ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬

বাহরাইনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, বাংলাদেশিসহ নিহত ২

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাহরাইনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, বাংলাদেশিসহ নিহত ২
নিহত বাংলাদেশি শ্যামল চন্দ্র শীল (বাঁয়ে)। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত।

বাহরাইনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বহুতল ভবন ধসে একজন বাংলাদেশি প্রবাসীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ অব বাহরাইনের প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে। নিহত বাংলাদেশির নাম শ্যামল চন্দ্র শীল (৪২)। গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আরাদ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিউজ অব বাহরাইনের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ভয়াবহ ভবন ধসে নিহতদের মধ্যে আরেক জন হলো, আলী আবদুল্লাহ আলী আল হামিদ (৬৬)। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ফলে তিনতলা ভবনের একটি বড় অংশ ধসে পড়ে। যার ফলে বেশ কয়েকজন ভেতরে আটকা পড়েন। উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে।

আহত সবাইকে কিং হামাদ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ চুক্তি ছাড়াই শেষ হলো ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা

গুরুত্বপূর্ণ খনিজ চুক্তি ছাড়াই শেষ হলো ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা

 

এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ দূতাবাস নিশ্চিত করেছে, শ্যামলের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা বাহরাইনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে। পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তাদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।

এলাকার প্রবাসীরা জানিয়েছেন, ধসে পড়া ভবনের নিচতলায় একটি সেলুন এবং একটি লন্ড্রির দোকানসহ বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল।

দুর্ঘটনার সময় অনেকেই ভেতরে ছিলেন।

সূত্র: নিউজ অব বাহরাইন

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পুতিন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছেন : জেলেনস্কি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পুতিন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছেন : জেলেনস্কি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গত মঙ্গলবার ফোনালাপে দেওয়া প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করে পুতিন ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন জেলেনস্কি।

‘পুতিনের কথা বাস্তবতার সঙ্গে খুবই বেমানান’ মন্তব্য করে জেলেনস্কি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপের পর পুতিন বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু এর পরও গত মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেনের পাশাপাশি জ্বালানি অবকাঠামোসহ অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে ১৫০টি ড্রোন হামলা হয়েছে।

পরিবহনের ওপর হামলা হয়েছে। দুটি হাসপাতালে হামলা হয়েছে।’

ফিনল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া চাইবে অংশীদাররা আমাদের সাহায্য করা বন্ধ করুক। এর একটিই উদ্দেশ্য—ইউক্রেনকে দুর্বল বানানো।

পুতিন যদি সত্যিই শান্তি চান, তাহলে তিনি কেন ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীকে দুর্বল বানাতে চান?’

গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, ‘পুতিন এটি বন্ধ করতে চান, যাতে ইউক্রেন তথ্য না পায় এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় আমাদের লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে না যায়।’

মস্কোকে আগ্রাসী আখ্যা দিয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া প্রথমে হামলা শুরু করে। আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি। আমরা এই যুদ্ধে জিতব।

আরো পড়ুন
প্রেমের ফাঁদে পড়ে দিলেন ২৫ লাখ টাকা, হারালেন নিজের জীবনও

প্রেমের ফাঁদে পড়ে দিলেন ২৫ লাখ টাকা, হারালেন নিজের জীবনও

 

ন্যাটোয় যোগদানের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইউক্রেনকে নিয়ে ন্যাটো আরো শক্তিশালী হবে। নিজ দেশের সেনাবাহিনীকে আধুনিক যুদ্ধের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী আখ্যা দেন তিনি। যদিও ন্যাটোতে যোগদান সহজ হবে না বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

মন্তব্য

দুদকের অভিযোগের জবাবে যা বললেন টিউলিপ সিদ্দিক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দুদকের অভিযোগের জবাবে যা বললেন টিউলিপ সিদ্দিক
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাকে ‘লক্ষ্যবস্তু বানানো’ এবং তার বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন’ প্রচারণার অভিযোগ করেছেন ব্রিটেনের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক।

এই সংসদ সদস্যদের আইনজীবীদের তরফে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদককে) একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

যাতে বলা হয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগগুলো ‘মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক’। সেগুলো গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরা হয়েছে অথচ, তদন্তকারীদের পক্ষ থেকে তাকে কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।

জানুয়ারিতে লেবার মন্ত্রিসভার ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে সরে দাঁড়ান টিউলিপ সিদ্দিক। ওই পদে তার কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া।

দুদকের পক্ষ থেকেও চিঠির একটি জবাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যেখানে বলা হয়েছে যে টিউলিপ আওয়ামী লীগের ‘দুর্নীতি থেকে লাভবান হয়েছেন’।

সেখানে আরো বলা হয়, হাসিনার শাসনামল সম্পর্কে তার (টিউলিপ সিদ্দিকের) অজ্ঞতার দাবি ‘বিশ্বাস করা কঠিন’।

দুদকের পক্ষ থেকে দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এই এমপি তখন দাবি করেন, তিনি কোনো অনিয়ম করেননি। ‘স্বচ্ছতা’ বজায় রেখে কাজ করেছেন। কিন্তু, তিনি সরকারের কর্মকাণ্ডে ‘বিক্ষিপ্ততার’ কারণ হতে চাননি বলে পদত্যাগ করেছেন।

তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার জানান যে তার (টিউলিপ) জন্য ফিরে আসার ‘দরজা খোলা থাকছে’।

স্টারমারের নির্বাচনি আসন হবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস টিউলিপের আসনের পার্শ্বর্বর্তী হওয়ায় তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য রয়েছে।

যখন দুর্নীতির অভিযোগ প্রথম সামনে আসে, তখন টিউলিপ প্রধানমন্ত্রীর নৈতিকতা বিষয়ক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

মি. ম্যাগনাস তখন জানান, তিনি সিদ্দিকের ক্ষেত্রে ‘অন্যায় কিছুর প্রমাণ পাননি’।

তিনি আরো বলেন, কিন্তু এটা দুঃখজনক যে টিউলিপ তার খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের জন্য ‘সম্ভাব্য দুর্নামের ঝুঁকি সম্পর্কে অতটা সতর্ক ছিলেন না’।

 

শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের ব্যয় থেকে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন।

হাসিনার বিরোধী একজন রাজনীতিবিদ ববি হাজ্জাজের করা অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে কমিশনের তদন্তটি চলছে।

আদালতে দাখিল করা দলিল থেকে বিবিসি জানতে পেরেছে, ববি হাজ্জাজ অভিযোগ করেছেন যে ১০ বিলিয়ন পাউন্ডের রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে রাশিয়ার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের মধ্যস্থতা করেছিলেন টিউলিপ। এখানে খরচ বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল বলে দাবি করা হয় অভিযোগে।

দুদকের কাছে লেখা চিঠিতে, টিউলিপের আইনজীবী, স্টিফেনসন হারউড, তার দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, টিউলিপ কোনোভাবেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তিতে জড়িত ছিলেন না। যদিও ২০১৩ সালে ক্রেমলিনে একটি চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একই ছবিতে তাকে দেখা গেছে।

কোনো আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে তার জানা নেই উল্লেখ করে চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘রাষ্ট্রীয় সফরে কোনো রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের পরিবারের সদস্যদেরও আমন্ত্রণ জানানো অস্বাভাবিক কিছু নয়।’

বিষয়টি নিয়ে দুদকের পালটা চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তার (টিউলিপ সিদ্দিকের) মতো একজন রাজনীতিবিদ কীভাবে সরলতার কারণে নির্দোষ থাকার দাবি করেন।

টিউলিপ সিদ্দিকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২০০৪ সালে লন্ডন কিংস ক্রস এলাকায় উপহার হিসেবে পাওয়া সাত লাখ পাউন্ডের ফ্ল্যাটটি ‘কোনো না কোনোভাবে আত্মসাতের ফল’ বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘সত্য নয়’, কারণ এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুক্তির ১০ বছর আগেকার ঘটনা।

স্যার লরি ম্যাগনাস অভিযোগের তদন্তে বলেছেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে, কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটে তার মালিকানার উৎস সম্পর্কে অবগত ছিলেন না টিউলিপ, যদিও সেই সময়ে উপহার সংক্রান্ত একটি ভূমি হস্তান্তর নিবন্ধন ফর্মে স্বাক্ষর করেছিলেন তিনি’।

স্যার লরি আরো বলেন, ‘তার ধারণা ছিল, তার বাবা-মা তার জন্য সম্পত্তিটি কিনেছেন, ‘কিন্তু সরকারের মন্ত্রী হওয়ার পর তাকে রেকর্ডটি সংশোধন করা উচিত ছিল’।

তিনি এটিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যার ফলে, জনসাধারণ ‘এই উপহারদাতার পরিচয় সম্পর্কে অসাবধানতাবশত বিভ্রান্ত হয়েছে’।

দুদকের কাছে চিঠিতে, সিদ্দিকের আইনজীবী নিশ্চিত করেছেন যে কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি তাকে দিয়েছিলেন আব্দুল মোতালিফ নামে এক ব্যক্তি। যাকে ‘খুব ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু এবং টিউলিপের গডফাদারের মতো’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকায় জমি দখলে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পৃক্ততার যে অভিযোগ দুদকের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে সে বিষয়েও বিস্তারিত জবাব রয়েছে চিঠিতে।

গণমাধ্যমে দুদকের ব্রিফিংকে ‘যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্য চেষ্টা’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘দুদক বা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তার (টিউলিপ) কাছে কোনো অভিযোগ ন্যায্য, যথাযথ এবং স্বচ্ছভাবে, অথবা আদৌ কোনো পর্যায়েই তুলে ধরা হয়নি’।

আরো বলা হয়েছে, ‘আমরা চাই টিউলিপের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক অভিযোগ বানানো এবং তার সুনাম নষ্টের জন্য মিডিয়া ব্রিফিং ও প্রকাশ্য বক্তব্য প্রদান অবিলম্বে বন্ধ করা হোক’।

দুদককে ‘অবিলম্বে’ এবং ‘২৫ মার্চ ২০২৫-এর মধ্যে’ সিদ্দিকের কাছে তাদের জিজ্ঞাস্য তুলে ধরতে হবে। নইলে ‘উত্তর দেওয়ার মতো কোনো বৈধ প্রশ্ন নেই বলে আমরা ধরে নেব’।

দুদক টিউলিপের আইনজীবীদের পাঠানো চিঠির জবাব দিয়েছে।

যেখানে দাবি করা হয়েছে, তিনি ‘তার বড় হওয়ার পর জীবনের বেশিরভাগ সময় দুর্বৃত্তায়িত আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন বাড়িতে কাটিয়েছেন’ এবং এটিই প্রমাণ করে যে তিনি এই দলের দুর্নীতি থেকে লাভবান হয়েছেন।

এমপির তরফে করা ‘হাসিনার শাসনামলের অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞতার দাবি’ বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করেন দুদক মুখপাত্র। দুদক ‘যথাসময়ে’ তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলেও জানানো হয়।

দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সাময়িকী দ্য টাইমসকে বলেছেন, ‘টিউলিপের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত অভিযোগ যুক্তরাজ্যের আদালতসহ যেকোনো আদালতেই প্রমাণ করা যাবে।’ সূত্র: বিবিসি বাংলা

মন্তব্য

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের কর্মীরা হতাহত

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় জাতিসংঘের কর্মীরা হতাহত
বিবিসির যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, আহতরা একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও জাতিসংঘের গাড়িতে করে হাসপাতালে যাচ্ছেন, যাদের মধ্যে দুজন জাতিসংঘের নীল রঙের প্রতিরক্ষামূলক জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, বুধবার গাজায় তাদের একটি কম্পাউন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনায় তাদের এক কর্মী নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে এই ঘটনার সঠিক পরিস্থিতি এখনো স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি গাজায় হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি ইসরায়েলের হামলার ফলে ঘটেছে এবং পাঁচজন গুরুতর আহত বিদেশি কর্মী হাসপাতালে পৌঁছেছেন। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দেইর আল-বালাহতে জাতিসংঘ কম্পাউন্ডে হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে।

এর আগে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েল গাজায় লড়াই ফের শুরুর ঘোষণা দেয় এবং একের পর এক হামলায় ৪০০ জনের বেশি নিহত হয় বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তারা ‘পূর্ণ শক্তিতে লড়াই ফের শুরু করেছে।’

প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, তাদের দুজন কর্মী নিহত হয়েছেন। তবে পরে তারা স্পষ্ট করে জানায়, দ্বিতীয় ব্যক্তি জাতিসংঘের কর্মী ছিলেন না।

জাতিসংঘের প্রকল্প সেবা অফিস (ইউএনওপিএস) জানায়, ‘নিরিবিলি’ এলাকায় অবস্থিত ওই ভবনে ‘বিস্ফোরক ফেলা বা ছোড়া হয়েছিল’। এই ঘটনায় ব্যবহৃত গোলাবারুদের ধরন বা প্রকৃতি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক জর্জ মোরেইরা দা সিলভা এটি ‘দুর্ঘটনা নয়’ উল্লেখ করে বলেন, ‘জাতিসংঘের কর্মী ও তাদের স্থাপনা সব পক্ষের জন্য সুরক্ষিত থাকা উচিত।’

বিবিসির যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আহত ব্যক্তিরা একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও জাতিসংঘের গাড়িতে করে হাসপাতালে যাচ্ছেন, যাদের মধ্যে দুজন জাতিসংঘের নীল রঙের প্রতিরক্ষামূলক জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন।

আরো পড়ুন
জেরুজালেমে নেতানিয়াহুবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ

জেরুজালেমে নেতানিয়াহুবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ

 

এদিকে ইসরায়েল গাজায় লড়াই ফের শুরুর ঘোষণা দেওয়ার পর রাতভর বিমান হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, আল-মাওয়াসি মানবিক এলাকায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একটি তাঁবুতে দুই বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছে। সূত্র হিসেবে তারা রেড ক্রিসেন্টের চিকিৎসকদের উদ্ধৃত করেছে।

অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা হামাসের একটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যেখান থেকে ইসরায়েলের দিকে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। হামাস নিয়ন্ত্রিত নৌযানগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবারের তুলনায় বোমাবর্ষণের মাত্রা কিছুটা কম হলেও ইসরায়েলের নতুন হামলা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণ বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার মঙ্গলবারের হামলা সম্পর্কে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের মাত্রা এখন সম্পূর্ণ মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।’

ওয়াফা আরো জানায়, খান ইউনিসের উত্তরে রাতভর বিমান হামলায় এক নারী ও এক শিশু নিহত হয়েছে, আর গাজা সিটিতে অন্য এক হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩৬ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১৮৩ জন শিশু।

১৯ জানুয়ারি একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি-বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর মঙ্গলবারের হামলাই ছিল সবচেয়ে বড় আক্রমণ। তবে ইসরায়েল ও হামাস এই চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে যেতে ব্যর্থ হয়। চুক্তিতে তিনটি ধাপ ছিল, যার দ্বিতীয় ধাপে নিয়ে আলোচনা ছয় সপ্তাহ আগে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ধাপে ইসরায়েলকে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল, তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ধাপের সময়সীমা বাড়ানোর ওপর জোর দেয়, যাতে আরো ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা যায়।

নেতানিয়াহু যুদ্ধ ফের শুরুর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য হলো ‘জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা ও হামাসকে নির্মূল করা’। তবে গাজায় আটক জিম্মিদের স্বজনরা এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, এতে সরকার তাদের প্রিয়জনদের ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ইতিমধ্যে হাজারো ইসরায়েলি জেরুজালেমে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে দুর্বল করা ও গাজায় যুদ্ধে ফের জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ তুলেছে, যা গৃহবন্দিদের পরোয়া না করেই চালানো হচ্ছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস এখনো ৫৯ জন জিম্মিকে আটকে রেখেছে, যার মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্তব্য

জেরুজালেমে নেতানিয়াহুবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ

    গণতন্ত্র ধ্বংস ও গাজায় হামলার বিরুদ্ধে স্লোগান
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জেরুজালেমে নেতানিয়াহুবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ
১৯ মার্চ জেরুজালেমে জাতীয় পতাকা হাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে ইসরায়েলিরা। ছবি : এএফপি

হাজারো বিক্ষোভকারী বুধবার জেরুজালেমে সমবেত হয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। তারা অভিযোগ করে, তিনি গণতন্ত্র দুর্বল করার পাশাপাশি গাজায় হামলা ফের শুরু করেছেন, যা সেখানে আটক জিম্মিদের জীবনের তোয়াক্কা না করেই করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের কাছে জড়ো হয়ে ‘তুমি নেতা, তাই দায় তোমার’ এবং ‘তোমার হাতে রক্ত’—এমন স্লোগান দেয়। এটি ছিল মাসখানেকের মধ্যে জেরুজালেমে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।

জেরুজালেমে পার্লামেন্টের বাইরে আয়োজিত এই বিক্ষোভে গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের স্বজনরাও যোগ দেয়।

বিক্ষোভের আয়োজন করে নেতানিয়াহুবিরোধী বিরোধী দলীয় গোষ্ঠীগুলো, যারা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। নেতানিয়াহুর ওই ঘোষণার ফলে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হওয়ার হুমকি দেখা দেয়। এর মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক হামলা চালায়, যা জানুয়ারি থেকে চলা নাজুক যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল।

 

তেল আবিব থেকে আসা ৬৮ বছর বয়সী জেভ বেরার বলেন, ‘আমরা আশা করি, ইসরায়েলের সব মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দেবে। আমরা থামব না, যতক্ষণ না গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত হচ্ছে।’

১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী রনি শ্যারন বলেন, ‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে, আমাদের আর দেশই থাকবে না—একটি গণতান্ত্রিক দেশ তো নয়ই, বরং একনায়কতন্ত্রে পরিণত হবে।’

বিক্ষোভকারীদের অনেকে ‘আমরা সবাই জিম্মি’ লেখা ব্যানার বহন করছিল।

গাজায় আটক জিম্মিদের স্বজনরা বলছে, হামলা আবার শুরু হওয়ার সিদ্ধান্ত তাদের প্রিয়জনদের বলিদান’ করার শামিল।  

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলার সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ওই হামলার পর যুদ্ধের সূচনা হয়। এখনো ৫৮ জন গাজায় আটক রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।  

জেরুজালেমে বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলছে, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য ব্যবহার করছেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর চালানো হামাসের হামলার বিষয়ে কোনো জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, আর রোনেন বারকে বরখাস্তের চেষ্টা ইসরায়েলে গভীর রাজনৈতিক সংকট ফের উসকে দিয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি নেতানিয়াহুর সরকার ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল ও সরকারি বিচারিক উপদেষ্টা গালি বাহারাভ-মিয়ারাকেও সরানোর উদ্যোগ নেয়। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার দৃঢ় সমর্থক ছিলেন।

এর আগে ২০২৩ সালে একটি বিচারিক সংস্কার প্রকল্পের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা খর্বের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা দেশটিতে ব্যাপক প্রতিবাদ সৃষ্টি করেছিল। তবে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর সেই আন্দোলন স্থগিত হয়ে যায়।

মদিন শহর থেকে যাওয়া ৫৫ বছর বয়সী ইয়ায়েল ব্যারন বলেন, ‘গত দুই বছর আমাদের জন্য এক দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে। আমরা যেন শেষ সময়ে এসে দাঁড়িয়েছি, সময় ফুরিয়ে আসছে দেশকে রক্ষার জন্য, আমাদের জন্য অক্সিজেন কমে আসছে, যেমন গণতন্ত্রও নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।’

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ