসন তদারকির জন্য একটি যৌথ কমিটি গঠনে সম্মত হয়েছিল, কিন্তু চুক্তিটি এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। অন্য সময়ে এ আলোচনাগুলো একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী তৈরির ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, সম্ভবত তা আরব দেশগুলোর সেনাদের নিয়েই গঠিত হবে।

গত মাসে রয়টার্স জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল গাজায় একটি অস্থায়ী প্রশাসন গঠনের বিষয়ে আলোচনা করেছে। তারা কাজ করবে, যতক্ষণ না একটি সংস্কারকৃত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই পশ্চিম তীরের কিছু অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগে প্রকাশ্যে জোর দিয়ে বলেছিলেন, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা পরিচালনায় পিএ-এর কোনো ভূমিকা থাকবে না।

মূলত, আমেরিকান সেনারা ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছে। একটি মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থা গাজা শহরের দক্ষিণে একটি গুরুত্বপূর্ণ চেকপয়েন্টের তদারকি এবং অস্ত্রের জন্য উত্তরে ফিরে আসা ফিলিস্তিনিদের যানবাহন তল্লাশি করার জন্য প্রায় ১০০ জন সাবেক মার্কিন বিশেষ বাহিনী নিযুক্ত করেছে। একই চেকপয়েন্টে মিসরীয় নিরাপত্তাকর্মীদেরও দেখা গেছে।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির কি কোনো প্রভাব থাকতে পারে?

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা সবেমাত্র শুরু হয়েছে, কিন্তু ট্রাম্পের বোমা ফাটানোর মতো মন্তব্য কিভাবে তা এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে তা বোঝা কঠিন। যদি হামাস মনে করে যে এই পুরো প্রক্রিয়ার শেষ পরিণতি জনশূন্য গাজা, তাহলে ঘটনা কোন দিকে গড়াবে তা বোঝা মুশকিল। 

নেতানিয়াহুর সমালোচকরা তাকে আলোচনা ভেঙে দেওয়ার এবং যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার জন্য অজুহাত খুঁজছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তারা এটা মনে করতে পারেন, ট্রাম্পও নেতানিয়াহুর একজন ইচ্ছুক সহযোগী। অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ডানপন্থী সমর্থকরা মার্কিন দখল পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। যার ফলে মন্ত্রিসভার পদত্যাগের ঝুঁকি হ্রাস পাবে এবং নেতানিয়াহুর তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আরো নিশ্চিত হয়ে উঠবে। এই অর্থে, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখার জন্য একটি শক্তিশালী প্রণোদনা দিয়েছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প পশ্চিম তীর সম্পর্কে কী বলেছেন?

অধিকৃত পশ্চিম তীরের ওপর ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কি একমত, জানতে চাইলে ট্রাম্প উত্তর দেন, তিনি এখনো কোনো চিন্তা করেননি, তবে চার সপ্তাহের মধ্যে তিনি একটি ঘোষণা দেবেন। এই মন্তব্য ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। অনেকে এ ধরনের ঘোষণা অনিবার্যভাবে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কফিনের আরেকটি পেরেক হিসেবে দেখবে।

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনের বৈধতার স্বীকৃতি দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বিষয়টিকে অবৈধ বলে মনে করে, যদিও ইসরায়েল এর বিরোধিতা করে আসছে। পূর্ববর্তী শান্তি আলোচনার সময় আলোচকরা স্বীকার করেছিলেন, ইসরায়েল একটি চূড়ান্ত চুক্তির অংশ হিসেবে বৃহৎ বসতি স্থাপন ধরে রাখতে পারবে, সম্ভবত ইসরায়েলি ভূখণ্ডের ছোট অংশের বিনিময়ে।

সূত্র : বিবিসি

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন কার্ডধারীকে উলঙ্গ করে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন কার্ডধারীকে উলঙ্গ করে জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ
ফ্যাবিয়ান শমিট। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ গ্রিন কার্ডধারী ৩৪ বছর বয়সী জার্মান নাগরিক ফ্যাবিয়ান শমিটকে গত ৭ মার্চ ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের লোগান বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তারা আটক করেছেন। এরপর তার পরিবার অভিযোগ করে, তাকে অপমানজনক ও সহিংস আচরণের শিকার হতে হয়েছে।

নিউজউইকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শমিট কৈশোর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং বর্তমানে নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা। লুক্সেমবার্গ সফর শেষে ফেরার সময় তিনি আটক হন।

 পরিবারের দাবি, শমিটকে গ্রেপ্তার করে উলঙ্গ করা হয়, সহিংসভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরে তাকে রোড আইল্যান্ডের সেন্ট্রাল ফলসে অবস্থিত ডোনাল্ড ডব্লিউ ওয়াট আটককেন্দ্রে পাঠানো হয়।

শমিটের পরিবার আরো জানিয়েছে, তার গ্রিন কার্ড সাম্প্রতিককালে নবায়ন করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি মামলাও নেই, তবু কেন তাকে আটক করা হয়েছে, তা তারা জানেন না। শমিটের সঙ্গী তাকে বিমানবন্দরে নিতে গিয়েছিলেন, কিন্তু চার ঘণ্টা অপেক্ষার পরও কোনো খবর না পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বর্তমানে পরিবার তার মুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

শমিটের মা আস্ট্রিড সিনিয়র বলেন, ‘শুধু বলা হয়েছিল, তার গ্রিন কার্ড ফ্ল্যাগ করা হয়েছে।’ তিনি জানান, শমিটকে অপমানজনক ও সহিংস আচরণের শিকার হতে হয়েছে। তার অভিযোগ, ছেলেকে উলঙ্গ করে জোরপূর্বক ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করানো হয় এবং অল্প খাবার-পানীয় দেওয়া হয়। পরে শরীর খারাপ হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

আস্ট্রিড ব্যাখ্যা করেন, ২০২৩ সালে শমিট তার পুরনো গ্রিন কার্ড হারানোর পর আইনিভাবে নতুন কার্ড ইস্যু করিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার সময় তার নথিপত্র ফ্ল্যাগ করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষার সহকারী কমিশনার হিল্টন বেকহ্যাম নিউজউইককে বলেন, ‘যদি কোনো আইন বা ভিসার শর্ত লঙ্ঘিত হয়, তবে ভ্রমণকারীরা আটক বা বহিষ্কৃত হতে পারেন। তবে ফেডারেল গোপনীয়তা নীতির কারণে আমরা নির্দিষ্ট মামলার তথ্য প্রকাশ করতে পারি না।’

শমিটকে অবৈধ আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসননীতির অধীনে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে বলে সমালোচকরা দাবি করেছেন। বিমানবন্দরে বৈধ গ্রিন কার্ডধারী বাসিন্দাদের আটক করার ঘটনা ক্রমেই বিতর্কের সৃষ্টি করছে এবং অভিবাসন আইন প্রয়োগের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

সূত্র : এনডিটিভি

মন্তব্য

উত্তর মেসিডোনিয়ায় নৈশক্লাবে আগুন, নিহত ৫১

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
উত্তর মেসিডোনিয়ায় নৈশক্লাবে আগুন, নিহত ৫১
উত্তর মেসিডোনিয়ায় নৈশক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫১ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

উত্তর মেসিডোনিয়ায় একটি নৈশক্লাবে হিপহপ কনসার্ট চলাকালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৫১ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত বলকান দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার এ তথ্য জানান।

পূর্বাঞ্চলীয় শহর কোকানিতে পালস নামের ওই নৈশক্লাবে শনিবার রাতের কনসার্টে এক হাজারের বেশি তরুণ দর্শক উপস্থিত ছিল।

সেখানে উত্তর মেসিডোনিয়ার জনপ্রিয় হিপহপ জুটি ডিএনকে পারফরম করছিলেন। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পান্সে তস্কোভস্কি জানান, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে তথ্য রয়েছে, তাতে ৫১ জন প্রাণ হারিয়েছে ও ১০০ জনের বেশি আহত হয়েছে।’

তস্কোভস্কি আরো জানান, আহতদের কোকানি শহরের স্থানীয় হাসপাতাল, রাজধানী স্কোপিয়ে ও দক্ষিণে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরের শ্তিপ শহরের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতদের রাজধানী স্কোপিয়ের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়।

কনসার্টটি মধ্যরাতে শুরু হয়। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এসডিকে জানায়, আগুন লাগে স্থানীয় সময় রাত ৩টার দিকে। সম্ভবত কনসার্টে ব্যবহৃত আতশবাজি থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন তস্কোভস্কি। তিনি বলেন, ‘যখন তথাকথিত স্প্রিংকলার চালু করা হয়, তখন স্ফুলিঙ্গগুলো ক্লাবের ছাদে লেগে যায়, যা সহজেই দাহ্য—এমন উপাদানে তৈরি ছিল।

ফলে খুব দ্রুত পুরো নৈশক্লাবজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন ধোঁয়া সৃষ্টি হয়।’

আগুন লাগার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চে বিশেষ ধরনের ইনডোর আতশবাজি ব্যবহৃত হচ্ছিল। বলকান অঞ্চলের সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত অন্যান্য ভিডিওতে দেখা গেছে, ভবনের প্রবেশপথ আগুনে পুড়ে কালো হয়ে গেছে।

এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তেতোভো শহরের কভিড-১৯ রোগীদের জন্য নির্ধারিত একটি ইউনিটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছিল।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ইয়েমেনে হামলা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান রাশিয়ার

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইয়েমেনে হামলা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান রাশিয়ার
ফাইল ছবি

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনে হুতিদের ওপর মার্কিন বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত নারী, শিশুসহ ৩১ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। এই হামলা বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। খবর আলজাজিরার। 

খবরে বলা হয়, ইয়েমেনের হুতিদের বিরুদ্ধে বৃহৎ পরিসরে সামরিক হামলার পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাকে সংলাপে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কো রুবিওর যুক্তির জবাবে সের্গেই ল্যাভরভ অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি আরো রক্তপাত বন্ধের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

এর আগে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে হুতিদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে বলেন, তোমাদের সময় শেষ, আজ থেকে অবশ্যই হামলা বন্ধ করতে হবে। যদি তোমরা এটা না করো তাহলে তোমাদের ওপর নরকের বৃষ্টি নেমে আসবে।

যা আগে কখনো দেখোনি।

এরপরই হামলা শুরু করে মার্কিন বাহিনী। ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর হুতিদের ওপর চালানো যুক্তরাষ্ট্রের এটাই সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। 

রোববার হুতি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আল-আসবাহি বলেন, মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত এবং ১০১ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

 

আরো পড়ুন
যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ নেতানিয়াহুর

যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ নেতানিয়াহুর

 

হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরো এই হামলাগুলোকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী মার্কিন এই হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

মন্তব্য

যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ নেতানিয়াহুর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ নেতানিয়াহুর
সংগৃহীত ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রতিনিধি দলকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শেষে কাতার থেকে ফিরে আসা একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। 

টাইমস অব ইসরায়েল ও আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ওই বৈঠকে ইসরায়েলি মন্ত্রী এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নেতানিয়াহু ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবের অধীনে আলোচনার প্রস্তুতির নির্দেশ দেন, যার মধ্যে ১১ জন ইসরায়েলি বন্দীর তাৎক্ষণিক মুক্তি এবং মৃত বন্দীদের অর্ধেকের দেহাবশেষ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম কেএএন জানিয়েছে যে, উইটকফ ১০ জন বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি ৬০ দিনের জন্য বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

আরো পড়ুন
সুনীতাদের আনতে মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছল স্পেসএক্সের যান

সুনীতাদের আনতে মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছল স্পেসএক্সের যান

 

এদিকে শুক্রবার হামাস যুদ্ধবিরতি বাড়ানো এবং আরো ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে শেষ জীবিত ইসরায়েলি-মার্কিন জিম্মি এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি-মার্কিন দ্বৈত নাগরিকত্বধারী আরো চারজন— ইতাই চেন, ওমর নিউট্রা, গাদি হাগাই এবং জুডি ওয়েইনস্টাইনের মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।  তবে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই হামাসের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

 উইটকফ এটিকে ‘ছলনাপূর্ণ’ প্রস্তাব বলে মন্তব্য করেছেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ