যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দাপ্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্থানীয় সময় বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটন ডিসিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সন্ত্রাসবাদ দমন এবং উদীয়মান হুমকিতে গোয়েন্দা সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য বলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে মোদির সাক্ষাৎ
অনলাইন ডেস্ক

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, হিন্দু-আমেরিকান গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে তার নিয়োগের জন্য অভিনন্দনও জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। বুধবার তুলসির নিয়োগের বিষয়টি মার্কিন সিনেটে অনুমোদন পায়।
প্রধানমন্ত্রী মোদি এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডের সঙ্গে দেখা করেছেন। তার নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদ দমন, সাইবার নিরাপত্তা এবং উদীয়মান হুমকিতে গোয়েন্দা সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপরও আলোচনা হয়েছে।’
তিনি সেখানে আরো বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডের সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন। আলোচনায় সন্ত্রাসবাদ, সাইবার নিরাপত্তা এবং উদীয়মান হুমকি মোকাবেলায় গোয়েন্দা সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।
ফ্রান্স সফরের পর গতকাল বুধবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে (বৃহস্পতিবার, ভোর ৪টা) মার্কিন রাজধানীতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী মোদি। বুধবার ফ্রান্স সফর শেষে মোদি ওয়াশিংটন রওনা হন। বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। দুই দেশের বৈঠকে এ বার মূলত শুল্ক, বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রই প্রধান বিষয় হয়ে উঠবে বলে কূটনীতিকরা মনে করছেন।
মোদি এই সফরের আগে গত ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটে মোদী সরকার ২০টি আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক কমিয়েছে।
ট্রাম্প ক্ষমতা নিয়েই ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক বসানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কূটনীতিকরা মনে করছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে মোদির প্রথম সফরে প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে নতুন ঘোষণা হতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি
সম্পর্কিত খবর

যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিনের প্রায় দুই ঘণ্টা ফোনালাপ
অনলাইন ডেস্ক

রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের উদ্দেশে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিন বছর আগে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাত ৮টার (বাংলাদেশ সময়) দিকে তারা ফোনে কথা বলা শুরু করেন। এই দুই নেতার মধ্যে টানা দুই ঘণ্টা আলাপ হয়।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প ও পুতিন প্রায় দুই ঘণ্টা কথা বলেন। একটি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের এ ফোনালাপের উদ্দেশ্য ছিল, পুতিনকে ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজি করানো। যার মধ্যে আছে রুশ বাহিনীর দখল করা ইউক্রেনের বৃহৎ অঞ্চল।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইউক্রেন।
৩০ দিনের ওই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পর পুতিন গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তারা যুদ্ধবিরতিতে রাজি।
ট্রাম্প এরপর রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভূখণ্ড দিয়ে দেওয়া এবং বিখ্যাত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার ইঙ্গিত দেন।
রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের স্বার্থ রক্ষা হলেই কেবল তারা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে।
হোয়াইট হাউজের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ডান স্কাভিনো পরবর্তীতে এক্সে আরেকটি পোস্ট করেন, সেখানে তিনি লেখেন ‘আলোচনা চলছে’। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এই ফোনালাপের ব্যাপারে খুব বেশি তথ্য জানা যাচ্ছে না। তবে ডান স্কাভিনোর পোস্টের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হয়েছে, ট্রাম্প ও পুতিন ৯০ মিনিটের বেশি সময় ধরে কথা বলছেন। এর কিছুক্ষণ পরই জানা যায় তাদের ফোনালাপ শেষ হয়েছে।

নিরাপত্তা শঙ্কায় বেলুচিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ
অনলাইন ডেস্ক

পাকিস্তানের অস্থিতিশীল বেলুচিস্তান প্রদেশ সম্প্রতি নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওই অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলা বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক প্রাদেশিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়কে গত সপ্তাহে ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়, আর মঙ্গলবার তৃতীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভার্চুয়াল শিক্ষাব্যবস্থায় যেতে বলা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চুয়াল শিক্ষাব্যবস্থা চালু থাকবে।’
এই পদক্ষেপের ফলে হাজারো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কবে আবার খুলবে তা ঈদুল ফিতরের পর পর্যালোচনা করা হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। ঈদ হতে আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি।
এএফপি আরো জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতার পর কোয়েটার নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে। শহরের রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে জাতিগত বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ৪৫০ জন যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে হামলা চালায়, যা দুই দিনের অবরোধের সূত্রপাত ঘটায় এবং এতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর রবিবার একটি আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলায় আধাসামরিক বাহিনীর অন্তত পাঁচজন সদস্য নিহত হন।

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়াল, হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিহত
বিবিসি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ‘ব্যাপক হামলা’য় চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ পরিসংখ্যান জানিয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা হামাসের ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ আক্রমণ চালাচ্ছে। হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং আইডিএফ নতুন করে আরো অনেক এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে গাজার উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ওই অঞ্চলের সর্বোচ্চ পদস্থ হামাস নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফাহ নিহত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আরো তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার সকালে এই হামলার নির্দেশ দেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এটি আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে বারবার হামাসের অস্বীকৃতি জানানো এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ ও মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পরবর্তী পদক্ষেপ।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস এখনো ৫৯ জন জিম্মিকে আটকে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে। এদের সবাইকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ২০২৩ জিম্মি করা হয়েছিল। ইসরায়েলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি দানন হামাসকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের শত্রুদের প্রতি কোনো দয়া দেখাব না।’
কিন্তু জিম্মিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী একটি গোষ্ঠী অভিযোগ করেছে, ইসরায়েলি সরকার ‘জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে’।
‘ভয়ানক রাত’
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ভোরে গাজা সিটি, রাফা ও খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়। ২৫ বছর বয়সী রামেজ আলাম্মারিন এএফপিকে জানান, তিনি গাজার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আহত শিশুদের হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, ‘তারা আবারও গাজায় নরকের আগুন ঝরিয়েছে। মৃতদেহ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চারপাশে পড়ে রয়েছে, আর আহতরা কোনো ডাক্তার পাচ্ছে না।’
মোহাম্মদ বদেইর রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম, তারপর হঠাৎ হামলার শব্দে জেগে উঠি। আমাদের প্রতিবেশীদের বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল। আমরা ধ্বংসস্তূপের নিচে এই মেয়েটিকে পাই, তার মা-বাবাকেও টেনে বের করি।’
তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে তার নিজের মেয়ের দেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে পাওয়া যায়। এ ছাড়া গাজার আল-মাওয়াসিতে কর্মরত ইউনিসেফের মুখপাত্র রোসালিয়া বোলেন বিবিসি রেডিও ৪কে বলেন, ‘এটি সবার জন্য একটি ভয়ানক রাত ছিল।’
বাইরে চিৎকার ও সাইরেনের শব্দ শোনা যাচ্ছিল, আর ওপরে প্লেন উড়ছিল জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘খুব জোরে বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, আমাদের গেস্ট হাউস কাঁপছিল। পরবর্তী ১৫ মিনিটে, প্রতি পাঁচ বা ছয় সেকেন্ডে একবার করে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল।’
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আহতদের সংখ্যা সামাল দিতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা হিমশিম খাচ্ছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আহতের সংখ্যা ৬৬০-এর বেশি। ওই অঞ্চলের ৩৮টি হাসপাতালের মধ্যে ২৫টি সেবা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
গাজার হাসপাতালগুলোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাকুত বিবিসি আরবিকে জানান, আহতদের মধ্যে অনেকেরই পোড়া ও ভাঙা হাড়ের মতো গুরুতর আঘাত রয়েছে এবং অনেকে এখনো অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলেন, ‘হামলাগুলো এত আকস্মিক হয়েছিল যে পর্যাপ্ত মেডিক্যাল স্টাফ উপস্থিত ছিলেন না এবং এই ব্যাপক হামলার মাত্রার কারণে সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত দল ডাকতে হয়েছে।’
প্রতিক্রিয়া
এদিকে জাতিসংঘ কর্মকর্তারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী মুহান্নাদ হাদি বলেন, ‘এটি অকল্পনীয়। যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা উচিত। গাজার মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করছে।’
হামাস এই হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার জন্য ইসরায়েলকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযুক্ত করেছে। তারা আরো বলেছে, ইসরায়েল অবশিষ্ট জিম্মিদের ‘এক অনিশ্চিত পরিণতির’ সম্মুখীন করেছে।
তবে হামাস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার ঘোষণা দেয়নি। বরং মধ্যস্থতাকারী ও জাতিসংঘকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই হামলার আগে ইসরায়েলের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল। ফক্স নিউজকে হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র এ তথ্য জানিয়েছেন।
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব ১ মার্চ শেষ হওয়ার পর মধ্যস্থতাকারীরা নতুন সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব করেছিল, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বটি এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাড়ানো হোক, যাতে হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি ও ইসরায়েলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময় অব্যাহত রাখা যায়। কিন্তু মধ্যস্থতাকারী আলোচনায় জড়িত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও হামাস এই চুক্তির মূল কিছু শর্ত নিয়ে একমত হতে পারেনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের চালানো হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছিল, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। পাশাপাশি সেই হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল সামরিক অভিযান চালায়। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, এতে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। পাশাপাশি গাজার ২১ লাখ জনসংখ্যার বেশির ভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অনেকেই একাধিকবার। প্রায় ৭০ শতাংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে রহস্যজনক ফেনা
- শতাধিক সার্ফার অসুস্থ, সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক

দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে রহস্যজনক এক ধরনের ফেনা ভেসে আসার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় শতাধিক সার্ফারের অসুস্থ হয়ে পড়ার পাশাপাশি বহু মাছ, অক্টোপাস ও পাতাযুক্ত সিড্রাগন মারা গেছে বলে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে।
অজ্ঞাত এই ফেনার কারণে ওয়াইটপিঙ্গা বিচ ও পারসন্স বিচ এলাকায় ১০০ জনেরও বেশি সার্ফার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সৈকতে বিপুল পরিমাণে মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
সপ্তাহান্তে প্রথমবারের মতো এই হলুদ, বিবর্ণ, কাদাযুক্ত, চকচকে ফেনা ওয়াইটপিঙ্গা সৈকতে দেখা যায়, যা অ্যাডিলেড শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও ভিক্টর হারবার থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। সৈকতে ঘুরতে আসা মানুষ ও সার্ফাররা সমুদ্রে যাওয়ার পর ফ্লুর মতো উপসর্গ অনুভব করেন, যার মধ্যে ছিল চোখ চুলকানো, শুকনা কাশি ও গলায় ব্যথা।
অনেকে দৃষ্টির সমস্যার কথাও বলেছেন জানিয়ে স্থানীয় সার্ফার অ্যান্থনি রোল্যান্ড ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পানিতে অস্বাভাবিক কিছু আছে।’ তিনি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘পানির ওপরে ঘন, ভারী হলুদ ফেনা ছড়িয়ে ছিল, আর সৈকতের ধারে সবুজ ও কাদা মিশ্রিত স্তর দেখা যাচ্ছিল।
কিছু পর্যটক সমুদ্রে এক ধরনের তৈলাক্ত স্তর ভাসতে দেখেছেন এবং সৈকতে প্রচুর মৃত মাছ ও পাতাযুক্ত সিড্রাগন পড়ে থাকতে দেখেছেন। রোল্যান্ড তার অনলাইনে পোস্ট করা ছবিতে মৃত সামুদ্রিক প্রাণী দেখিয়ে লিখেছেন, ‘চোখে দেখা প্রমাণ, পানিতে অস্বাভাবিক কিছু একটা আছে।’
রোল্যান্ডের পোস্টের পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তিনি জানান, তিনি ও তার সহকর্মীরাসহ ১০০ জনেরও বেশি মানুষ এই অস্বাভাবিক অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়েছে।
একজন মন্তব্যকারী জানান, ‘গলার ভেতরে কিছু আটকে থাকার মতো অনুভূতি হচ্ছিল’ এবং পোর্ট এলিয়ট বোলস ক্লাবে থাকার সময় তিনি কাশতে শুরু করেন। অন্য একজন বলেন, ‘আমার চোখ খুব খারাপভাবে জ্বালা করছিল’। তার সন্দেহ, এই ফেনা ওয়াইটপিঙ্গার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে।
রোল্যান্ড আরো দাবি করেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মিডলটন, এনকাউন্টার বে ও ভিক্টর হারবারে মৃত মাছ পাওয়া গেছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা ধারণা করছেন, এই রহস্যজনক ফেনা হয়তো নীল-সবুজ শৈবাল (ব্লু/গ্রিন অ্যালগি) বা সায়ানোব্যাকটেরিয়া থেকে এসেছে, যা মানুষ ও প্রাণীর জন্য বিপজ্জনক। সায়ানোব্যাকটেরিয়া থেকে নির্গত বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে এলে ফ্লুর মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে অতিরিক্ত ক্লান্তি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট অন্যতম।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উচ্চ তাপমাত্রা, স্থির পানি ও চলমান সামুদ্রিক তাপপ্রবাহের কারণে সৃষ্ট মাইক্রো-অ্যালগাল ব্লুম এই ফেনার কারণ হতে পারে। তারা ওয়াইটপিঙ্গা ও পারসন্স বিচ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যদিকে পরিবেশ ও পানি সংরক্ষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় নিউল্যান্ড হেড কনজারভেশন পার্কের ওয়াইটপিঙ্গা ও পারসন্স বিচ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে।
এদিকে প্রাথমিক শিল্প ও অঞ্চল বিভাগ জানিয়েছে, ওয়াইটপিঙ্গায় মাছের মৃত্যুসংক্রান্ত একটি সম্ভাব্য ঘটনা তদন্তাধীন। একজন মুখপাত্র বলেন, ‘সৈকত যত দ্রুত সম্ভব আবার খুলে দেওয়া হবে।’
সূত্র : এনডিটিভি