যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দুর্বল করে তাকে আলোচনার টেবিলে আসতে বাধ্য করতে হবে। এজন্য নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
স্টারমার বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আগে বা পরে আলোচনার টেবিলে আসতেই হবে। ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি রক্ষায় ইচ্ছুক জোটের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য গতকাল শনিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁসহ বিভিন্ন দেশের ২৬ জন নেতা এতে অংশ নেন।
স্টারমার বলেন, ইউক্রেনকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায়, সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি কিভাবে রক্ষা করা যায় এবং মস্কোর ওপর কিভাবে চাপ অব্যাহত রাখা যায়, সে বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়ে ইউক্রেন দেখিয়েছে, তারা শান্তির পক্ষে। অন্যদিকে পুতিন তা বিলম্বের চেষ্টা করছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুতিন যদি শান্তির বিষয়ে আন্তরিক হয়ে থাকেন, তাহলে আমি মনে করি এটি খুবই সহজ—তাঁকে ইউক্রেনের ওপর বর্বর আক্রমণ বন্ধ করতে হবে এবং যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে।’
বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কিয়ার স্টারমার বলেন, বিশ্ববাসী পদক্ষেপ দেখতে চায়—খালি কথা ও শর্ত নয়।
রাশিয়া সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার কারণে যুক্তরাজ্যের মানুষের ক্ষতি হয়েছে, জীবনযাত্রা ও জ্বালানি খরচ বেড়ে গেছে।
‘কোয়ালিশন অব উইলিং’ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পাশাপাশি কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ অন্য দেশগুলোকে একত্র করেছে কোয়ালিশন অব উইলিং।
তিনি বলেন, ইউক্রেনকে সমর্থনকারীদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তিচুক্তির দিকে এগিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় ব্যাবহারিক কাজে গতি বাড়ানোর সময় এসেছে। কার্যকরী পর্যায়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার সামরিক বাহিনী যুদ্ধবিরতির সমর্থনে বৈঠক করবে। আমরা যে ফলাফল দেখতে চাই সেদিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। আমরা হত্যাযজ্ঞের অবসান, ইউক্রেনের জন্য ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি এবং সবার জন্য স্থায়ী নিরাপত্তা চাই।
কোয়ালিশন অব উইলিং জোট বিস্তৃত হচ্ছে জানিয়ে স্টারমার বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় এবার আমাদের দল অনেক বড়।
আমাদের একটি শক্তিশালী সম্মিলিত সংকল্প রয়েছে। আজকের আলোচনার টেবিলে নতুন প্রতিশ্রুতি উত্থাপিত হয়েছে। কার্যকর পর্যায়ে ধাবিত হওয়ার বিষয়ে আমরা সম্মত হয়েছি। আমরা রাজনৈতিক ও সামরিক গতি সংগ্রহ করছি। রাশিয়ার ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের এখনই সময়।’
ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে স্টারমার বলেন, সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি রক্ষায় ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে আলোচনায় বসবেন সামরিক প্রধানরা।
আরো পড়ুন
কুরস্ক নিয়ন্ত্রণের দ্বারে রাশিয়া
রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি জটিল প্রশ্ন। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর করার ক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জব্দ করা সম্পদের বিষয়ে আলোচনা চলবে।’
এদিকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি গতকাল বলেছেন, ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর কথা ভাবছে না তার দেশ।